শুরু হয়েছে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে স্কুলে ভর্তির কর্মযজ্ঞ। সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তির লটারি ইতোমধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরই মধ্যে মহানগরীগুলোর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে গলাকাটা ফি আদায়ের প্রস্তুতি নিয়েছে। এবার অনেক প্রতিষ্ঠান ২০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ফি আদায় করবে বলে জানিয়েছেন ভর্তির খোঁজখবর রাখা শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।
এমন পরিস্থিতি প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, সব প্রতিষ্ঠানের মান এক না, আবার সব প্রতিষ্ঠান সমান সুযোগ দিতে পারে না। শিক্ষার্থীদের বেশি সুবিধা দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো বেশি ফি নিতে পারবে। এসব বিবেচনায় নিয়ে অভিভাবকদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে সন্তানকে কোন প্রতিষ্ঠানে তারা লেখাপড়া করাবেন।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা ইনস্টিটিউট অডিটরিয়ামে বেসরকারি স্কুলের ভর্তির লটারি অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোনো কোনো স্কুল আছে ফ্ল্যাট বাড়িতে, যেখানে হয়তো স্কুল হওয়ার মতোই না। আবার অনেক প্রতিষ্ঠানে সঠিক স্কুল যেভাবে হওয়া উচিত সেভাবে, খেলার মাঠ আছে, লাইব্রেরি আছে, ভালো ব্যবস্থা আছে। এসব ক্ষেত্রেও মান অনুযায়ী নিশ্চয়ই সেখানে ফি নেয়া হয়। কারণ আপনি যদি বেশি সুবিধা দিতে পারেন তাহলে বেশি ফি নিতে পারেন। একটা স্কুলের সব সুবিধা আছে, আর একটা স্কুলের কিছুই নেই। এ দুই প্রতিষ্ঠানে কি আমরা একই ফি নির্ধারণ করে দিতে পারি। যেটা আমরা করতে পারি, কি কি সুবিধা দিলে, কি কি মান থাকলে কত টাকা পর্যন্ত ফি নিতে পারবে তা নির্ধারণ করে দিতে পারি। আমরা ভর্তির আবেদন ফরমের একটি নির্ধারিত ফিয়ের কথা বলেছি। প্রতিষ্ঠানের ফি কেমন হওয়া উচিত সে বিষয়েও চিন্তাভাবনা চলছে। আমরা হয়তো কয়েকটা ধাপ নির্ধারণ করে দেবো যে এই এই সুবিধা দিলে এই পরিমান ফি নিতে পারবেন। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা ইতোমধ্যে ওয়ার্কশপ করেছি। আসলে এটি করলেও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মতামত নিয়েই করতে হবে। বেসরকারি খাতে কতটা ফি স্ট্র্যাকচার চাপিয়ে দিতে পারেন, সে বিষয়টিও দেখার বিষয়। আমরা নিয়ম করে দিতে পারি, কিন্তু যদি কেউ না মানে তাহলে তো লাভ হলো না। আমাদের পুরো স্ট্র্যাকচারটা নিয়ে কাজ করতে হবে। গতবছর এ নিয়ে আমরা একটা ওয়ার্কশপ করেছিলাম, এবারও তা করা যাবে। সামনের বছর এ বিষয়টি ইমপ্লিমেন্ট করার চেষ্টা করতে পারি।
শিক্ষার্থীদের ভর্তিতে প্রতি বছরের শুরুতে ভর্তি ফি নেয়ার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, একটা বাচ্চা একবারই ভর্তি হবে। তাকে কেনো বারবার ভর্তি হতে হবে। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বছরের ফি নেয়া হয়। প্রতিবছর একটি ফি নিতে হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সে ফি হয়তো নিচ্ছে। তিনি ভর্তি সংক্রান্ত অভিযোগগুলোর বিষয়ে তথ্যসহ শিক্ষা প্রশাসনকে জানাতে অভিভাবকদের পরামর্শ দেন।
রাজধানীর মনিপুর হাইস্কুল, রাজউক উত্তরা মডেল কলেজসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় লটারি প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়নি। অভিযোগ আছে, মনিপুর স্কুল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের অনুমতি না নিয়েই কোনো প্রতিনিধি ছাড়া নিজস্ব পদ্ধতিতে লটারি করেছে। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, বেসরকারি কিছু বিদ্যালয় আছে যারা এখনো কেন্দ্রীয় লটারি প্রক্রিয়ায় আসেনি। আশা করছি চলে আসবে। কেন্দ্রীয় লটারিতে না এলে আমাদের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সেখানে ভর্তির লটারি হওয়ার কথা। যেসব প্রতিষ্ঠান আমাদের এ নির্দেশনা অমান্য করবে তাদের ব্যাপারে আমরা ব্যবস্থা নেবো।