জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৯-২০ সেশনে প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষার অনলাইন আবেদন শুরু হয়েছে। ৬টি অনুষদ ও ৩টি ইনস্টিটিউটের অধীনে মোট ১০টি ইউনিটে ভর্তির আবেদন চেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ইউজিসির নির্দেশনা অমান্য করে নানা সমালোচনার মুখে আবারও বাড়ানো হয়েছে ভর্তি ফরমের দাম। এ নিয়ে ৮ বছরে ভর্তি ফরমের মূল্য বৃদ্ধির পরিমাণ ৭২ শতাংশ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা শাখার তথ্য মতে, এ বছর এ, বি, সি, ডি, এবং ই ইউনিটের ভর্তির ফরমের মূল্য গত বছরের চেয়ে ৫০ টাকা বাড়িয়ে ছয়শ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সি১, এফ, জি, এইচ এবং আই ইউনিটের ফরমের মূল্যও ৫০ টাকা বাড়িয়ে চারশ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টস সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-১৯ সেশনে ভর্তির ফরম বিক্রি বাবদ বিশ্ববিদ্যালয় আয় করে ১৫ কোটি ২৯ লাখ টাকা। ভর্তির যাবতীয় খরচ বাদ দিয়েও এ খাতে অবশিষ্ট ছিল ৯ কোটি টাকা। অবশিষ্ট এ টাকা ভর্তি পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষকদের পারিশ্রমিক বা সম্মানী হিসেবে প্রদান করা হয়েছে।
এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরিচালনা কমিটির সভাপতি হিসেবে উপাচার্য তিন লাখ, উপ-উপাচার্য-দ্বয়, কোষাধ্যক্ষ, সকাল অনুষদের ডিন ও ইনস্টিটিউটের প্রধান পেয়েছেন দুই লাখ ৯০ হাজার টাকা করে। আর ভর্তি পরীক্ষায় পরিদর্শক বা ডিউটিরত শিক্ষকরা পেয়েছেন এক লাখ ৪৫ হাজার টাকা করে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ভর্তি পরিচালনা কমিটিতে যে সব কর্মকর্তারা যুক্ত রয়েছেন তারাও পেয়েছেন এক লাখ ৪৫ হাজার টাকা করে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, ভর্তি ফরম বিক্রি বাবদ আয়ের শতকরা ৪০ ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে জমা দিতে হবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে এই নির্দেশনা মানা হয়নি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম বলেন, ফরমে মূল্য বৃদ্ধি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে সম্মিলিত ভর্তি পরীক্ষা হলে এমন চিত্র দুর করা সম্ভব হবে।
কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির আয়ের ৪০ শতাংশ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে জমা না দিলে ইউজিসির পদক্ষেপ কি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পত্র-পত্রিকা থেকে এমন কোনো তথ্য জানলে ইউজিসি নিয়ম মোতাবেক ব্যবস্থা নেবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক আমির হোসেন বলেন, এ বছরের বাজেটের পর জিনিস-পত্রের দাম বেড়েছে। তাই ফরমের দাম বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া বিভাগ উন্নয়ন আদায় বন্ধ করা হয়েছে। তাই বিভাগগুলোর একটা চাহিদা রয়েছে।
ইউজিসির চেয়ারম্যান ও জাবি উপাচার্যের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা যায়নি।