১৭ বছরেই ধসে পড়লো বিদ্যালয় ভবন

ডামুড্যা (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি |

শরীয়তপুরের ডামুড্যায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান চলাকালে পাশের একটি কক্ষের ছাদের একাংশ ধসে পড়ে। তাতে অল্পের জন্য শিক্ষার্থীরা দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যায়। গত রোববার বিকেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, বিদ্যালয় ভবনের ছাদ দিয়ে পানি পড়ত। সম্প্রতি দুই লাখ টাকার বরাদ্দ পেলে ছাদ সংস্কারের শুরু করা হয়। গত রোববার শ্রমিকরা ছাদে কাজ শেষে নেমে এসে বলে, রুমটির ছাদ নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। বেশ কয়েকটি বড় ফাটলও দেখা দিয়েছে। কিছুক্ষণ পরই ছাদটি ধসে পড়ে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলে, ‘আমরা ক্লাস করছিলাম। হঠাৎ পাশের ছোট রুমের ছাদের দেয়ালটি ভেঙে পড়ে। আমরা ভয়ে ক্লাস থেকে বের হয়ে মাঠে চলে যাই।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুলতানা মাসুদা আক্তার জানান, রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলাকালে শ্রেণিকক্ষের পাশের খালি রুমটি ধসে পড়ে। মিস্ত্রিরা ছাদ পরিষ্কার করে নেমে আমাকে ওই রুমটি আটকাতে বলে, যাতে কেউ আর ওই রুমে যেতে না পারে। তালা মেরে আসতে না আসতেই ভবনের এই অংশটি ভেঙে পড়ে যায়।’

সুলতানা মাসুদা আক্তার আরও বলেন, ‘সবাই আতঙ্কে রয়েছে। বিদ্যালয় ভবনে এখন ক্লাস করতে আমাদেরই ভয় করছে। স্থানীয় লোকজন ও অভিভাবকরা এই ভবনে ক্লাস করাতে নিষেধ করছে। আর করালে স্কুলে বাচ্চাদের পাঠাবে না। আমি এখনো এই ভবনে ক্লাস করতে বলিনি। আজ স্কুল বন্ধ থাকায় কিছু বলতে পারছি না। কাল বলতে পারব কী করব।’

শিক্ষার্থীদের অভিভাবক টিটু মাদবর, রুবেল হাওলাদারসহ অনেকে বলেন, ‘বিদ্যালয় ভবনের ছাদ দিয়ে পানি পড়তো। তাতে বাচ্চাদের বই-খাতা ভিজে যেত। আমরা তখন চিন্তায় থাকতাম। এখন তো ভবনের ছাদ ভেঙে পড়েছে। আমরা তো বিদ্যালয়ে ছেলে-মেয়েদের পাঠাতেই ভয় পাই। কখন বিদ্যালয় ভবন ধসে পড়ে! নির্মাণকাজ চলার সময় আমরা বাধা দিয়েছি। তখন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এলাকার বেশ কয়েকজনের নামে হয়রানিমূলক মামলা দেয়।’

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘ঘটনা শোনার পরপরই আমি ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। সংশ্লিষ্ট সবাইকে ব্যাপারটা জানাই। তখন উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার অফিস জানায়, এটি মূলত ছাদে যাওয়ার জন্য সিঁড়িরুম। তখন নাকি রুমটি টিনের চালা করার কথা ছিল। তার পরও তাঁদের বলেছি, আপনারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যদি মনে করেন ভবনটিতে ক্লাস করা যাবে, তাহলে আমরা করব, নইলে করব না।’ এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী এস এম হাসান ইবনে মিজান বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমরা এই ভবনটি সংস্কারের জন্য একটি এস্টিমেট দিই। বাজেট কম থাকায় ওই রুমে টিনের চাল দিতে বলা হয়। আর বিদ্যালয় ভবনের ছাদ দিয়ে পানি পড়াতে জলছাদ করার নির্দেশ দিয়েছি।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের ভবন পুরো ঝুঁকিপূর্ণ হয়নি। তাই অন্য কক্ষগুলোতে তাঁরা ক্লাস নিতে পারেন।

কাজ পরিচালনাকারী মাহিনুর সরদারকে ফোন দিলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কেউ নই। আমি শুধু কাজ দেখাশোনা করতাম।’

১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে স্থাপিত বিদ্যালয়ের এই ভবনটি নির্মিত হয় ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে। সে হিসাবে এর বয়স মাত্র ১৭ বছর।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে - dainik shiksha কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা - dainik shiksha ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন - dainik shiksha সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল - dainik shiksha ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে - dainik shiksha নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0039849281311035