জাতিরাষ্ট্রের মানসপট তৈরিতে মনোবিজ্ঞানের ভূমিকা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘একটি জাতিরাষ্ট্র গঠনের যে মনস্তত্ব সেটি তৈরির ক্ষেত্রে মনোবিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি। একজন ব্যক্তিমানুষের মানস গঠনের চেয়েও সামষ্টিক মানুষের মানসপট গঠনে মনোবিজ্ঞানের ভূমিকা অনন্য’।
বুধবার (৩০জুন) জুম অ্যাপের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্কুল সাইকোলজি সোসাইটি (বিএসপিএস) আয়োজিত বিএসপিএস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য।
উপাচার্য আরও বলেন, ‘বিষয়টি শুধু মানুষের মনোবৈজ্ঞানিক জায়গায় সীমাবদ্ধ নয়, সামষ্টিক অর্থে সমাজ, রাষ্ট্র গঠনে এর ভূমিকা অপরিসীম। আমাদের পবিত্র সংবিধানের মূলনীতির জায়গাগুলো তৈরির মাধ্যমে যে ভিত্তি তৈরি হয়েছে, জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টি ও গোটা মানসপট তৈরির ক্ষেত্রে মনোবিজ্ঞান অনবদ্য ভূমিকা পালন করে। একজন রাজনীতিক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, যিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। তিনি চেয়েছিলেন হাজার বছরের বঞ্চনা থেকে বাঙালিকে মুক্ত করতে। চেয়েছেন শোষিতের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, বঞ্চনাহীন, শোষণহীন সমাজ তৈরি করতে: এমন একটি নতুন সমাজ ও রাষ্ট্র তৈরির যে মানসপট, সেটি তিনি কোথায় খুঁজে পেলেন? তিনি তার দেশের সব মানুষের মনোবৈজ্ঞানিক জায়গাটি এবং বাঙালির চাওয়ার জায়গাটি যথার্থভাবে অনুধাবন করেই সবাইকে সম্মিলিত করে বাঙালি জাতিরাষ্ট্র গঠন করেন। এই জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টির মানসপট গঠনে একজন রাজনৈতিক নেতা অনন্য কারিগরের মতো ভূমিকা পালন করেছেন। এখানেই মনোবিজ্ঞানের মর্মার্থ নিহিত রয়েছে।’
আত্মহনন ও সমাজবিচ্যুতি প্রতিরোধেও মনোবিজ্ঞানের গুরুত্ব অপরিসীম উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, ‘মনোবিজ্ঞানের জায়গাটি যদিঅন্তর্ভুক্তিমূলক জায়গায় আনা যায় তাহলে আমি মনে করি জাতীয়তাবাদের শক্তিও বাড়ে। আর যখনই একজন মানুষের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক মনোভাব তৈরি হয় তখন তার আত্মহত্যা করার কথা নয়, বিচ্যুত হওয়ার কথা নয়। এ কারণেই অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গণতান্ত্রিক হওয়া আবশ্যক।’
বাংলাদেশ স্কুল সাইকোলজি সোসাইটির (বিএসপিএস) সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ কামাল উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সোসাইটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক পলিসি রিসার্স সেন্টারের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আকবর উদ্দিন আহমদ, প্রফেসর ড. আব্দুল খালেক।