সড়কে বাঁশের সাঁকো, দুর্ভোগে শিক্ষার্থীরা

কলাপাড়া(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি |

প্রায় আধা কিলোমিটার সড়কে হাঁটু সমান কাদা। সড়কে বৃষ্টির পানি জমে কাদা পানিতে কিলবিল করছে পোকামাকড় ও মশার কীট। এ সড়কে সাতটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় তিন সহস্রাধিক শিক্ষার্থীসহ প্রায় ২০ হাজার মানুষকে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। সড়কের কাদাপানিতে পা পিছলে পড়ে শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীর দুর্ভোগ এখন নিত্যদিনের। 

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কুয়াকাটা পৌরসভা ও লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদের সীমান্তবর্তী মুসুল্লীয়াবাদ গ্রামের সড়কের এ বেহাল দশার কারণে এলাকাবাসী রাস্তার উপর বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে চলাচলে কিছুটা দুর্ভোগ কমানোর উদ্যোগ নিলেও দায়িত্বশীলরা দোষ চাপাচ্ছে একে অন্যের ওপর। এ কারণে প্রায় আড়াই যুগ ধরে বর্ষা হলেই দুর্ভোগে পড়ে পাঁচটি গ্রামের মানুষ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এ সড়ক পথে প্রতিদিন মুসুল্লীয়াবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুসুল্লীয়াবাদ ইসলামীয়া ফাজিল মাদরাসা, আজিমপুর এ কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দোভাষীপাড়া কওমি মাদরাসা, আজিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রি কলেজ ও মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল কলেজের প্রায় তিন হাজারের অধিক ছাত্র-ছাত্রী যাতায়াত করে। রাস্তার বেহাল দশার কারণে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকায় পায়ে হেঁটে শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীদের এক থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে।

বহু বছর ধরে বর্ষায় সড়কের এ বেহাল পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে কর্দমাক্ত রাস্তার উপর বাঁশের সাঁকো নির্মান করে মুসুল্লীয়াবাদ, দোভাষীপাড়া, দক্ষিণ মুসুল্লীয়াবাদ, পাঞ্জুপাড়া ও মম্বিপাড়া গ্রামের একাংশের মানুষ চলাচল করছে। এ কাদা দুর্ভোগের কারণে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসাগামী শিক্ষার্থী ও পণ্য উৎপাদনকারী কৃষক পরিবার। রাস্তা থাকলেও এ সড়কে কোনো যান চলাচল না করায় তাদের উৎপাদিন পণ্য বিক্রি করতে হচ্ছে পানির দরে। এমনকি কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে কাঁধে করে রোগীকে হাসপাতালে নিতে হচ্ছে যানবাহন না চলার কারণে।

জানা যায়, ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে কুয়াকাটা পৌরসভার আট নং ওয়ার্ডের পাঞ্জুপাড়া গ্রামের মধ্যবর্তী ও মুসুল্লীয়াবাদ গ্রামের এ সড়কটির মাটির কাজ করা হয়। এরপর থেকে এ সড়কে কোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ড না হওয়ায় রাস্তা দেবে গিয়ে কোথাও কোথাও কাদা পানির খাল, কোথাও হাঁটু সমান কাদা সৃষ্টি হয়েছে এ বর্ষা মৌসুম শুরুর পরই। কিন্তু কোনো জনপ্রতিনিধি কিংবা সরকারি কর্মকর্তারা এ রাস্তার উন্নয়নে উদ্যোগী হচ্ছেন না।

শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীরা বলেন, দেখেন ডিজিটাল বাংলাদেশের সড়ক, যেখানে রাস্তার উপর বাঁশের সাঁকো দিয়ে আমাদের চলাচল করতে হচ্ছে। তাহলে বুঝতেই পারছেন এখানকার উন্নয়নের বাস্তব চিত্র কতটা সুখকর।

কলেজ ছাত্র জসিম উদ্দিন, মাদরাসা ছাত্রী উম্মে সুমাইয়া, স্কুল ছাত্র তানিয়া আক্তার জানায়, এ বছরও অন্তত একশ ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা যাওয়ার পথে এ সাঁকো দিয়ে কাদায় পড়ে গেছে। এতে তাঁদের বই-খাতাসহ পরিধেয় বস্ত্র নষ্ট হয়ে গেছে। 

একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, বৃষ্টি হলে আর স্কুল-মাদরাসায় যেতে ইচ্ছে হয় না। একে তো রাস্তায় হাটু সমান কাঁদা। তারমধ্যে রাস্তায় উপর সাঁকো দেয়া। এতে ছাতা মাথায় দিয়ে স্কুলের বইখাতার,ব্যাগ সামলে সাঁকো পার হতে গিয়ে প্রতিদিনই কাদার মধ্যে পড়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

মাদরাসা শিক্ষক মো. সাইদুর রহমান জানান, বৃষ্টি হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে যায় শুরু এ সড়কের কারণে। এ সড়ক দিয়ে সাতটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। কিন্তু সড়কের উন্নয়নে কেউ উদ্যোগ নিচ্ছেন না।

এ ব্যাপারে লতাচাপলী ইউপি চেয়ারম্যান মো. আনসার উদ্দিন মোল্লা জানান, সড়কটির সীমানা জটিলতায় এতোদিন উন্নয়ন হয়নি। সম্প্রতি সড়কটি মেরামতের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে।

কলাপাড়া এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল মান্নান জানান, এ সড়কটির উন্নয়নের একটি প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত সড়কটি নির্মাণ করা হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024218559265137