১১ ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে সেই মাদরাসা প্রধান

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি |

চার নয়, এগারো ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে গ্রেফতারকৃত মাদরাসা প্রধান মুফতি মোস্তাফিজুর রহমান। শুধু তাই নয়, ওই ১১ জনের মধ্যে ৮ বছর বয়সী তার এক নিকটাত্মীয়ও রয়েছে তার ধর্ষণ তালিকায়। আর এ কাজে সে ছাত্রীদের আখিরাতের ভয়, মিথ্যা হাদিস ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়েছেন। গত তিন বছর ধরে মোস্তাফিজ ছাত্রীদের সঙ্গে ন্যক্কারজনক ও ঘৃণিত এ কাজ করে আসছিল। চাঞ্চল্যকর ও ভয়ঙ্কর এ তথ্য র‌্যাবের কাছে অকপটে স্বীকার করেছে সে। শনিবার বিকালে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ভূঁইগড় আল-আরাফা রাইস মিল সংলগ্ন দারুল হুদা আল ইসলাম মহিলা মাদরাসার অধ্যক্ষ মুফতি মোস্তাফিজুর রহমান জসিমকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে ভয়ঙ্কর সব তথ্য পেয়েছে র‌্যাব।

জসিমের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে গতকাল দুপুরে র‌্যাব-১১’র সিদ্ধিরগঞ্জের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন র‌্যাব কর্মকর্তারা।

র‌্যাব-১১’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন বলেন, শনিবার দুপুরে মোস্তাফিজুর রহমান জসিমকে গ্রেফতারের পর তাকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জসিম জানায়, সে ছাত্রীদের আখিরাতের ভয় দেখিয়ে হুজুরের কথা না শুনলে গুনাহ হবে, জাহান্নামে যেতে হবে- এমন আরো নানা ধরনের মিথ্যা বলে গত তিন বছরে মাদরাসার ১১ ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে। কোনো ছাত্রী প্রতিবাদ করলে মিথ্যা ফতোয়ার পাশাপাশি তাবিজ করে পাগল করে দেয়া বা ছাত্রীর পরিবারের ক্ষতি করার ভয় দেখিয়েও ধর্ষণ করতো।

শুধু তাই নয়, তার মাদরাসায় পড়ুয়া ৮ বছর বয়সী এক নিকটাত্মীয়কেও সে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে বলে স্বীকার করেছে। এসবের বাইরে টার্গেট করা ছাত্রীদের মধ্যে যাদের বাগে আনা সহজ হতো না তাদের সে নিজেই মিথ্যা হাদিস হিসেবে বলতো যে, হুজুরের সঙ্গে সম্পর্ক করা জায়েজ আছে। আবার কোনো কোনো ছাত্রীকে বলতো অভিভাবক ও সাক্ষী ছাড়া বিয়ে হয়- এমন জাল হাদিসের কথা বলে বিয়ের নাটক সাজিয়ে ধর্ষণ শেষে পাল্টা আরেকটি জাল হাদিসের মাধ্যমে তালাক হয়ে গেছে বলে ফতোয়া দিতো। তার এ ধরনের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ যেসব ছাত্রী করেছে তাদের সে নানা মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মাদরাসা থেকে বের করে দিতো।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোস্তাফিজুর রহমান ৬ ছাত্রীকে ধর্ষণ ও ৫ ছাত্রীকে যৌন হয়রানির কথা স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে র‌্যাব-১১ এ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দীন জানান।

উল্লেখ্য, গত ৬ বছর ধরে জসিম দারুল হুদা মহিলা মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করে। এখানে সে তার দুই মেয়ে, এক ছেলে ও স্ত্রীসহ বসবাস করতো। মাদরাসাটিতে মোট ৯৫ জন শিক্ষার্থীর ৩০ জন ছিল আবাসিক। মাদরাসাতে ১১ জন মহিলা শিক্ষক এবং জসিমসহ ৬ জন পুরুষ শিক্ষক আছে। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা - dainik shiksha শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0051369667053223