১০ দাবিতে মধ্যরাতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ছাত্রীরা

দিনাজপুর প্রতিনিধি |

দিনাজপুরে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ দফা দাবিতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন একটি ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীরা। গতকাল শনিবার রাত ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত এ বিক্ষোভ চলে। পরে প্রক্টর ও হল সুপার এসে কয়েকটি দাবি মেনে নেওয়ার লিখিত আশ্বাস দিলে ফিরে যান ছাত্রীরা।

 

বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের কয়েকজন জানান, চলতি বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের জন্য ৭০০ আসনের একটি আবাসিক হল নির্মাণ করা হয়। নামকরণ না হওয়ায় এখনো ‘নতুন হল’ নামেই পরিচিত আবাসিক হলটি। জানুয়ারি মাসে শিক্ষার্থীরা হলে ওঠেন। শুরুতেই হলের বৈদ্যুতিক লাইনের ত্রুটি ছিল। তারপরও শিক্ষার্থীদের হলে তোলা হয়েছে। সবশেষ গত শুক্রবার রাত ১০টায় বিদ্যুৎ চলে যায়। শনিবার সকাল ৭টায় বিদ্যুৎ আসে। এরপর বেশির ভাগ সময় বিদ্যুৎ যাওয়া-আসা করে। শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ না থাকায় শিক্ষার্থীরা বিদ্যুৎসহ নানা দাবিতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন।  

বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ-সংযোগ, হলের প্রতিটি তলায় সুপেয় পানির ব্যবস্থা, রান্নার কাজে হিটার ব্যবহারের অনুমতি, ডাইনিংয়ে খাবারের মান বাড়ানো, মেয়েদের আবাসিক হলের গেট রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত খোলা রাখাসহ বিভিন্ন দাবি জানান। 

কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী ইয়াসমিন আক্তার বলেন, অনেকের পরীক্ষা চলমান। এমন সময় বিদ্যুতের এ সমস্যা শুরু হয়েছে। হল ‍সুপারকে জানালে তিনি বলেন, রুমে অনেকেই হিটার ব্যবহার করায় এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। শুধু তা-ই নয়, হলের ডাইনিংয়ে দৈনিক ৬৫ টাকা মিল চার্জ নেওয়া হয়। দিনে ভাত-ডালের সঙ্গে আমিষ থাকলেও রাতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সবজি-ভর্তা দিয়ে খাবার পরিবেশন করা হয়। তার ওপর অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ। হলে ন্যূনতম আবাসিক সুবিধা পাওয়া যায় না। বলতে গেলে উল্টো কটু কথা শুনতে হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হলের অপর এক শিক্ষার্থী বলেন, বর্তমানে হলের গেট খোলা থাকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত। ক্যাম্পাস থেকে শহর অনেক কাছে। অনেকেরই ব্যক্তিগত কাজ থাকে। কারও টিউশনি করে ফিরতে দেরি হয়। এমনকি বাসা থেকে অভিভাবক এলেও হল প্রশাসন খারাপ ব্যবহার করেন। কিছুদিন আগে এক শিক্ষার্থীর মা এক রাত হলে থাকায় তাঁর সঙ্গে খুবই খারাপ আচরণ করা হয়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে নতুন আবাসিক হলের হল সুপার আফরোজা খাতুন বলেন, বিদ্যুতের সংযোগে ত্রুটি হওয়ায় সাময়িক সমস্যা হয়েছিল। রাতেই তা সমাধান করা হয়েছে। এ ছাড়া এক সপ্তাহের মধ্যে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা এবং পরবর্তী হল সুপার কাউন্সিলে আবাসিক হলের গেট বন্ধের সময়সীমা বৃদ্ধির বিষয়ে সিদ্ধান্তের কথা বলা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের অন্যান্য অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে তিনি বলেন, ‘একজন শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। যদি কারও কোনো সমস্যা হয়, এ ক্ষেত্রে তাঁর দায়ভার কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়কেই নিতে হয়।’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মামুনুর রশিদ বলেন, বিদ্যুৎ-সংযোগ পেতে দেরি হওয়ায় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। পরে সহকারী প্রক্টর ও হল সুপারদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তাঁদের তিনটি দাবি প্রাথমিকভাবে মেনে নেওয়া হয়েছে। বাকি বিষয়গুলো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের উপায় বের করা হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সরকার পরিচালনায় ভুলত্রুটি থাকলে ধরিয়ে দিন, সম্পাদকদের ড. ইউনূস - dainik shiksha সরকার পরিচালনায় ভুলত্রুটি থাকলে ধরিয়ে দিন, সম্পাদকদের ড. ইউনূস এইচএসসি ফল তৈরি: পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়েছে বোর্ড - dainik shiksha এইচএসসি ফল তৈরি: পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়েছে বোর্ড শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য ও হেনস্তা নয়: শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য ও হেনস্তা নয়: শিক্ষা উপদেষ্টা স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের আগস্ট মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের আগস্ট মাসের এমপিওর চেক ছাড় এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ডিজি হলেন - dainik shiksha এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ডিজি হলেন ছাত্রী হয়রানির অভিযোগ, উত্তরা ইউনিভার্সিটি উত্তপ্ত - dainik shiksha ছাত্রী হয়রানির অভিযোগ, উত্তরা ইউনিভার্সিটি উত্তপ্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের হাত ভাঙলেন বরখাস্ত প্রধান শিক্ষক - dainik shiksha ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের হাত ভাঙলেন বরখাস্ত প্রধান শিক্ষক সাংবাদিক নিপীড়নের আইনগুলো এখনই বাদ দেয়ার প্রস্তাব - dainik shiksha সাংবাদিক নিপীড়নের আইনগুলো এখনই বাদ দেয়ার প্রস্তাব মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার চলতি দায়িত্ব দিতে আবেদন আহ্বান - dainik shiksha মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার চলতি দায়িত্ব দিতে আবেদন আহ্বান শিরীন শারমিনের পদত্যাগে স্পিকার পদে কি শূন্যতা তৈরি হলো - dainik shiksha শিরীন শারমিনের পদত্যাগে স্পিকার পদে কি শূন্যতা তৈরি হলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027251243591309