শিক্ষা ছুটি শেষ হওয়ার পরও কর্মস্থলে যোগদান না করায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ৭ জন শিক্ষকের কাছ থেকে বেতন-ভাতা বাবদ নেয়া ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ফেরত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষা ছুটিতে থাকা অবস্থায় তারা এ টাকা বেতন-ভাতা পেয়েছিলেন। প্রথমবারের মতো কুবির কোনো শিক্ষকের শিক্ষা ছুটিকালীন ভোগ করা বেতন-ভাতার টাকা ফেরত নেয়া হলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
জানা যায়, শিক্ষা ছুটি শেষে কর্মস্থলে না ফেরা ৭ জন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাওনা টাকা ফেরত দিয়েছে। টাকা ফেরত দেয়া শিক্ষকরা হলেন, পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মিজানুর রহমান, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাদিয়া সুলতানা, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আফরোজা হক, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবুল বাসার, আইসিটি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক খোন্দকার ফিদা হাসান, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কামরুল হাসান রঞ্জু ও গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুমি আক্তার। তবে শিক্ষাছুটি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট কতোজন শিক্ষক এখনো দেশে ফেরেননি তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আইন অনুযায়ী, বিদেশে যাওয়া শিক্ষকরা বৈতনিক-অবৈতনিকসহ বিভিন্নভাবে সর্বোচ্চ চার বছর পর্যন্ত ছুটি নিতে পারেন। এসময় কারো ডিগ্রি বা গবেষণা শেষ না হলে আরো দুই বছরের অবৈতনিক ছুটি দেয়া হয়। তবে নিয়ম হলো, চার বছর ছুটি ভোগের পর দেশে ফিরে কাজে যোগদান করতে হবে। এরপর আবেদন করতে হবে দুই বছরের জন্য ছুটির। এছাড়া চার বা ছয় বছর ছুটি ভোগের পর কেউ যদি পদত্যাগ করতে চান, তাহলে তাকে ছুটির সময় নেয়া টাকা ফেরত দিতে হয়। অথবা সমপরিমাণ সময় চাকরি করার পর নিতে হয় অব্যাহতি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আমিরুল হক চৌধুরী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমরা আপাতত ৭ জন শিক্ষকের কাছে থেকে টাকা উদ্ধার করতে পেরেছি। আরো কয়েকজন শিক্ষক থেকে টাকা উদ্ধার করা বাকি। আমরা শিগগিরই পুরো কাজ সম্পূর্ণ করতে পারবো বলে আশাবাদী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বিদেশে গিয়ে যারা কর্মস্থলে যোগদান করেননি তাদের নৈতিক দায়িত্ব হচ্ছে আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাপ্য টাকা বুঝিয়ে দিয়ে চাকরি ছেড়ে দেয়া। কিন্তু বিগত সময়ে সেরকম না হওয়ায় আমি আসার পর থেকেই আমি এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছি। এখন পর্যন্ত ৭ জন শিক্ষক টাকা পরিশোধ করেছেন। আরো যারা বাইরে গিয়ে চাকরিতে যোগদান করেননি তাদের সাথেও যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।
তিনি আরো বলেন, বিদেশে গিয়ে না ফেরার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে টাকার যেমন অপচয় হচ্ছে তেমনি শিক্ষক সংকট তৈরি হয়েছে। তাই এসব বিষয়ে আমরা কাজ করছি।