১৫ বছর ধরে বন্ধ মধুমন্ডল পাবলিক লাইব্রেরি

দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি |

দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর ধরে তালাবদ্ধ হয়ে পড়ে আছে দামুড়হুদা মধুমন্ডল পাবলিক লাইব্রেরি। পাঠাগারটি চালু করার কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। দামুড়হুদা পুরাতন বাজার পাড়ায় অবস্থিত লাইব্রেরিটি এক সময় সকাল বিকাল পাঠকদের আনাগোনা ও বই পড়ায় মুখরিত থাকতো।

১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত পাঠাগার ভবনের দ্বিতল ভবন সম্প্রসারণের কাজ প্রায় শেষের দিকে থাকা অবস্থা থেকেই বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। প্রচুর পরিমাণ বই-পুস্তক ও আসবাবপত্র থাকা সত্ত্বেও চালু করার কোনো উদ্যোগ নেই। অবলোয় নষ্ট হচ্ছে বই-পুস্তকসহ সব আসবাবপত্র।

জানা গেছে, ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে জ্ঞানচর্চার কথা চিন্তা করে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব সামসুল আলম মাস্টার, আহসান আলি মাস্টার, অবসরপ্রাপ্ত বিডিআর সদস্য আজাহার উদ্দীন, ইউসুফ আলি খাঁন মাস্টার, দীন মোহাম্মদসহ কয়েকজন মিলে দামুড়হুদায় লাইব্রেরি করার পরিকল্পনা করেন। এরপর নিজেদের উদ্যোগে কিছু বই আসবাবপত্র সংগ্রহ করে সামসুল আলম মাস্টারের একটি পুরাতন ভবনে লাইব্রেরির কার্যক্রম শুরু করা হয়।

লাইব্রেরির পদাধিকার বলে ওই সময়কার থানা সার্কেল অফিসার (উন্নয়ন) সভাপতি, শফি উদ্দীন খাঁন, ইউছুফ আলি খান পর্যায়ক্রমে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। সে সময় খুব ভালোভাবেই চলে আসছিল লাইব্রেরির কার্যক্রম। ধীরে ধীরে পাঠক সংখা বৃদ্ধি পেতে থাকে।

১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে পুরাতন ভবনটি ফাটল ধরলে তা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে একই পাড়ার প্রভাবশালী দানশীল ব্যক্তিত্ব সামসুল আলম মাস্টার পুরাতন ভবনের স্থানে ২শতাংশ জমি লাইব্রেরির নামে দান করেন। ওই জমিতে সরকারি অনুদানে নতুন ভবন নির্মাণ করা হয় ও জমিদাতার বাবার নামে মধুমন্ডল পাবলিক লাইব্রেরি নামকরণ করা হয়। তখন সরকারি অনুদানে বইপত্র ও আসবাবপত্র ক্রয় করার পর পাঠক কুলের বইপড়া ও আনা গোনায় মুখরিত থাকতো লাইব্রেরি।

১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দে শফিকুল আলমকে সাধারণ সম্পাদক ও মনজুর রহমানকে লাইব্রেরিয়ানের দায়িত্ব নেয়ার পর পাঠকের সংখা ব্যাপক হারে বেড়ে খুবই রমরমা অবস্থা চলছিল। পাঠক সংকুলান না হওয়ায় ওই বছরই প্রতিষ্ঠানটি সরকারি অনুদানে শুরু করে দ্বিতল ভবনের কার্যক্রম। তবে ছাদ ঢালায়ের আগমুহূর্তে বন্ধ হয়ে যায় দ্বিতল ভবনের কার্যক্রম। এরই মাঝে সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় চলে যান। সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেন একই এলাকার সহিদুল ইসলাম। তখন থেকে পাঠক সংখ্যা কমতে শুরু করে। এরপর এক পর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায় প্রতিষ্ঠানটি। ফলে অযত্ন আর অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে বই-পুস্তকসহ আসবাবপত্র।

কাজী সাইদুল ইসলাম বাদশা, মকবুল হোসেনসহ অনেকেই বলেন ওইসময় উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েরা ও অনেক চাকুরিজীবীরা নামী-দামি লেখকদের বই পড়ে জ্ঞানচর্চার মাধ্যমে সময় কাটাতেন। লাইব্রেরিটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকাবাসী। তারা লাইব্রেরিটি চালু করা জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছেন।

দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম. মুনিম লিংকন বলেন, লাইব্রেরিটি পরিদর্শনে যাবো ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে বসে আলোচনা করে কীভাবে পুনরায় এটি চালু করা যায় তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাধারণ সম্পাদক সহিদুল ইসলাম বলেন, গ্রামের ভিতরে হওয়ায় এখন আর কেউ পুরাতন বাজারের দিকে আসতে চায় না। নতুন প্রজন্মের ভালো লেখকদের বই-পুস্তক সংগ্রহ করে আবারো নতুন উদ্দ্যোগে নিলে হয়তো আবারো লাইব্রেরিটি চালু করা সম্ভব।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা - dainik shiksha ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ - dainik shiksha কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0042312145233154