ঢাকা শহরের নিকটবর্তী এলাকায় নতুন দশটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে। এ লক্ষ্যে ৬৭৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয় ধরে একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেকের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অনুমোদন পাওয়া বিভিন্ন প্রকল্পের বিস্তারিত সংবাদ মাধ্যমে উপস্থাপন করেন।
এ সময় মন্ত্রী জানান, ঢাকা শহরের আশপাশের এলাকায় কিংবা মহানগরীর প্রান্তিক এলাকায় দীর্ঘকাল কোন সরকারি বিদ্যালয় স্থাপিত হয়নি। ফলে রাজধানীর সরকারি স্কুলগুলোতে অনেক চাপ বেড়েছে। এজন্য ঢাকা শহর সংলগ্ন এলাকার দ্রুত বর্ধনশীল জনসংখ্যার জন্য ১০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, ঢাকা জেলার নবীনগর, আশুলিয়া, ধামরাই, পূর্বাচল, হেমায়েতপুর, জোয়ারসাহারা, সাইনবোর্ড, চিটাগাং রোড, শাহজাদপুর ও ঝিলমিল এলাকায় এ সব বিদ্যালয় স্থাপন করা হবে। ২০২০ সালের মধ্যে এ কাজ শেষ করবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর।
মঙ্গলবার একনেক সভায় মোট ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এ সব প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৫ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা। বৈঠকে শিক্ষা সংক্রান্ত আরও দুইটি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। রংপুর, বরিশাল ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আঞ্চলিক অফিস স্থাপনের লক্ষ্যে ১০৪ কোটি ২ লাখ টাকা ব্যয় ধরে একটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে একনেক। কেরানীগঞ্জে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪১৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষায় ৩৬০ স্থানে বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো নির্মাণের লক্ষ্যে পৃথক একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থানসমূহ সংরক্ষণ ও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১৭৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।
রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকশন্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) সক্ষমতা বাড়াতে একটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে একনেক। ডিজিটাল সংযোগের জন্য টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক আধুনিকায়ন শীর্ষক প্রকল্পে ব্যয় হবে ২ হাজার ৫৭৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এতে ১ হাজার ৮১৭ কোটি ২৮ লাখ টাকা ঋণ দেবে চীন সরকার। মন্ত্রী জানান, প্রকল্পটিতে সময়মতো ঠিকাদার পাওয়া যায়নি তাই বিলম্ব হয়েছে। তাছাড়া প্রকল্পটি আরো কিছু বিষয় যোগ করা হয়েছে যে কারণে প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে। নির্ভরযোগ্য আধুনিক টেলিকমিউনিকেশন সুবিধা গড়ে তোলার পাশাপাশি টেলিফোন ব্যবহারের হার বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রকল্পটি নেওয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করছে পরিকল্পনা কমিশন। জনসাধারণকে কম মূল্যে প্রযুক্তি সেবা দেওয়ার লক্ষ্য সামনে রেখে প্রকল্পটির প্রস্তাব পাঠিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। ২০২০ সালের জুন মাসের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ করবে বিটিসিএল।