হাবিপ্রবি ভিসিসহ শিক্ষকরা অবরুদ্ধ

হাবিপ্রবি প্রতিনিধি |

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) শিক্ষা কার্যক্রমে টানা প্রায় দুই মাসের অচলাবস্থার নিরসন না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে উপাচার্য, রেজিস্ট্রারসহ অন্যান্য শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রেখেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতির নিরসন করে ক্লাস ও পরীক্ষা চালুর দাবিতে  শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বেতন বৈষম্য দূরীকরণের দাবিতে গত ১৪ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত ৬১ জন সহকারী অধ্যাপক কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক বিধান চন্দ্র হালদারের কক্ষে গেলে সেখানে তাদের ওপর হামলা, মারধর ও লাঞ্ছিত করা হয়। এই অভিযোগে পরের দিন থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে অনশনে যায় পদোন্নতিপ্রাপ্ত শিক্ষকরা। তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামও। বিশ্ববিদ্যালয়ের দেড় শতাধিক শিক্ষক ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে আন্দোলনে নামেন। এ জন্য অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয় ভর্তি পরীক্ষা এবং কর্মকর্তা ও শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা।

গত ২৯ নভেম্বর রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. সফিউল আলমকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় আন্দোলনরত ২ শিক্ষককে সাময়িক বহিষ্কার করা হলে আন্দোলন আরও বেগবান হয়ে উঠে। এমতাবস্থায় ৩ ডিসেম্বর ঢাকাস্থ হাবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের এক সভায় ৪ ডিসেম্বর থেকে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়।

এক মাস বন্ধ শেষে গত ৪ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর ৬ জানুয়ারি ক্লাস-পরীক্ষা চালু হওয়ার কথা থাকলেও শিক্ষকদের দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হলেও ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করে আবারও আন্দোলনে নামে দেড় শতাধিক শিক্ষক।

এদিকে শিক্ষা কার্যক্রমে প্রায় দুই মাসের অচলাবস্থা নিরসন করে ক্লাস ও পরীক্ষা চালুর দাবিতে গত ৯ জানুয়ারি রাস্তায় নামে দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা।

এই অবস্থায় সংকট মোকাবেলায় বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় আন্দোলনরত প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম ও বিকাল ৪টায় সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত ৬১ জন সহকারী অধ্যাপকের সঙ্গে আলোচনায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

আলোচনায় হাবিপ্রবির উপাচার্য প্রফেসর ড. মু. আবুল কাশেম, রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. সফিউল আলম, প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের সহসম্পাদক প্রফেসর ড. এস.এম হারুনর রশিদসহ অন্যান্য নেতারা এবং আন্দোলনরত সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক কৃষ্ণ চন্দ্র রায়সহ ৬১ জন সহকারী অধ্যাপক উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানায়,  আলোচনায় সমস্যা নিরসনের কোনো সমাধান হয়নি।

আলোচনা শেষে আন্দোলনরত সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপকদের প্রতিনিধি কৃষ্ণ চন্দ্র রায় বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন তাদের দাবির ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ ও আশ্বাস না দিয়েই ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান। তাদের দাবির ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ না নেয়া পর্যন্ত তারা ক্লাসে ফিরে যাবেন না বলে তিনি জানান।

হাবিপ্রবি’র রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. সফিউল আলম বলেন, বৃহস্পতিবারের আলোচনাটি ছিল প্রাথমিক আলোচনা। এই আলোচনায় কোনো সমাধান না হওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, শুক্রবার বিকাল ৩টায় আবার আলোচনায় বসা হবে।

এদিকে ফলপ্রসূ আলোচনার মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রমে অচলাবস্থার অবসান না হওয়ায় প্রশাসনিক ভবনের গেটে অবস্থান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মু. আবুল কাশেম, রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. সফিউল আলমসহ অন্যান্য শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025801658630371