আন্দোলন না হওয়ায় বিএনপি নেতাদের চোখ-মুখ শুকিয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আজ শনিবার বিকেলে নোয়াখালী জিলা স্কুল মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজকে বিএনপি নেতাদের চোখ-মুখ শুকিয়ে গেছে। আন্দোলন হয় না। এই বছর না, ওই বছর আন্দোলন হবে কোন বছর? এই বছর রোজার ঈদের পরে কোরবানির ঈদ। আর কোরবানির ঈদের পরে সামনে পরীক্ষা। পরীক্ষার পর। এভাবে দেখতে দেখতে ১৪ বছরেও তাদের আন্দোলন হলো না।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আজকে তারেক রহমান বিএনপির নেতা-কর্মীদের টাকার দম্ভ দেখাচ্ছে। টাকা হলে নাকি আন্দোলন করতে পারবে। কত টাকা? এত টাকা এল কোত্থেকে? শেখ হাসিনা ৪০ কোটি টাকা উদ্ধার করেছেন। তারেক রহমানের অর্থ পাচারের কথা সারা দুনিয়ার মানুষ জানে। কোথা থেকে এল এত বাড়ি, এত গাড়ি। সব টাকা চুরির টাকা, পাচারের টাকা, দুর্নীতির টাকা, হাওয়া ভবনের টাকা। এই অপশক্তিকে রুখতে হবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর কন্যা। সাড়ে ১৪ বছরের প্রধানমন্ত্রী দিনে মাত্র তিন ঘণ্টা ঘুমান। বাকি ২১ ঘণ্টা তিনি দেশ নিয়ে ভাবেন। মানুষ নিয়ে ভাবেন। বাংলার যুবসমাজ, বাংলার তরুণসমাজকে নিয়ে কীভাবে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়বেন, সেটা ভাবেন। আজকে দ্রব্যমূল্য বেড়ে গেছে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা এসব নিয়ে ভাবতে ভাবতে ঘুমাতে পারেন না। কীভাবে জিনিসপত্রের দাম, মূল্যস্ফীতি কমানো যায়, সেটা নিয়ে ভাবেন তিনি।’ তিনি আরও বলেন, সততার জন্য, সাহসের জন্য, দক্ষতার জন্য, ডিপ্লোমেসির জন্য শেখ হাসিনা সারা পৃথিবীতে আজ প্রশংসিত। বিদেশিরাও আজ শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে ভিসা নীতি দিয়ে ভয় দেখিয়েছে, নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ভয় দেখিয়েছে। শেখ হাসিনা বলেছেন, “আমার দেশ। আমি শেখ মুজিবের কন্যা, বঙ্গবন্ধুর কন্যা। আমাকে ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। যত ভয় আসুক, হুমকি আসুক মাথা নত করব না।”
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নোয়াখালীর মানুষকে বিএনপির লোকেরা খুব বোঝাতে চেয়েছে, বিএনপির ঘাঁটি বানিয়েছে। এই নোয়াখালীর সহজ-সরল মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার দিন শেষ। আজকে নোয়াখালীর মানুষ, নোয়াখালীর তরুণেরা শেখ হাসিনার সঙ্গে আছে। আজকে নোয়াখালীর তরুণেরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।’ তিনি যোগ করেন, ‘নির্বাচনের আর চার মাস বাকি। আমি আজ দুপুরে এলাম। দিকে দিকে শুনি, নৌকার জয়ের ধ্বনি। খেলা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে, খেলা হবে লুটপাটের বিরুদ্ধে। খেলা হবে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে। খেলা হবে হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে। ফখরুল সাহেব যত মিথ্যা বলে যাচ্ছেন, এই মিথ্যাই আপনাদের পতন ঘটাবে।’
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনারা ভালো আচরণ করবেন। ভালো ব্যবহার করবেন। ভালো উন্নয়ন, ভালো আচরণ—এই দুইটা মিলে আমরা বিজয়ী হব। আজকে বাংলাদেশের সব সৃজনশীল মানুষ, সব মুক্তিযোদ্ধা, সব ভালো মানুষ সবাই এক মিছিলে শামিল হবে। সেই মিছিল হবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। খেলা হবে। ফাইনাল খেলা। এখন থেকে তৈরি হয়ে যান।’
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ। জেলার সংসদ সদস্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন মোরশেদ আলম, এইচ এম ইব্রাহিম, আয়েশা ফেরদাউস, মামুনুর রশিদ কিরণ।