ব্লেন্ডেড শিক্ষা পদ্ধতির আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের নিয়ে ‘রিসোর্স পুল’ গঠন করে নতুন প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ঘাটতি দূর করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর। জাতীয় পর্যায়ে ব্লেন্ডেড শিক্ষা পদ্ধতি বাস্তবায়নে উচ্চশিক্ষাক্ষেত্রে ‘ব্লেন্ডেড শিক্ষা বিষয়ক মহাপরিকল্পনা’ প্রণয়নের লক্ষ্যে অনিুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সোমবার (৮ জুলাই) ইউজিসিতে দিনব্যাপী এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ইউজিসি সদস্য ও গঠিত কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. হাসিনা খান।
অধ্যাপক আলমগীর বলেন, নতুন প্রতিষ্ঠিত ও প্রান্তিক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ও দক্ষ শিক্ষকের সংকট রয়েছে। ফলে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসম্মত উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।
ব্লেন্ডেড শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে বিষয়ভিত্তিক দক্ষ ও অভিজ্ঞ অধ্যাপকদের নিয়ে রিসোর্স পুল গঠন করে শিখন ঘাটতি দূর করার উদ্যোগ নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
সব বিশবিদ্যালয়কে ব্লেন্ডেড শিক্ষা পদ্ধতি বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, উচ্চশিক্ষাক্ষেত্রে সময়োপযোগী বেশকিছু নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু, এসব নীতিমালার বাস্তবায়ন অগ্রগতি আশাবাঞ্জ্যক নয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলসহ সংশ্লিষ্টদের এসব নীতিমালা বাস্তবায়নে আন্তরিক হওয়ার পরামর্শ দেন।
অধ্যাপক হাসিনা খান বলেন, চলতি বছরের মধ্যে ব্লেন্ডেড শিক্ষাবিষয়ক মহাপরিকল্পনার খসড়া চূড়ান্ত করা হবে। এ লক্ষ্যে ইউজিসি অংশীজনদের সঙ্গে সভা করেছে। ব্লেন্ডেড শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষা অংশগ্রহণমূলক করা, শিক্ষার্থীদের মানসিক দক্ষতা ও সমস্যার সমাধানসহ আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম হবে বলে তিনি জানান। তিনি ব্লেন্ডেড শিক্ষা পদ্ধতি বাস্তবায়নে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান এবং প্রয়োজনীয় আইসিটি অবকাঠামো গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
কর্মশালায় ‘উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে ব্লেন্ডেড শিক্ষা মহাপরিকল্পনা’ তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য প্রযু্ক্তি ইনস্টিটিউটের প্রফেসর ড. মুহাইমিন আস সাকিব এবং ‘ব্লেন্ডেড লার্নিং রোডম্যাপ: কস্ট মডেলিং অ্যান্ড অ্যাস্টিমেশন’ বিষয় তুলে ধরেন বাংলাদেশ রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন নেটওয়ার্কের (বিডিরেন) সিইও মোহাম্মদ তৌরিত।
ইউজিসি’র অতিরিক্ত পরিচালক বিষ্ণু মল্লিক এর সঞ্চালনায় কর্মশালায় ঢাকা ও পাশ্ববর্তী অঞ্চলের ৩১টি পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, আইকিউএসি ও আইসিটি’র পরিচালক এবং মনোনীত প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
প্রসঙ্গত, সশরীরে ও অনলাইন শিক্ষা সমন্বিত করে উচ্চশিক্ষার জন্য ব্লেন্ডেড লার্নিং নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করেছে ইউজিসি। উচ্চশিক্ষায় বাংলাদেশ যেনো পিছিয়ে না পড়ে সে বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে খসড়া নীতিমালায়। এ ছাড়া, ক্লাসরুম শিক্ষা অধিক অংশগ্রহণমূলক করা, শিক্ষার্থীদের কার্যকরভাবে শিক্ষণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত এবং শিখন-শিক্ষণ প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক প্রভাব রাখার উদ্দেশে এই নীতিমালা করা হয়েছে।