৩ ধারায় শিক্ষার বিভাজন মারাত্মক সংকট তৈরি করছে : আবুল মোমেন

ঢাবি প্রতিনিধি |

‘এদেশের শিক্ষা গোড়া থেকেই মক্তব-মাদরাসা, বাংলা মাধ্যম ও ইংরেজি মাধ্যম- এই তিনটি প্রধান ধারায় বিভক্ত। জাতি গঠনে শিক্ষার এই বিভাজন মারাত্মক সংকট তৈরি করছে।’ বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ২৯তম নাজমা জেসমিন চৌধুরী স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তা লেখক ও সাংবাদিক আবুল মোমেন এমন কথা বলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীসহ ইনস্টিটিউটের শিক্ষকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক রূপা চক্রবর্তী। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক শিশির ভট্টাচার্য।

‘শিশুর কথা শিক্ষার কথা’ শীর্ষক একক স্মারক বক্তৃতায় আবুল মোমেন বলেন, এখন শিশুকে খাটানোর জন্য, তার যোগ্যতা মাপার জন্য বছরজুড়ে পরীক্ষার ফাঁদ পাতা থাকে। পরীক্ষাভিত্তিক শিক্ষার মারাত্মক ত্রুটি হলো শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়ের জ্ঞানচর্চার আগ্রহ এবং সামর্থ্য নষ্ট হয়ে যায়। কেননা, পরীক্ষা হয় প্রশ্নের ভিত্তিতে। প্রশ্ন হয় সাধারণত অধ্যায় বা বিষয়ের কোনো অংশের ওপর। শিক্ষকরা হিসাব কষে শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেন- সে বছরের জন্য কোন কোন প্রশ্ন গুরুত্বপূর্ণ। এতে পরীক্ষার্থী কেবল ওই প্রশ্নগুলোই শেখে। ফলে ওই বিষয় সম্পর্কে শিক্ষার্থীর কেবল খণ্ডিত ধারণাই থেকে যায়।

তিনি বলেন, স্কুল যাতে ঠিকমতো নিজের দায়িত্ব পালন করতে পারে সে জন্য প্রথম প্রয়োজন ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত ঠিক করা।

এ অনুপাত প্রাক-প্রাথমিকে ২০-২৫ জন; প্রাথমিকে সর্বোচ্চ ৩০ জন এবং মাধ্যমিকে ৮০ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত। এ ছাড়া শিশুদের জন্য খেলার মাঠ, অন্তত তিন হাজার বইয়ের গ্রন্থাগার, মাধ্যমিক স্কুলে বিজ্ঞান গবেষণাগার বিশেষ প্রয়োজন। তিনি বলেন, সমাজে শিক্ষার বিপ্লব ঘটাতে হবে। জ্ঞানচর্চার সব বাতায়ন খুলে দিতে হবে। শিশুর পূর্ণাঙ্গ মানসিক বিকাশে শিক্ষা ব্যবস্থায় দ্রুত গুণগত পরিবর্তন প্রয়োজন।

উপাচার্য আখতারুজ্জামান প্রয়াত শিক্ষক ড. নাজমা জেসমিন চৌধুরীর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধসহ সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় তিনি অবদান রেখেছেন। শিশু সংগঠক হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন। শিক্ষা ব্যবস্থায় গুণগত পরিবর্তন আনার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, এ লক্ষ্যে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে অধ্যাপক নাজমা জেসমিন চৌধুরী স্মরণে প্রতি বছরের মতো এবারও ইনস্টিটিউটের বিদেশি শিক্ষার্থীদের নিয়ে বাংলা রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। প্রতিযোগিতায় বাংলা ভাষায় অধ্যয়নরত যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থী অ্যাশলে রিকিটিন বিজয়ী হন। উপাচার্য বিজয়ী শিক্ষার্থীকে পদক ও সনদপত্র প্রদান করেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ - dainik shiksha বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি - dainik shiksha যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি - dainik shiksha তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই - dainik shiksha শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী - dainik shiksha বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027449131011963