হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় ডাক পেলেন জাবি অধ্যাপক

জাবি প্রতিনিধি |

হার্ভার্ড ইউনির্ভাসিটির ভিজিটিং স্কলার (পোস্ট-ডক্টরাল ফেলো) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক, তরুণ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম। তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েদারহেড সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স-এ আগামী বছরের জানুয়ারিতে ভিজিটিং স্কলার (পোস্ট-ডক্টোরাল ফেলো) হিসেবে যোগদান করবেন। 

হার্ভার্ডে মর্যাদাবান ফেলোশিপ অর্জনের প্রতিক্রিয়ায় ড. তারিকুল তাঁর অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, আমার এই সাফল্যের জন্য প্রথমেই মহান আল্লাহ তায়ালার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি প্রত্যাশা করি যে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান এবং গবেষণার অভিজ্ঞতা আমার দক্ষতা এবং সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করবে এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণায় উৎকর্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।

অধ্যাপনা সম্পর্কে তিনি বলেন, শুরু থেকে আমার স্বপ্ন ছিল একজন ভালো শিক্ষক হওয়া। একজন শিক্ষক হিসেবে প্রত্যাশা, আমি যেন শিক্ষার্থীদের জীবনে একটি পরিবর্তন আনতে পারি এবং তাদের আত্মবিশ্বাস,সামর্থ্য ও সৃজনশীলতা সমৃদ্ধ করতে আমি যেন একটি উৎস হতে পারি। আমার বড় প্রাপ্তির মধ্যে বলা যায় আমি জাহাঙ্গীরনগরে পড়াশোনা করে অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ, সোয়ার্স এবং বর্তমানে হার্ভাডের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছি। সেখানে পোস্ট ডক্টোরাল ফেলো, ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে আমন্ত্রণও পেয়েছি। আগামী বছরের জানুয়ারিতে হয়তো হার্ভাডে থাকবো। তবে আমি চাই খুব অল্প সময়ের মধ্যে সেখানকার জ্ঞান-প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষিত হয়ে আমি আমার দেশের শিক্ষার্থীদের তা দিতে পারি।

তিনি আরো বলেন, আমার বড় প্রাপ্তি হচ্ছে আমার ফাইন্ডিংসগুলো আমি নিয়মিত লিখে যাচ্ছি,ছড়িয়ে দিচ্ছি। ইতোমধ্যে আমার ৩টি বই প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া পত্র-পত্রিকায় অসংখ্য লিখালিখি ত আছেই। তবে আমি বলবো আমার এই জার্নি কেবল শুরু। এই পথ এখনও অনেক বাকি। তাই শিক্ষক হিসেবে আমি কতটুকু সফল বা কতটুকু অর্জন করেছি, তার হিসেব এখনই সম্ভব না। তবে আমি আমার এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। আমি এতেই সন্তুষ্ট যে আমি আমার প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে পারছি।

২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পূর্বে ড. তারিকুল সাত বছরের বেশি সময় জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)-তে কর্মরত ছিলেন। শিক্ষা ও গবেষণার অংশ হিসেবে তিনি বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রিসোর্স পারসন হিসেবে যুক্ত রয়েছেন।

এছাড়া তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পত্রিকা এবং জার্নালে নিয়মিত তার গবেষণা ও সাম্প্রতিক বিষয়সমূহ নিয়ে লেখালেখি করে যাচ্ছেন। তার সম্পাদিত বই, ‌‘হিউম্যান সিকিউরিটি, পিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট: সাউথ এশিয়ান পারস্পেক্টিভ’, যা ভারত থেকে প্রকাশিত হয়।

এছাড়াও তাঁর দুটি উল্লেখযোগ্য পাঠ্যপুস্তক, ‘দুর্যোগ, সুশাসন এবং উন্নয়ন: বাংলাদেশ প্রেক্ষিত’ (স্প্রিঞ্জার) এবং ‘বাংলাদেশে স্থানীয় সরকার: সমসাময়িক সমস্যা এবং চ্যালেঞ্জ’ (রুটলেজ) থেকে প্রকাশিত হয়েছে। ড. ইসলাম অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ এবং স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ (SOAS) থেকে একাধিক মর্যাদাপূর্ণ ফেলোশিপ (পোস্ট ডক্টোরাল ফেলো, ভিজিটিং স্কলার এবং ভিজিটিং রিসার্চার) ইতোমধ্যে সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন।

ড. তারিকুল কলাম লেখক হিসেবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সুপরিচিত। তিনি দি ডেইলি স্টার, দি ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস, দি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, যুগান্তর এবং নেপালের খবরহাবে নিয়মিত কলাম লেখেন। শিক্ষা ও গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় বিখ্যাত ‘হায়ার এডুকেশন ডাইজেস্ট’ থেকে ‘সেরা উদীয়মান স্কলার’ এবং নেপালের একটি জাতীয় দৈনিক থেকে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ‘সেরা লেখক’ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষকদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে - dainik shiksha অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষকদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে জোর করে পদত্যাগ, ভালো নেই স্ট্রোক করা সেই অধ্যক্ষ - dainik shiksha জোর করে পদত্যাগ, ভালো নেই স্ট্রোক করা সেই অধ্যক্ষ বরিশালে থানায় শিক্ষার্থীদের হামলা-ভাঙচুর - dainik shiksha বরিশালে থানায় শিক্ষার্থীদের হামলা-ভাঙচুর হাজিরা মেশিন কাজে আসেনি ১৬৯ বিদ্যালয়ে, গচ্চা ৩৭ লাখ টাকা - dainik shiksha হাজিরা মেশিন কাজে আসেনি ১৬৯ বিদ্যালয়ে, গচ্চা ৩৭ লাখ টাকা পদ্মার ভাঙনে বিলীনের শঙ্কায় দুই স্কুল - dainik shiksha পদ্মার ভাঙনে বিলীনের শঙ্কায় দুই স্কুল কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0053219795227051