কমপ্লিট শাটডাউনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে পরিচালিত হামলায় ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত হওয়ার প্রভাব পড়েছে অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রস্তুতে। বিধিমালা অনুযায়ী, লিখিত পরীক্ষার ৪৫ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশ করতে হয়। অনিবার্য পরিস্থিতিতে এ সময় আরো ১৫ দিন বাড়ানোর সুযোগ আছে। সর্বোপরি ৬০ দিনের মধ্যে লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু, গত ১২ ও ১৩ জুলাই লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর প্রায় দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনো খাতা মূল্যায়নের প্রক্রিয়াই শুরু করা যায়নি। এসব পরিস্থিতিতে নিয়োগকারী সংস্থা বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) যথাসময়ে অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশের ব্যাপারে শঙ্কিত হয়ে উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, শিক্ষক নিবন্ধনের প্রতিটি খাতা দুই জন পরীক্ষক পরীক্ষা করেন। প্রথম ও দ্বিতীয় পরীক্ষক মিলিয়ে খাতা মূল্যায়নে প্রায় এক মাস সময় লাগে। প্রথম পরীক্ষককে খাতা মূল্যায়নের জন্য ১৫ দিন সময় দেয়া হয়। দ্বিতীয় পরীক্ষকও একই সময় পান। প্রথম পরীক্ষকের কাছ থেকে খাতা সংগ্রহের পর দ্বিতীয় পরীক্ষকের কাছে পাঠাতে ৭ থেকে ১০ দিন লাগে।
উপরন্তু, কারফিউয়ের কারণে ঢাকার বাইরের মূল্যায়নকারীরা ঢাকায় অবস্থিত এনটিআরসিএর অফিস থেকে খাতা নেয়ার সুযোগই পাচ্ছেন না। তাছাড়া এনটিআরসিএর যারাই এই মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় যুক্ত তারাই পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য প্রাথমিক সুপারিশপ্রাপ্তদের ভি-রোল ফরমের কাগজ জমা নেয়ার দায়িত্বে। আবার সরকারি হাইস্কুল ও কলেজের অনেক শিক্ষক বদলিজনিত কারণে ঢাকার বাইরে অবস্থান করছেন। এছাড়া এবার লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যাও বেশি। খাতা মূল্যায়নকারীদের তালিকাও অনলাইন নির্ভর।
জানা গেছে, অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষার খাতা বিভিন্ন বিভাগীয় শহর থেকে এনটিআরসিএর কার্যালয়ে এসেছে। গত দুদিন ধরে তালিকা তৈরির কাজ চলছে। তালিকা শেষ হলে এসব খাতা দ্রুত সময়ের মধ্যে পরীক্ষকদের কাছে পাঠানো শুরু হবে।
কবে নাগাদ অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধনের ফল প্রকাশ হতে পারে জানতে চাইলে এনটিআরসিএ সচিব মো. ওবায়দুর রহমান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, এখনই বলা যাচ্ছে না কবে নাগাদ ফল প্রকাশ হবে। লিখিত পরীক্ষার দুই মাসের মধ্যে ফল প্রকাশ হওয়ার কথা।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ মে ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। এতে গড় পাসের হার ৩৫ দশমিক ৮০ শতাংশ। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় স্কুল ও কলেজ পর্যায় মিলিয়ে পাস করেছেন চার লাখ ৭৯ হাজার ৯৮১ জন চাকরিপ্রার্থী।
এর আগে গত ১৫ মার্চ প্রিলিমিনারি পরীক্ষাটি অনুষ্ঠিত হয়। ১৮ লাখ ৬৫ হাজার ৭১৯ জন আবেদন করলেও পরীক্ষায় অংশ নেন ১৩ লাখ ৪০ হাজার ৮৩৩ জন।