৪ মাস আগে পালিয়ে বিয়ে, শ্বশুরবাড়িতে মিললো ছাত্রীর মরদেহ

নীলফামারী প্রতিনিধি |

নীলফামারীর ডোমারে পল্লবী রায় (২৩) নামে এক গৃহবধুর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের নিমোজখানা বাবুপাড়া এলাকার পোড়া মানিকের বাড়ি থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। 

এদিকে এ ঘটনার পর থেকে গৃহবধূর স্বামী গা ঢাকা দিয়েছেন। নিহতের স্বজনদের দাবি, পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ঝুলিয়ে রেখেছেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

পল্লবী রানী উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের নিমোজখানা বাবুপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও টোল কালিগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিশ্বদেব রায়ের দ্বিতীয় স্ত্রী। তিনি নীলফামারী সরকারি কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

নিহতের বাবা গৌরাঙ্গ রায় বলেন, আমার মেয়ের সাথে গত চার মাস আগে বিয়ে হয় শিক্ষক বিশ্বদেবের। এর আগে বিশ্বদেবের কাছে আমার মেয়ে প্রাইভেট পড়তো। সেখান থেকেই তাদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানার পর আমি আমার মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেই। বিশ্বদেবও অন্য জায়গায় বিয়ে করে। আমার মেয়ের আগের সংসারে এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। বিশ্বদেব আমার জামাই বাড়িতে গিয়ে তাদের মধ্যে ডিভোর্স ঘটায়। ডিভোর্সের পর থেকেই আমার মেয়ে তার মেয়ে অনন্যাকে নিয়ে আমার বাড়িতে থাকে। এখানে থাকার মধ্যেই আমার মেয়েকে চার মাস আগে পালিয়ে বিয়ে করে বিশ্বদেব। বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়ে তার স্বামীর বাড়িতে রয়েছে। সেখানে বিশ্বদেবের আগের বউও থাকে। 

তিনি বলেন, সকালে আমার ভাগিনা ফোন দিয়ে জানায় চেয়ারম্যান রিমুন ফোন দিয়ে বলেছে পল্লবী ফাঁস নিয়েছে। ঘটনা শুনার পর এখানে এসে দেখি আমার মেয়ে ছাপড়া ঘরের ভেতর গলায় ওড়না দিয়ে মাটিতে পা লাগানো অবস্থায় ঝুলে রয়েছে। কীভাবে এই ঘটনা ঘটেছে জানতে চাইলে বিশ্বদেবের পরিবার তালবাহানা করতে থাকে। আমি এখানে আসার পর খেকেই বিশ্বদেবের কোনো খোঁজ পাইনি, সে পালিয়ে গেছে। আমার মেয়েকে মেরে ঘরের মধ্যে ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা প্রচার করছে তারা।

বিশ্বদেব রায়ের প্রথম স্ত্রী জুই রায় বলেন, সকালে বাসন মাজার পর পল্লবী এসে বলে দিদি শরীরটা খারাপ লাগছে ভাত কীভাবে রান্না করবো। তখন আমি তাকে বলি তুই রেস্ট নে, আমি ভাত রান্না করবো। এই বলে সে ঘরের ভেতর চলে যায়। ভাত রান্না হওয়ার পর আমার স্বামী বিশ্বদেব পল্লবীকে ডাকতে গিয়ে দেখে সে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলে আছে। এ সময় আমার স্বামী চিৎকার করলে আমরা সকলেই গিয়ে দেখতে পাই সে ঘরের মধ্যে আত্মহত্যা করেছে। তবে কী কারনে সে আত্মহত্যা করেছে বিষয়টি বলতে পারছি না। পরে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। 

পল্লবীর মামাতো ভাই বিকাশ বলেন, বিয়ের পর থেকে পল্লবীকে তার স্বামী বিভিন্ন সময় মারধর করত। বিশ্বদেব ও তার পরিবার পল্লবীকে মেরে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার কথা প্রচার করছে। আমরা এই হত্যার বিচার চাই।

এ বিষয়ে নীলফামারীর সহকারী পুলিশ সুপার (ডোমার সার্কেল) আলী মো. আব্দুল্লাহ বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে। তদন্ত রিপোর্ট আসলেই প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সরকারি চাকরি থেকে ২০ শিক্ষককে অব্যাহতি - dainik shiksha সরকারি চাকরি থেকে ২০ শিক্ষককে অব্যাহতি ইউজিসি চেয়ারম্যানের অতিরিক্ত দায়িত্বে বহাল থাকছেন অধ্যাপক আলমগীর - dainik shiksha ইউজিসি চেয়ারম্যানের অতিরিক্ত দায়িত্বে বহাল থাকছেন অধ্যাপক আলমগীর চার তারিখের মধ্যে মাদরাসা শিক্ষকদের এমপিওর আবেদন - dainik shiksha চার তারিখের মধ্যে মাদরাসা শিক্ষকদের এমপিওর আবেদন ত্রাণ দিতে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনা, আহত ১২ চবি শিক্ষার্থী - dainik shiksha ত্রাণ দিতে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনা, আহত ১২ চবি শিক্ষার্থী ব্যাংকের অনিয়ম তদন্তে কমিশন গঠন হচ্ছে - dainik shiksha ব্যাংকের অনিয়ম তদন্তে কমিশন গঠন হচ্ছে শীট মেশিন সম্বলিত প্রতিষ্ঠানের জন্য পুনরায় দরপত্র দাবি - dainik shiksha শীট মেশিন সম্বলিত প্রতিষ্ঠানের জন্য পুনরায় দরপত্র দাবি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0047249794006348