হাইস্কুলে দুপুরের খাবার চালু করতে চায় সরকার

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়াতে সারা দেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলে দুপুরের খাবার (মিড ডে মিল) চালু করতে চায় সরকার। ছাত্র-ছাত্রীদের ঝরে পড়া কমিয়ে আনতে ও তাদের মধ্যে অপুষ্টি দূর করতে এই উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। বিদ্যালয়গুলোতে এই মিড ডে মিল চালুর ব্যাপারে সাত কর্মদিবসের মধ্যে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখার পরিচালককে নির্দেশনা দিয়েছেন মাউশি মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ।

সম্প্রতি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সভাকক্ষে মাউশি মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদের সভাপতিত্বে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। মহাপরিচালক সভা থেকে বিদ্যালয়গুলোতে মিড ডে মিল চালুর জন্য মাধ্যমিক শাখাকে উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান। একই সঙ্গে এই দুপুরের খাবার চালু করতে সাত দিনের মধ্যে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করে জমা দিতে সভা থেকে নির্দেশনা দেন মহাপরিচালক।

তথ্যমতে, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ এ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মিড ডে মিল চালু করার কথা বলা হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনী ইশতেহারেও সব গ্রামে, আধা মফস্বল শহরে ও শহরের নিম্নবিত্তের স্কুলে এবং পর্যায়ক্রমে স্কুল ফিডিং কার্যক্রম সর্বজনীন করার কথা বলা হয়েছে।

জানা গেছে, করোনা মহামারির পূর্বে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ সেপ্টেম্বর সিলেটের অগ্রগামী বিদ্যালয়সহ ১৪টি বিদ্যালয়ে মিড ডে মিল উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সেদিন বক্তব্যে দীপু মনি বলেছেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা স্কুলে এসে যেন ক্ষুধার্ত না থাকে, তাদের পুষ্টির যেন অভাব না হয়, সেই চিন্তা থেকেই সারা দেশে এই মিড ডে মিল চালু করার প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। তখন দুপুরের খাবার চালু হওয়া স্কুলের মধ্যে সিলেটে দুটি, মৌলভীবাজারে তিনটি, হবিগঞ্জে চারটি ও সুনামগঞ্জের পাঁচটি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল। মাউশির সভাসূত্র জানায়, মহামারি করোনাভাইরাস আক্রমণের আগে দেশের প্রায় ৭ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই দুপুরের খাবার চালু ছিল। কিন্তু করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এই কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে যায়। পরে স্কুলগুলো খুলে দেয়া হলেও মিড ডে মিল আর চালু হয়নি।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, স্কুলগুলোতে দুপুরের খাবার চালু করতে হলে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ রয়েছে। কারণ, সিংহভাগ মাধ্যমিক স্কুল বেসরকারি পর্যায়ের। সেগুলো গভর্নিং বডির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। আর কোনো কোনো মাধ্যমিক স্কুলে কয়েক হাজার ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। দুপুরের খাবার রান্না, বিতরণ করতেও বড় বেগ পেতে হবে। তাছাড়া এই মিড ডে মিলের অর্থায়ন কীভাবে হবে সে ব্যাপারেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এই কার্যক্রম চালু করতে বড় ফান্ডের প্রয়োজন হবে। কোনো সংস্থা এগিয়ে না এলে তা বাস্তবায়ন করা অনেক কষ্টসাধ্য হবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখার পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন গতকাল প্রতিবেদককে বলেন, মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে মিড ডে মিল চালু করতে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করতে বলা হয়েছে। এই কার্যক্রম চালুর ব্যাপারটি একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। কোথা থেকে অর্থায়ন হবে সেটিও জানা যায়নি। পরিচালক বলেন, শিক্ষার্থীদের জন্য দুপুরের খাবার চালু করার অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এই কার্যক্রম চালু করা গেলে তা হবে অনেক বড় একটি অর্জন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
চলতি মাসে টানা ৪ দিনের ছুটি মিলবে যেভাবে - dainik shiksha চলতি মাসে টানা ৪ দিনের ছুটি মিলবে যেভাবে সিইসিসহ পাঁচ কমিশনারের পদত্যাগ - dainik shiksha সিইসিসহ পাঁচ কমিশনারের পদত্যাগ রাষ্ট্রপতি যেকোনো সময় পদত্যাগ করতে পারেন - dainik shiksha রাষ্ট্রপতি যেকোনো সময় পদত্যাগ করতে পারেন বাতিল কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা আরও একবছর ভুগবেন কেন? - dainik shiksha বাতিল কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা আরও একবছর ভুগবেন কেন? ডিআইএতে টাকার খেলা, অভিযুক্তরাই স্কুল অডিটে - dainik shiksha ডিআইএতে টাকার খেলা, অভিযুক্তরাই স্কুল অডিটে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নতুন অ্যাডহক কমিটি হবে - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নতুন অ্যাডহক কমিটি হবে প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি - dainik shiksha প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025081634521484