হল-ক্যাম্পাস খোলার দাবিতে নীলক্ষেতে শিক্ষক-ছাত্রদের সমাবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হল ও ক্যাম্পাস খুলে দেয়ার দাবিতে সংহতি সমাবেশ করেছেন ছাত্র, শিক্ষক ও অবিভাবকেরা। আজ শুক্রবার (১১ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতন্ত্র ও মুক্তির তোরণের সামনে ‘সাত কলেজের শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’

এর আগে গত কয়েকদিন ধরে হল ও ক্যাম্পাস খোলার দাবিতে নীলক্ষেতে মানববন্ধন, সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করে আসছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। পরে গত রোববার (৬ জুন) একই দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেন তারা। 

সমাবেশে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদসহ কয়েকজন শিক্ষক সংহতি প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

সমাবেশে অংশ নিয়ে ডক্টরস প্ল্যাটফর্ম ফর পিপলস হেলথের সদস্য ডা. জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের একটা কম্পাইলেশন করি, তারিখ দিয়ে যদি বক্তব্যের ধারাবাহিক চিত্র প্রকাশ করা হয় তাহলে আমরা কি দেখব, ‘অবিলম্বে খুলে দেয়া হবে’, ‘অতি দ্রুত খুলে দেয়া’, ‘ঈদের পর খুলে দেয়া হবে।’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিবেন ভালো কথা কিন্তু আপনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার প্রস্তুতি আসলে কি নিয়েছেন? এখনো নিচ্ছেন কি? এই খুলে দেয়ার বক্তব্য একটা অন্তঃসারশূন্য বক্তব্য মাত্র।’’

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন

ডা. জয়দীপ ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘আপনি যাদি অন্য দেশের দিকে তাকান তাহলে দেখবেন, তারা আস্তে আস্তে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়েছে, বিভিন্ন শিফটে ভাগ করে খুলে দিয়েছে। তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কিভাবে খুলে দেয়া যায়, তার একটা রূপরেখা তৈরির জন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থী-চিকিৎসকদের মতামত নিয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশে কি এমন কোনো পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে? নেয়া হয়নি। এই শিক্ষার সাথে দেশের প্রতিটা পরিবার জড়িত। শিক্ষার্থীদের নিয়ে তাদের পরিবারটা চিন্তা করে, তারা পরিবারের ভবিষ্যৎ। কিন্তু আপনি তাদের মতামতটাও চাচ্ছেন না।’

অভিভাবক ও শিক্ষক ইসহাক সরকার বলেন, ‘‘আমি খুব শঙ্কিত, যখন আমি ঘরে ঢুকে দেখি আমার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়ে সারাদিন মোবাইল হাতে বসে থাকে। আমার অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া শিক্ষার্থী, আমার মেয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়, ‘আর ভালো লাগছে না, একাকিত্ব আর ভালো লাগে না’, তখন আমি খুব উদ্বিগ্ন হই।’’

ইসহাক সরকার আরও বলেন, ‘ঘর থেকে বের হলে লকডাউনকে খু্ঁজি, পত্রপত্রিকায় খুঁজি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খুঁজি। শিক্ষা নিয়ে মানুষ কোথায় ভাবছে, অভিভাবক হিসেবে আমি যে সংকটে আছি, এর থেকে উত্তরণের রাস্তা কোথাও আছে কিনা, তা খুঁজি। আসলে কোথাও নাই। তখন মনে হয়, শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড, সেখানে কখন জানি শিক্ষাকে বাদ দিয়ে শাসনই জাতির মেরুদণ্ড হয় এটা ভেবে আমি শঙ্কিত।’

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ইসমাইল সম্রাট বলেন, ‘সবকিছু খুলে দিয়ে শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্ধ রাখা হয়েছে কেন? শিক্ষা যদি আমাদের মৌলিক অধিকার হয়ে থাকে, দেশ যদি সংবিধানিকভাবে চলে তাহলে আমাদের মৌলিক অধিকার শিক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে কোন অধিকারে।’

ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী সায়মা আফরোজ বলেন, ‘মহামারির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার ১৫ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার কোনো পরিকল্পনা নিতে পারেনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক কাউন্সিল হল না খুলে সশরীরে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সশরীরে পরীক্ষা নেয়ার আগে শিক্ষার্থীদের সময় দিতে হবে। ক্লাস না নিয়ে, সময় না দিয়ে পরীক্ষা আপনারা নিতে পারেন না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কোনো সার্টিফিকেট বিক্রির কারখানা না। আমরা এখানে পরীক্ষার রুটিন ঘোষণা করার জন্য আন্দোলন করছি না। আমরা বলতে চাই, স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দিতে হবে৷ ভ্যাকসিনের অজুহাত আমাদের দেখাবেন না। ১৪ জুন শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত না নিলে আমরা পুরো ঢাকা শহর অচল করে দিতে বাধ্য হব।’

সরকারি বাংলা কলেজের শিক্ষার্থী রিয়াদ হোসেন ও ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী শাহিনুর সুমির সঞ্চালনায় সমাবেশে সরকারি সাত কলেজর বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বক্তব্য দেন৷


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
রোববার থেকে সরকারি প্রাথমিকে মর্নিং স্কুল, খোলার প্রজ্ঞাপন জারি - dainik shiksha রোববার থেকে সরকারি প্রাথমিকে মর্নিং স্কুল, খোলার প্রজ্ঞাপন জারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের গরমে কলেজে কোচিং, দুদিনে অসুস্থ ৮ ছাত্রী - dainik shiksha গরমে কলেজে কোচিং, দুদিনে অসুস্থ ৮ ছাত্রী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট - dainik shiksha জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ - dainik shiksha আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029840469360352