দৈনিকশিক্ষাডটকম, নোবিপ্রবি : বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে গিয়ে লাপাত্তা, অব্যাহতি ও অপসারণসহ গত একবছরে ক্যাম্পাস ছেড়ে গেছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৬ শিক্ষক।
জানা যায়, নিজেদের গবেষণা বৃদ্ধি ও পিএইচডি সম্পন্ন করতে বিদেশের মাটিতে পা রেখে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরেননি সিংহভাগ শিক্ষক। এর মধ্যে ৩১ জন শিক্ষক অব্যাহতি নিয়েছেন, চারজনকে অপসারণ, একজনকে বরখাস্তসহ শিক্ষকতায় ফেরেননি মোট ৩৬ শিক্ষক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিসের তথ্যমতে, এদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড টেলিকমিউনিকেশন বিভাগের চারজন, ফিসারিজ এন্ড মেরিন সায়েন্স বিভাগের একজন, ফার্মেসি বিভাগের সাতজন, এপ্লাইড কেমিস্ট্রি এন্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পাঁচজন, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের তিনজন, ইংরেজি বিভাগের দুজন, ফুড টেকনোলজি এন্ড নিউট্রিশন সায়েন্স বিভাগের তিনজন, অর্থনীতি বিভাগের একজন, বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দুজন, ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তিনজন এগ্রিকালচার বিভাগের এক, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের দুজন, শিক্ষা বিভাগের একজন ও আইসিই বিভাগের একজন।
অধিকাংশ শিক্ষকরা দেশের বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা সম্পন্ন করে দেশে ফিরে এমন পরিবেশ ও গবেষণার পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা পাবেন না ভেবে সেখানে গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন- এমনটি মনে করেন দেশের বাইরে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকবৃন্দ।
বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে গিয়ে অব্যাহতি নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান্তিক অবস্থান, গবেষণার পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা পাওয়া না পাওয়ার বিষয়ে সন্দিহান থাকা ও নিজেদের পরিবারের সন্তানসন্ততি নিয়ে সুন্দর ভবিষ্যৎ জীবন পরিচালনার বিবেচনায় তারা ফিরতে চান না ক্যাম্পাসে।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজনীতি ও পরিস্থিতির শিকার হয়ে নিজেদের প্রাপ্য সম্মান ও পদোন্নতি না পাওয়াকে এর পিছনে দায়ী মনে করেন কিছু শিক্ষক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর জানান, উচ্চশিক্ষা শেষে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শিক্ষকরা দেশে না ফেরায় কেউ অব্যাহতি নিয়েছেন ও কাউকে অপসারণ করা হয়েছে। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে ক্যাম্পাসে না ফিরলে আমরা চিঠি দিই। পরবর্তীতে বিষয়টি রিজেন্ট বোর্ডের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ দিদার-উল-আলম বলেন, অধিকাংশ শিক্ষকরা উচ্চশিক্ষা শেষে নিজেদের সুযোগ-সুবিধার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরতে চান না। এ সংখ্যাটি কমিয়ে আনতে উচ্চশিক্ষার জন্য ছুটির বিষয়টি কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন বলে জানান তিনি।