দইখাওয়া আদর্শ কলেজে ১০ টাকায় দুপুরের খাবার পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ১০ টাকার বিনিময়ে শিক্ষার্থীরা সবজি-ডাল মিশ্রিত খিচুড়ি ও একটি ডিম খেতে পারছে। খুদা মিটিয়ে ক্লান্তি দুরিকরণ করে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় আরও মনোযোগি করে তুলছে।
লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে দইখাওয়া আদর্শ কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হওয়াতে এখানকার বেশিরভাগ শিক্ষার্থী দূরের উপজেলা শহরে শিক্ষার জন্য যেতে হচ্ছে না। কলেজের ৯০ ভাগ দ্রারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করায় শিক্ষার্থীরা সকালে বের হওয়ার সময় অনেকেই বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে আসতে পারেন না। তাই কলেজ অধ্যক্ষ শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে (টেন টাকা ফুড) নামে ক্যান্টিন চালু করেন। সেখানে দুপুরে মাত্র ১০ টাকায় ডাল-ভাত খাবার সুযোগ পাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
গত ৫ বছর ধরে কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা দুপুরে ১০ টাকায় পেট ভরে খাবার খেতে পারেন। তবে কলেজ অধ্যক্ষের নিজস্ব টাকা আর বাহিরের দু’একজন বন্ধুর সহযোগীতায় চলে এ ১০ টাকার ফুড ক্যান্টিন। বর্তমানে দ্রব্যমুল্যের উর্ধগতির কারণে খাবার জোগান দিতে গিয়ে হিমশিত খেতে হয় কলেজ অধ্যক্ষ মোফাজ্জাল হোসেন'কে। অত্র কলেজে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৭০০ জন।শিক্ষার্থীরা দুপুরের ১০ টাকায় খাবার পেয়ে অনেক খুশি এবং তারা পড়ালেখায় আরও মনোযোগি হয়েছে। ১০ টাকার ক্যান্টিন হওয়াতে অধ্যক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন।
কলেজ শিক্ষার্থী মৃন্ময় সজল বলেন, আমাদের কলেজ একটি মানসম্মত ক্যান্টিন রয়েছে। এর ফলে বাইরের কোন খাবার খেতে হয় না। এজন্য আমাদের অধ্যক্ষ স্যারকে ধন্যবাদ জানাই।
কলেজ শিক্ষার্থী জানান, প্রতিদিন সকাল দশটায় কলেজ গেটে প্রবেশের সময় ১০ টাকা দিয়ে একটি টিকিট সংগ্রহ করেন তারা। দুপুর একটায় ওই টিকিটের মাধ্যমে তারা ক্যান্টিনে খাবার খান।
রান্নার দ্বায়িত্বে থাকা মনোয়ারা বেগম বলেন, বাচ্চাদের রান্না করে খাওয়াই আমার অনেক ভালো লাগে। পাঁচ বছর থেকে রান্না করি। প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ জন বাচ্চাকে রান্না করে খাওয়াই।
দইখাওয়া আদর্শ কলেজ অধ্যক্ষ মোফাজ্জল হোসেন বলেন, কলেজটি সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় অনেক দুর থেকে শিক্ষার্থীরা সকালে না খেয়ে সাইকেলিং করে কলেজে আসে এবং সারাদিন কলেজে থেকে অনেকেই অসুস্থ ও ক্লান্ত হয়ে পড়ে। সেই দিকটা চিন্তা করে আমি ২০১৮ সালে এই ১০ টাকার ক্যান্টিনটি চালু করেছি। তবে বর্তমানে দ্রব্যমুল্যের উর্ধগতি হওয়ায় ১০ টাকায় তাদের একবেলা খাওয়াতে গিয়ে খুব কষ্টকর হয়ে পড়েছে। যদি বৃত্তবানরা এগিয়ে আসতো তাহলে খাবারে শিক্ষার্থীদের আমিষসহ পুষ্টির যোগান দেওয়া যেত।