স্কুল ছুটি : বিচার ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে ফের টানাপড়েন

এনামুল হক প্রিন্স |

স্কুল বন্ধের ইস্যু নিয়ে বিচার ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে ফের টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। মাস দেড়েক আগে রমজানে স্কুল খোলা নাকি বন্ধ তা নিয়ে এমন টানাপড়েন তৈরি হয়। উচ্চ আদালতের একটি বেঞ্চ পুরো রমজান জুড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছুটি ঘোষণা করলে কয়েক লাখ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক চরম অনিশ্চয়তায় পড়েন। কারণ শিখন ঘাটতি কমাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় রমজানের নির্দিষ্ট সময় অবধি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা রাখার সিদ্ধান্তে অনড় থাকে। সেই উত্তেজনার অবসান হয় আপিলে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বহাল রাখার মধ্য দিয়ে। ছুটি নিয়ে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চের স্ব-প্রণোদিত নির্দেশে ফের এমন টানাপড়েন তৈরি হয়েছে।   

গতকাল সোমবার বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ একটি আদেশে বলেছেন, চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল এবং মাদরাসার ক্লাস আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

ওই আদেশের পর শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কখন বন্ধ হবে, কীভাবে পরিচালিত হবে সংবিধান অনুসারে সেটা শিক্ষামন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার। সংবিধানের রুলস অব বিজনেসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সেই এখতিয়ার দেয়া হয়েছে। আমাদের উচ্চ আদালতের সুয়োমটো, কিছু বিষয়ে নির্দেশনা বা আদেশ দেয়ার এখতিয়ার আছে। সেটাও সংবিধান স্বীকৃত। কিন্তু, রাষ্ট্রের যে প্রতিষ্ঠানের যে এখতিয়ার, সেখানের মধ্যে থাকাটাই সবার জন্য সমীচীন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, যে বিষয়ে ইতোমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাংবিধানিক এখতিয়ার আছে, সেখানে এ বিষয়ে যদি কোনো সিদ্ধান্ত (আদালতে) হয়ে থাকে তবে অবশ্যই আমরা তার উপরের আদালতে, আপিল বিভাগে যাবো। একটু আগে শুনেছি আদালত একটা নির্দেশ দিয়েছে। আমরা সেটা পর্যালোচনা করে, সেটার যদি কপি আমাদের কাছে দেয়া হয় তখন আমরা এটা বলতে পারবো। এটা এখন পর্যন্ত সংবাদ মাধ্যমে আছে, কোনো লিখিত নির্দেশনা পেলে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো।

মহিবুল হাসান চৌধুরী আরো বলেন, যেসব জেলায় তাপমাত্রা অনেক বেশি সেসব জেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এ বিষয়টা নিয়ে ইতোমধ্যে একটা সিদ্ধান্ত দিয়েছি। কিন্তু, যেসব জেলায় তাপমাত্রা কম সেসব জেলায় তো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ার কোনো যুক্তি নেই-এটা হচ্ছে আমাদের নির্বাহী অবস্থান।

মন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, যেসব জায়গায় তাপমাত্রা ৩৯- ৪০ এর ঘরে পৌঁছাচ্ছে না সেসব জায়গায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে কেনো? যেমন এই মুর্হূতে সিলেটে বৃষ্টি হচ্ছে, সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেনো বন্ধ থাকবে?

এর আগে দেশে চলমান তাপ প্রবাহের কারণে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সঙ্গে পরামর্শক্রমে খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের সব জেলায়, ঢাকা বিভাগের ঢাকা, টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর ও মানিকগঞ্জ, রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রাম ও দিনাজপুর এবং বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আজ ৩০ এপ্রিল বন্ধ থাকবে বলে জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু, ওই হাইকোর্ট বেঞ্চ সব স্কুল, মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দিয়ে জানায়, তবে সেসব স্কুলে এসির ব্যবস্থা আছে, পরীক্ষা চলমান আছে, ও লেভেল এবং এ লেভেল পরীক্ষা আছে সেগুলোসহ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এই আদেশ প্রযোজ্য হবে না।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. সাইফুজ্জামান, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল রেহেনা সুলতানা, মো. সামিউল সরকার ও আশিক রুবায়েত উপস্থিত ছিলেন।

 

 

 শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ডিআইএর নতুন পরিচালক অধ্যাপক আবু কাইয়ুম - dainik shiksha ডিআইএর নতুন পরিচালক অধ্যাপক আবু কাইয়ুম জাতীয়করণসহ তিন দাবিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরিদের অবস্থান - dainik shiksha জাতীয়করণসহ তিন দাবিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরিদের অবস্থান এমপিওর দাবিতে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় শিক্ষকদের পদযাত্রা - dainik shiksha এমপিওর দাবিতে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় শিক্ষকদের পদযাত্রা কারিগরিতে ৪০ শতাংশ নম্বরে উপবৃত্তি - dainik shiksha কারিগরিতে ৪০ শতাংশ নম্বরে উপবৃত্তি কাউকে হেনস্তা না করার আহ্বান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের - dainik shiksha কাউকে হেনস্তা না করার আহ্বান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের আটকের পর বিজিবিকে যে প্রলোভন দেখান বিচারপতি মানিক - dainik shiksha আটকের পর বিজিবিকে যে প্রলোভন দেখান বিচারপতি মানিক নয় বছরের শিক্ষিকাকে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হতে বললেন প্রধান শিক্ষক - dainik shiksha নয় বছরের শিক্ষিকাকে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হতে বললেন প্রধান শিক্ষক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024700164794922