জমি নিয়ে জটিলতাস্কুল উন্নয়নের টাকা ফেরত যাচ্ছে বারবার

রাজবাড়ী প্রতিনিধি |

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় রেললাইন ও মহাসড়কের পাশে অন্তত ১৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিশুরা ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে রয়েছে। এরই মধ্যে ৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের জন্য বরাদ্দকৃত ৪০ লক্ষাধিক টাকা জমি ও সীমানা জটিলতার কারণে ফেরত গেছে। 

তা ছাড়া জমি নিয়ে জটিলতার কারণে কয়েকটি বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি অর্থও ফেরত গেছে।

২০১৭-১৮ অর্থবছরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত বড় সিংড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দৌলতদিয়া ঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নবুওছিমদ্দিন পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রাজবাড়ী-ফরিদপুর রেললাইনের পাশে অবস্থিত বালিয়াকান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনুকূলে নিরাপত্তা বাউন্ডারি নির্মাণের জন্য ৪০ লক্ষাধিক সরকারি টাকা বরাদ্দ হয়। কিন্তু জমি ও সীমানা জটিলতার কারণে কাজ করা সম্ভব না হওয়ায় ওই বরাদ্দকৃত টাকা ফেরত গেছে।

গোয়ালন্দে পদ্মা নদীর চরঅধ্যুষিত দৌলতদিয়া ইউনিয়নের বড় সিংড়া এলাকার ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে বড় সিংড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। কিন্তু কয়েক বছরে ৩ দফা নদী ভাঙনের শিকার হয়ে স্থানান্তরিত হয়। সর্বশেষ ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে ভাঙনের শিকার হয় স্কুলটি। সে সময় স্থানীয় শিক্ষা অফিস, ইউপি চেয়ারম্যান ও এলাকাবাসীর সহায়তায় স্কুলটি স্থানান্তর করে নিয়ে আসা হয় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে নুরু মণ্ডলের পাড়ায়। মহাসড়কের পাশে হওয়ায় স্কুলটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা থাকেন চরম ঝুঁকির মধ্যে। 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঞ্জুমান আরা ফেরদৌসী জানান, ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে স্কুলটি এখানে স্থানান্তর করা হয়। স্কুলের ৮ শতাংশ জায়গা ব্যক্তি মালিকানাধীন এবং বাকি ২৫ শতাংশ জায়গা সড়ক ও জনপথ বিভাগের। বিদ্যালয়ের নামে কোনো জায়গা নেই। যে কারণে এ ৪ বছরে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের জন্য ৩ বার ৬৫ লাখ করে অর্থ বরাদ্দ ফেরত গেছে। অন্যদিকে রাজবাড়ী-ফরিদপুর রেললাইনের পাশে অবস্থিত বালিয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

এখানে শিশুদের নিরাপাত্তায় সীমানা প্রাচীর অতি জরুরি। প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে স্থানীয় শিক্ষা অফিস বিদ্যালয়টির সীমানা প্রাচীরের প্রস্তাব পাঠায়। যথারীতি প্রস্তাবটি পাস হয়ে সীমানা প্রাচীরর জন্য বরাদ্দও আসে;কিন্তু জমির মালিকানা নিয়ে পার্শ্ববর্তী জমির মালিকদের সঙ্গে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় সে বরাদ্দ ফেরত গেছে। তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু নাসার উদ্দিন কয়েক দফা চেষ্টা করেও সীমানা প্রাচীরের কাজ করাতে পারেননি।

এ প্রসঙ্গে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জামিলা খাতুন বলেন, রেলের পাশ উন্মুক্ত থাকায় শিশুরা চরম ঝুঁকির মধ্যে থাকে। বিশেষ করে ছুটির সময় শিশুরা দল বেঁধে দৌড়ে রেললাইনের মধ্যে চলে যায়। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল মালেক জানান, জমি ও সীমানা জটিলতার কারণে চলতি অর্থবছরে কয়েকটি বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের টাকা ফেরত গেছে। নতুন করে আরও ৫টি বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. শহিদুল জানান, জমি নিয়ে জটিলতার কারণে বিদ্যালয়গুলো ভবন নির্মাণ, নিরাপত্তা দেয়াল নির্মাণ, ওয়াশ ব্লক নির্মাণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থ ফেরত যাচ্ছে। বিষয়টি দুঃখজনক। এ বিষয়গুলো নিয়ে সংশ্নিষ্টদের আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখা দরকার।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
স্কুল-মাদরাসা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের - dainik shiksha স্কুল-মাদরাসা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের ঢাকাসহ ১৩ জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাল বন্ধ - dainik shiksha ঢাকাসহ ১৩ জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাল বন্ধ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৯ মে - dainik shiksha প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৯ মে বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ হাইকোর্টের - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ হাইকোর্টের প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নতুন নির্দেশনা টেম্পু চাপায় কলেজছাত্রী নিহত - dainik shiksha টেম্পু চাপায় কলেজছাত্রী নিহত কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024740695953369