১০ বছর ধরে জাল সনদধারী তিন শিক্ষকের এমপিও ভোগ, থানায় মামলা

নওগাঁ প্রতিনিধি |

নওগাঁর মান্দা উপজেলার কালিকাপুর চক কালিকাপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদে ১০-১১ বছর ধরে চাকরি করেছেন ৩ জন শিক্ষক। তারা ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠানটিতে যোগদান ও এমপিওভুক্ত হয়ে দীর্ঘ ১০ বছর অবৈধভাবে এমপিও ভোগ করেছেন। সম্প্রতি তাদের নিবন্ধন সনদ ভুয়া বলে প্রত্যয়ন দিয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। এবং জালিয়াতি করে চাকরির অপরাধে জাল সনদধারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রোববার (২১ মার্চ) জাল সনদধারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মান্দা থানায় মামলা দায়ের করেছেন প্রতিষ্ঠান প্রধান।

জাল সনদধারী শিক্ষকরা হলেন, এ প্রতিষ্ঠানের ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক জাহানারা, কম্পিউটার শিক্ষক মো. আবুল কালাম আজাদ এবং বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক মো. এনামুল হক।

প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, জাল সনদধারী এ শিক্ষকরা ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে এমপিওভুক্ত হয়েছেন। তারা নিয়মিত এমপিও ভোগ করতেন। এ প্রতিষ্ঠান থেকে তিনজন শিক্ষকের সনদ যাচাইয়ের জন্য এনটিআরসিএতে পাঠানো হয়েছিল। গত ২৯ ডিসেম্বর তাদের সনদ যাচাই করে প্রতিবেদন দিয়েছে এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ। যাচাইয়ে তিন শিক্ষকের নিবন্ধন সনদই জাল বলে প্রমাণিত হয়েছে।

এনটিআরসিএ সহকারী পরিচালক তাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ধর্ম শিক্ষক জাহানারা যে সনদটি দাখিল করে চাকরি নিয়েছেন তার প্রকৃত মালিক, হাবিব মো. আব্দুল আওয়াল নামের আরেক প্রার্থী। ৪র্থ নিবন্ধন পরীক্ষার সনদ জাল করে নিয়োগ পেয়েছেন তিনি। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাস থেকে এ জালিয়াত জাহানারা এমপিওভোগ করছেন বলে প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় সতেরো লাখ টাকা সরকারি কোষাগার থেকে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন।

এদিকে প্রতিষ্ঠানটির কম্পিউটার বিষয়ের শিক্ষক মো. আবুল কালাম আজাদ ৩য় নিবন্ধন পরীক্ষার যে সনদটি দিয়ে চাকরি নিয়েছেন তার প্রকৃত মালিক গোলক চন্দ্র রায়। তিনি ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে নিয়োগ পেয়ে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ১ মে এমপিওভুক্ত হয়েছিলেন। এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ষোল লাখ টাকা সরকারি কোষাগার থেকে উত্তোলন করে আত্নসাৎ করেছেন জালিয়াত আবুল কালাম।

জীববিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক মো. এনামুল হক যে নিবন্ধন সনদটি জমা দিয়ে নিয়েছেন তা আসলে অনুত্তীর্ণ। ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে নিয়োগ পেয়ে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ১ মে এমপিওভুক্ত হয়েছিলেন তিনি। এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ষোল লাখ টাকা সরকারের কোষাগার থেকে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। 

এনটিআরসিএর সনদ যাচাই প্রতিবেদনে জাল ও ভুয়া সনদধারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা রুজু করতে কালিকাপুর চক কালিকাপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে কালিকাপুর চক কালিকাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. আব্দুল আলিম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ঐ তিন সহকারী শিক্ষকদের নিবন্ধন সনদ ভুয়া সে বিষয়টি এনটিআরসিএর যাচাই রিপোর্টের মাধ্যমে জানতে পারি। জাল নিবন্ধন সনদধারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে রোববার (২১ মার্চ) থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

সত্যতা নিশ্চিত করে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ শাহিনুর ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, কালিকাপুর চক কালিকাপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ বাদী হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান - dainik shiksha সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা - dainik shiksha লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক কেনো বদলি চান - dainik shiksha শিক্ষক কেনো বদলি চান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে - dainik shiksha ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0044589042663574