নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার উত্তরগ্রাম ইউনিয়নের বামনসাতা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে ২৩ লাখ টাকায় নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। ১২ জুলাই শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, নওগাঁ জেলা প্রশাসক, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করা হয়। ২৪ জুলাই নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ করা হলেও অভিযোগের ভিত্তিতে তা স্থগিত করা হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নিয়োগপ্রার্থী তারেক রহমান, শিরিন খাতুন, এসলেমা খাতুন, এমরান হোসাইন, রনি কুমার, সাগর কুমার দাস ও অশোক কুমার মণ্ডল বামনসাতা আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রাজ্জাক বিদ্যালয়ের উন্নয়নের অজুহাতে অশোক কুমার মণ্ডল ছাড়া সবার কাছ থেকে ২৪ লাখ টাকা দাবি করেন। প্রধান শিক্ষক কৌশলে উত্তরগ্রাম ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের গণেশ মণ্ডলের ছেলে অশোক কুমার মণ্ডলের কাছ থেকে ২৩ লাখ টাকা নিয়ে তাকে নিয়োগ দানের প্রক্রিয়াকরণ। বিষয়টি জানার পর বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হয়। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। বরং অভিযোগের পর প্রধান শিক্ষক তড়িঘড়ি করে নিয়োগ প্রক্রিয়ার ব্যবস্থা করেন। শুক্রবার সকাল ১০টায় ওই স্কুলে ৮ নিয়োগপ্রার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য অপেক্ষা করলেও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দেখা নেই। দুপুর ১২টায় লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা একসঙ্গে গ্রহণ করা হয়। পরে অবশ্য পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।
অভিযোগকারীরা বলেন, পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে শুধু লোকদেখানো। কিন্তু ইতোমধ্যেই ২৩ লাখ টাকা নিয়োগ বোর্ডের সদস্য এবং সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ভাগাভাগি হয়ে গেছে। প্রধান শিক্ষক যে কোনো উপায়ে অশোক কুমারকে নিয়োগ দেয়ার জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দানের দাবি জানিয়েছেন তারা।
নিয়োগপ্রার্থী তারেক রহমান অভিযোগ করে বলেন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়ার পর প্রধান শিক্ষক আবদুর রাজ্জাক তা গোপন করে রাখেন। কৌশলে অশোক কুমারকে নিয়োগ দেয়ার জন্য অশোকের আত্মীয়স্বজন ও প্রধান শিক্ষকের আত্মীয়স্বজনরা আবেদন করেন। আমরা বিষয়টি জানার পর আবেদন করা হলে বিদ্যালয়ে উন্নয়নের জন্য আমার কাছে প্রধান শিক্ষক ২২ লাখ টাকা দাবি করেন। এছাড়া ব্যক্তিগতভাবে তিনি ২ লাখ টাকা দাবি করেন। আমরা বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক আবদুর রাজ্জাক তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পরীক্ষায় যে এগিয়ে থাকবে তাকেই মেধা, স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগ দেয়া হবে।
অভিযুক্ত নিয়োগপ্রার্থী অশোক কুমার মণ্ডল এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে চান না।
নওগাঁ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোবারুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, অভিযোগের বিষয় তার স্মরণ নেই। তবে প্রধান শিক্ষককে নিয়োগের সব প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সরেজমিন অভিযোগের বিষয় তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান ও মহাপরিচালকের প্রতিনিধি সাপাহার সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুব্রত কুমারের জানতে চাইলে তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।