‘অনুপ্রবেশের’ সমাধান খুঁজছে ছাত্রলীগ

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

টানা তৃতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকায় দলটির ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলতে পেরেছে। অনেকটা কোণঠাসা বিরোধী দলগুলোর সমর্থক ছাত্রসংগঠনের অনেক নেতাকর্মী ভিড়েছেন এ সংগঠনে। শনিবার (৩০ নভেম্বর) কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন রফিকুল ইসলাম।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, ঢাকার বাইরে কোনো কোনো উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদও বাগিয়ে নিয়েছেন অন্য সংগঠন থেকে আসা কর্মীরা, যাঁদের ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তাঁরা বলছেন, নেতা নির্বাচনে সঠিক যাচাই-বাছাই না হওয়ায়, নেতৃত্ব নির্বাচনের দুর্বলতার সুযোগে সংগঠনে অনুপ্রবেশ ঘটেছে। সারা দেশ থেকে ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশের বিষয়ে কয়েক শ অভিযোগ পেয়েছেন তাঁরা।[টানা তৃতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকায় দলটির ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলতে পেরেছে। অনেকটা কোণঠাসা বিরোধী দলগুলোর সমর্থক ছাত্রসংগঠনের অনেক নেতাকর্মী ভিড়েছেন এ সংগঠনে। শনিবার (৩০ নভেম্বর) কালের কণ্ঠ পত্রিকায় এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন রফিকুল ইসলাম।

অনুপ্রবেশের ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে জানিয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, কয়েকটি ইউনিটে অনুপ্রবেশের বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। বিতর্কিতদের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁদের সংগঠন থেকে বাদ দেওয়ার কথা বলছেন ছাত্রলীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা।

ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দীর্ঘ সময় সরকার ক্ষমতায় থাকায় ছাত্রলীগে ব্যাপক অনুপ্রবেশ ঘটেছে। পারিবারিক পরিচয় লুকিয়ে রেখে বিরোধী মতের হলেও সংগঠনে জায়গা করে নিয়েছে। এ বিষয়ে এখন জেলা ও উপজেলা থেকে অনেক অভিযোগ আসছে। আর সেই অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, অভিযোগ আসার পর তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও গোয়েন্দাদের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে। সব কিছু পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এ পর্যন্ত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের কমিটি হয়েছে তিনটি। ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ ও সিদ্দিকী নাজমুল আলম কমিটি, ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে সাইফুর রহমান সোহাগ ও এস এম জাকির হোসাইনের কমিটি এবং সর্বশেষ ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও রাব্বানী কমিটি।

তবে চাঁদাবাজি, অনিয়ম ও মাদক সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠার পর শোভন-রাব্বানীকে অপসারণ করা হয়। এরপর গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পান আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান লেখক ভট্টাচার্য।

দায়িত্ব পাওয়ার পর জয়-লেখক চ্যালেঞ্জ নিয়ে কার্যক্রম শুরু করেন। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মাদক সম্পৃক্ততা, অনৈতিক কাজ ও চাঁদাবাজিতে না জড়ানোর বিষয়ে তাঁরা কঠোর হুঁশিয়ারি দেন। এমন অপরাধে জড়ালে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলেও বার্তা পাঠান তাঁরা।

ছাত্রলীগ সূত্র বলছে, জয়-লেখক দায়িত্ব নেওয়ার পর সারা দেশে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে আস্থা ফিরেছে। তাঁরা দুজন সাধ্যমতো চেষ্টাও করছেন ছাত্রলীগকে সুশৃঙ্খল করতে। সারা দেশে ছাত্রলীগে অস্থিরতা ও নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষের মাত্রাও কমেছে। তবে সারা দেশে ১১১ ইউনিটের মধ্যে শতাধিক কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও নতুন কমিটির বিষয়েও কোনো অগ্রগতি নেই। কেন্দ্রীয় কমিটিতে অর্ধশতাধিক বিতর্কিত থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের দায়িত্বও বণ্টন করা হয়নি।

কেন্দ্রীয় কমিটির বিতর্কিতরা বাদ পড়ছেন : ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে অর্ধশতাধিক বিতর্কিতকে স্থান দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ছাত্রদলের সাবেক নেতা, বয়স উত্তীর্ণ, বিবাহিত ও মাদক সম্পৃক্ততার সঙ্গে জড়িতদের পদ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ওই সময় শোভন-রাব্বানী ১৯ জনের পদ শূন্য করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিলেও কারা কারা বাদ পড়লেন, সে বিষয়ে জানানো হয়নি।

দুই মাস আগে দায়িত্ব নেওয়ার পর সংগঠনকে বিতর্কমুক্ত করতে উদ্যোগ নেন জয়-লেখক। স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে বিতর্কিতদের বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। চলতি সপ্তাহ কিংবা পরের সপ্তাহে বিতর্কিতদের বাদ দিতে পারে সংগঠনটি।

শূন্যপদে যুক্ত হবেন পদবঞ্চিতরা : বিতর্কিতদের স্থান দেওয়া হলেও যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও ছাত্রলীগের একটি অংশকে পদবঞ্চিত করেন শোভন-রাব্বানী—এমন অভিযোগ উঠেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় হল শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় কমিটিতে নেতৃত্ব দেওয়া যোগ্যদের কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করা হয়। এ নিয়ে পদবঞ্চিতরা বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও অনশন কর্মসূচিও পালন করেছেন। জয়-লেখক যোগ্যদের বাছাই করে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

আন্দোলনকারী সবাইকে যুক্ত করতে না পারলেও যোগ্যতা বিবেচনায় পদায়ন করা হবে বলে সংগঠন সূত্রে জানা গেছে।

ডিসেম্বরে কেন্দ্রীয় নেতাদের পদ বণ্টন : কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের পর জেলা ইউনিটকে শক্তিশালী ও দেখভালে কেন্দ্রীয় নেতাদের দায়িত্ব ভাগ করা হয়। ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতাদের দায়িত্ব বণ্টন করা হয়নি। ১০৮টির বেশি জেলা কমিটির মেয়াদ শেষ, সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করতে হবে। আগামী ডিসেম্বর মাসে এ দায়িত্ব বণ্টন করে কেন্দ্রীয় নেতারা জেলায় জেলায় সাংগঠনিক সফরে যাবেন বলে জানা গেছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস - dainik shiksha কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় - dainik shiksha ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব - dainik shiksha একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035028457641602