হেনস্তার ভয়ে প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত অনেক শিক্ষক

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

“সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর ‘লালসালু’ উপন্যাসের রহিমার কথা কিছুটা বদলে দিয়ে চিৎকার করে বলতে চাই, মান-সম্মান দিয়া কী হইব, মানুষের জান যদি না থাকে।” সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষকদের জোর করে পদত্যাগ করানো ও হেনস্তার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জের একজন প্রবীণ শিক্ষক এভাবেই তাঁর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

 

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক, বিশেষ করে অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়মসহ নানা অভিযোগ এনে তাঁদের হেনস্তা ও পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে। হেনস্তা ও হামলার ভয়ে এরই মধ্যে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা ছুটির আবেদন করে প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত রয়েছেন। তাঁদের অনুপস্থিতির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার পাঁচ উপজেলায় এমপিওভুক্ত ২৭০টি মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা রয়েছে। মাধ্যমিক স্কুলগুলোর মধ্যে সদর উপজেলায় ৬৮টি, বন্দরে ২৩টি, আড়াইহাজারে ২৮টি, রূপগঞ্জে ৩৬টি এবং সোনারগাঁ উপজেলায় রয়েছে ৩০টি। কলেজের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ সদরে ১১টি, বন্দরে দুটি, আড়াইহাজারে পাঁচটি, রূপগঞ্জে পাঁচটি ও সোনারগাঁ উপজেলায় রয়েছে পাঁচটি।

মাদরাসার মধ্যে সদর উপজেলায় ২১টি, বন্দরে সাতটি, আড়াইহাজারে আটটি, রূপগঞ্জে ১৯টি ও সোনারগাঁয় রয়েছে ১০টি।
জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের হাতে হেনস্তা হয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আটটি মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজের প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষ পদত্যাগ করেছেন। বন্দর উপজেলায় পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক, রূপগঞ্জে পাঁচটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষক পদত্যাগ করেছেন। আড়াইহাজার উপজেলায় দুটি কলেজের অধ্যক্ষ ও দুটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদত্যাগের ভয়ে এক মাস ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসছেন না।

এ ছাড়া সোনারগাঁয় তিনটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান ছুটি নিয়েছেন ও তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা পদত্যাগ করেছেন।

৩ সেপ্টেম্বর শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য করা ও হয়রানি করা থেকে বিরত থাকতে সবার প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ইউনুছ ফারুকী জানান, জেলার বিভিন্ন উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন অব্যাহত রাখার কারণে লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটছে। কোনো শিক্ষকের প্রতি অভিযোগ থাকলে লিখিতভাবে জানালে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি - dainik shiksha শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা - dainik shiksha সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার - dainik shiksha স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম - dainik shiksha ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত - dainik shiksha ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক - dainik shiksha ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0022640228271484