১০ দিন ধরে মাদ্রাসা বন্ধ, শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের বিক্ষোভ

ভোলা প্রতিনিধি |

ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাসাননগর ইউনিয়নের সেরাজিয়া দাখিল মাদ্রাসা টানা ১০ দিন ধরে বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। ওই মাদ্রাসার শিক্ষক রাসেদুল ইসলামকে মাদ্রাসা সুপার ও একছাত্রী কর্তৃক যৌন হয়রানির অভিযোগ দিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে- এমন অভিযোগ এনে এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন তারা।

বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, সেরাজিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক রাসেদুল ইসলামের সঙ্গে মাদ্রাসার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মাদ্রাসার সুপার নূর হোছাইনের দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলছিল। এর ধারাবাহিকতায় কিছুদিন পূর্বে সুপারের নির্দেশে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী রাসেদুল ইসলামের বাসায় পড়তে যায়।

কয়েকদিন পড়ার পর ওই ছাত্রী সুপারের নিকট রাসেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে সুপারের মাধ্যমে বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গত ৭ নভেম্বর ওই শিক্ষককে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়ে জেল হাজতে পাঠান। এরপর থেকে ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা রাসেদুল ইসলামকে নির্দোষ দাবি করে সুপারের বিচার চেয়ে ৮ নভেম্বর থেকে আজ ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান তালাবদ্ধ করে বিক্ষোভ করেছেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর অভিভাবক নাহিদ মেম্বার জানান, সুপার নিজে অতি উৎসাহী হয়ে ওই ছাত্রীকে ব্যবহার করে শিক্ষক রাসেদুল ইসলামকে ফাঁসাতে মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটিকে কোনো কিছু না জানিয়ে সরাসরি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ করায় পরিচালনা কমিটিসহ এলাকাবাসী ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে।

ওই শিক্ষার্থীর মা জানান, তিনি বাধা দেওয়া সত্ত্বেও সুপার তাকে ও তার মেয়েকে ডেকে নিয়ে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি দেখিয়ে নিজে বসে থেকে ওই ছাত্রীকে দিয়ে শিক্ষক রাসেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে বাধ্য করেন।

অভিযোগকারী অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রী জানায়, মাদ্রাসা সুপার তাকে নানা প্রলোভন ও পুলিশের ভয় দেখিয়ে তাকে রাসেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে যেতে বাধ্য করেন।

ওই মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্র নেছার উদ্দিন, হাফিজ ও নবম শ্রেণির ছাত্র ফজলুল করিমসহ মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, সুপারের সঙ্গে ওই শিক্ষকের দীর্ঘদিন থেকে মাদ্রাসার নানা বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল।

এর প্রতিশোধ হিসেবে সহজ সরল ছাত্রীকে দিয়ে যৌন হয়রানির মিথ্যা অভিযোগ করা হয়। তারা সুপারের সাজানো ঘটনার বিচার চেয়ে শিক্ষক রাসেদুল ইসলামের মুক্তি দাবি করেন। শিক্ষার্থীরা আরো জানায়, যতদিন পর্যন্ত শিক্ষক রাসেদুল ইসলাম মুক্তি না পাবেন ততদিন পর্যন্ত তারা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করবে।
মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. হাবিবুল্লাহ মিয়া জানান, সুপার একটি মিথ্যা ঘটনা তার পরিচালনা কমিটির কাউকে না জানিয়ে অতি উৎসাহী হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করে নির্দোষ শিক্ষককে জেল হাজতে পাঠানোর চক্রান্ত করেছেন। ঘটনাটি দুঃখজনক।

এ ব্যাপারে মাদ্রাসার সুপার নূর হোছাইন তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের বলেন, “আপনাদের যা ইচ্ছা তা লিখে দিতে পারেন। এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। “


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029780864715576