স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া উচিত

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

শৈশবকাল মানুষের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শিশুর সামাজিক ও মানসিক বিকাশ ঘটার সময় এটি। এক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করে বিদ্যালয়। শৈশবের এ সময়টায় তারা তৈরি করে নতুন নতুন বন্ধু। মিশতে শুরু করে ভিন্ন ভিন্ন মানুষের সঙ্গে। শিশু তখন শিখতে শুরু করে সামাজিকতা। বাক্যের আদানপ্রদান ঘটে থাকে একে অপরের সঙ্গে; আর তারা যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয় সে সময়টায়। শিশু তাদের মনের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশের ভাষা শিখতে শুরু করে এ সময়।

সহপাঠীদের সঙ্গে খেলাধুলা, কথা বলা, চলাফেরা করা-সবকিছুই তাদের মানসিক ও সামাজিক বিকাশে ভূমিকা রাখে। খেলার জন্য যখন বন্ধুদের সঙ্গে মাঠে ব্যস্ত থাকে, তখন তারা শিখতে পারে অনেক কিছুই। তাদের মনে বিজয়ী হওয়ার একটি প্রবল ইচ্ছা তৈরি হয়। তাদের মেধার বিকাশ ঘটে। তাদের মস্তিষ্ক তখন নিজে নিজে একটি প্রোগ্রাম তৈরি করতে সক্ষম হয়-কীভাবে তারা খেলায় জয়লাভ করবে এবং খেলতে খেলতে সেগুলো কাজে লাগায়। এভাবেই তাদের মানসিক, সামাজিক বিকাশ ঘটে থাকে। বিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি গড়ে ওঠে সামাজিক বন্ধন। বন্ধুদের নিয়ে গড়ে তোলে একটি সার্কেল। নিজেরা কীভাবে সমাজের সঙ্গে মিশে যাবে, সেই শিক্ষা সেখান থেকেই গ্রহণ করে থাকে ধীরে ধীরে। রোববার (২৯ আগস্ট) যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।   

নিবন্ধে আরও জানা যায়, দুই বছর হতে চলল করোনার কারণে বন্ধ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিশু বঞ্চিত হচ্ছে সবকিছু থেকে। ক্লাস নেওয়া হচ্ছে অনলাইনে; কিন্তু তাদের বইয়ের বাইরের যে শিক্ষা, সেটা বিঘ্নিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। পাঠ্যবই পড়াটাই আসল শিক্ষা নয়। আমরা তাদের সেজন্য স্কুলে পাঠাই না। সামাজিকতা, সমাজের ভিন্নতা, চারিত্রিক ভিন্নতা, যোগাযোগের প্রক্রিয়া, ব্যবহারিক বৈচিত্র্য-শিশু সবকিছুর শিক্ষা নেয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া-আসার সময়টায়। বর্তমানে শিশু এগুলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

কোভিড-১৯ একটি ভয়াবহ রোগ, এটা সত্য। আমাদের শিশুকে এ ভাইরাস থেকে রক্ষা করতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সবকিছু করা হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে বিভিন্ন অজুহাতে। এ কারণে শিশু ঝুঁকে পড়ছে মোবাইল ফোনের দিকে। মোবাইলে সারা দিন গেম খেলে বা বিভিন্ন ধরনের কন্টেন্ট দেখে তাদের জীবনের মূল্যবান সময় ব্যয় করছে। শহরের চিত্র এমন হলেও গ্রামের শিশুর ক্ষেত্রে তা একদম আলাদা। সেখানে অনেক শিশুই জড়িয়ে পড়ছে নানা কাজে। স্কুলে ফিরে আসার সম্ভাবনা তাদের খুবই কম।

তাই শিশুর ভবিষ্যৎ চিন্তা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এখনই খুলে দেওয়া উচিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সবকিছু করা সম্ভব। প্রয়োজনে শিফট অনুসারে একাডেমিক পড়াশোনা চালিয়ে নেওয়া যেতে পারে। উচ্চতর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরাও চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একদিকে সেশনজট বৃদ্ধির ভয়, অন্যদিকে ভবিষ্যৎ জীবনের অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদের। কাজেই কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

লেখক : আরমান জিহাদ, প্রাবন্ধিক, কিশোরগঞ্জ


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে - dainik shiksha কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা - dainik shiksha ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন - dainik shiksha সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল - dainik shiksha ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে - dainik shiksha নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0064048767089844