১০ স্কুলে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান

মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি |

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে শ্রেণিকক্ষ সংকটে দশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ, ঝূকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান চলছে। গত ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল খোলার পর থেকেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন। ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তারা ধসে পড়ায় ব্যবহার অযোগ্য ভবনে যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। 

হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলেই স্কুলগুলোতে শিশুদের উৎকন্ঠা বেড়ে যায়। ছাদের ও দেয়ালের পলেস্তারা ধসে পড়ছে। দরজা-জানালার গ্রিল খসে পড়ায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদানের পরিবেশ নেই।

মির্জাগঞ্জের ১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ অবস্থা তৈরি হয়েছে, যেখানে পাঠদান করানো প্রায় অসম্ভব। এরই মধ্যে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ৫৪৪ দিন বন্ধের পরে শিক্ষার্থীরা ফিরছে নিজ নিজ বিদ্যাপীঠে। তবে উপজেলার ১৪২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে দশটি বিদ্যালয় জরাজীর্ণ ও শ্রেণিকক্ষ সংকটে থাকায় ওই সকল বিদ্যালয়ে শিক্ষক কর্মচারীর মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। এ সব বিদ্যালয়ে পাঠদান নিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরাজ করছে চরম আতঙ্ক। 

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জরাজীর্ণ শ্রেণি সংকটে থাকা বিদ্যালয়গুলো হচ্ছে, উত্তর চত্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভিকাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুন্দ্রা কালিকাপুর হাই সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিসমত ছৈলাবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ মির্জাগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ গাবুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,পূর্ব বাজিতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর গাবুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ সুলতানাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও করমজাবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। 

সরেজমিনে সুন্দ্রা কালিকাপুর হাই সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয় ভবনটি ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে পায়রা নদীর ভাঙনের কবলে পরলে তা নিলামে বিক্রি করা হয়। পরে বেড়িবাধেঁর বাইরে জনৈক গাজী আব্দুস সালামের একটি পরিত্যক্ত টিনশেড ঘরে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছিল। বিদ্যালয়টি বাধের বাহিরে থাকায় জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়। ঘরের ভেতরে কয়েকটি বেঞ্চ ও ২টি টেবিল ছাড়া অন্য কোন আসবাবপত্র দেখা যায়নি। এখানে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। তবে জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ কয়েকটি বিদ্যালয়ে ছাদের পলেস্তরা নেই। মরিচাযুক্ত রড ফেটে ফেটে পড়ছে। নিরাপত্তা পিলারের ইট সুরকি খসে ভেতরের রড বেরিয়ে গেছে। কিছু কিছু বিদ্যালয়ের জানালা নেই, মরিচা ধরে ভেঙে পড়ে রয়েছে। এর মধ্যে উত্তর চত্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ পাকা ভবনটি কতৃপক্ষ ইতোপূর্বে পরিত্যক্ত ঘোষণা করায় ক্ষুদ্র মেরামতের বরাদ্দ দিয়ে ওই ভবনের পাশে একটি টিনশেড ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে রয়েছে শ্রেণিকক্ষ ও অফিস কক্ষের সংকট। 

ছবি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি 

উত্তর চত্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বিদ্যালয় খোলার পর থেকে কষ্ট করে ক্লাস করতে হচ্ছে। শ্রেণিকক্ষের সংকট থাকার পরেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস হচ্ছে। 

সুন্দ্রা কালিকাপুর হাই সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক গাজী মো. শাহাদৎ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, দীর্ঘ দিন পর বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম শুরু হলেও বিদ্যালয় ভবন না থাকায় অভিভাবকেরা ছেলে-মেয়েদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন।
 
সুন্দ্রা কালিকাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিল মোসাঃ আফরোজা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, পায়রা নদী গর্ভে পাকা ভবনটি বিলীন হয়ে যাওয়ায় বাধের বাহিরে অন্যর পরিত্যক্ত টিনশেড ঘরে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনায় খুবই অসুবিধা হচ্ছে। শিগগিরই জমি অধিগ্রহণ করে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর আবেদন জানাচ্ছি।

ছবি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি 

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কে এম নজরুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, জরাজীর্ণ ভবনগুলো সংস্কারের জন্য ইতোমধ্যেই মেরামত চলছে। পরিত্যক্ত ও জরাজীর্ণ বিদ্যালয় ভবনের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। নতুন বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া বিকল্প উপায়ে পাঠদানের ব্যবস্থা করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির উদ্যোগ স্থগিতের নেপথ্যে - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির উদ্যোগ স্থগিতের নেপথ্যে শিক্ষাখাতে অপপ্রচারে ভূয়া অভিভাবক ফোরাম, জাল সনদের অধ্যক্ষ - dainik shiksha শিক্ষাখাতে অপপ্রচারে ভূয়া অভিভাবক ফোরাম, জাল সনদের অধ্যক্ষ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025358200073242