বরগুনায় ২৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় একযোগে ছুটি দিয়ে ১০ জন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। সেই অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টারের শিক্ষা কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন। তবে, শিক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, প্রধান শিক্ষকরা চাইলে বছরে চার দিন স্কুলে ঐচ্ছিক ছুটি দিতে পারবেন। সোমবার বরগুনা সদর উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।
বরগুনা সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি সূত্র জানায়, সোমবার সদরের গৌরিচন্না ইউনিয়নের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন গৌরিচন্না ক্লাস্টারের শিক্ষকরা। এ উপলক্ষে ওই ইউনিয়নের ২৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একদিন ছুটি ঘোষণা করেন। সকাল ১০টায় দক্ষিণ লাকুরতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ অনুষ্ঠান শুরু হয়ে দুপুর ১২টায় শেষ হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি করা হয় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুর রাজ্জাককে। এছাড়াও বিশেষ অতিথি করা হয় যথাক্রমে জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোজাফফর উদ্দিন ও সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আরিফুজ্জামানকে। এ তিনজনের কেউ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টারের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা সুব্রত কুমার উপস্থিত ছিলেন।
নিয়মিত দিনে স্কুল ছুটি ঘোষণা করে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা সুব্রত কুমার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রধান শিক্ষক চাইলে বিধিমোতাবেক বছরে চার দিন ঐচ্ছিক ছুটি দিতে পারবেন। ওনারা ইউইও স্যারের কাছে ছুটির আবেদন করে অনুষ্ঠান করেছেন। সেখানে আমিও উপস্থিত ছিলাম।
বরগুনা সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান লিটন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, নিয়ামানুসারে প্রধান শিক্ষক চাইলে বছরের চার দিন ঐচ্ছিক ছুটি দেয়ার সুযোগ রয়েছে। যদি স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী বা ব্যবস্থাপনা কমিটির কেউ আকস্মিক দুর্ঘটনাজনিত কারণে মারা যান, তবেই কেবল জরুরি পরিস্থিতি বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছুটি ঘোষণা করতে পারবেন। কিন্তু সংবর্ধনাজনিত কারণে একযোগে ২৩টি স্কুল ছুটি ঘোষণা করা বিধিসম্মত নয়।
জানতে চাইলে দক্ষিণ লাকুরতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেরুন্নেসা রিমি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমরা ঐচ্ছিক ছুটির আবেদন করে অনুষ্ঠান করেছি। এটা বিধিবহির্ভূত নয়।
বরগুনা সদর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আরিফুজ্জামান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, অনুষ্ঠানটি ছুটির দিনে করলে ভালো হতো। তবে ওনারা ঐচ্ছিক ছুটির আবেদন করে, স্কুল ছুটি দিয়ে অনুষ্ঠান করেছেন। আমি বিষয়টি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্যারকে জানিয়েই ছুটির অনুমোদন দিয়েছি।
একযোগে ২৩টি স্কুল বন্ধ রেখে সংবর্ধনা জরুরি ছিলো কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক চাইলে বছরের চার দিন ছুটি দিতে পারবেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুর রাজ্জাক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সংবর্ধনার জন্য ওনারা (প্রধান শিক্ষক) একদিন ঐচ্ছিক বন্ধের অনুমোদন নিয়ে অনুষ্ঠান করেছেন। তবে চাইলে ছুটির দিনেও এটি করা যেতো।