বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দীন বলেছেন, জাতি গঠনে শিক্ষকরাই হচ্ছেন প্রধান নিয়ামক শক্তি। শিক্ষকদের হাতেই দক্ষ জনশক্তি তৈরি হয়। আর সেই জনশক্তি একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে মুখ্য ভুমিকা পালন করে।
গতকাল মঙ্গলবার বাগেরহাটের ফকিরহাটের শুভদিয়ায় শেখ হেলাল উদ্দীন সরকারি কলেজের আয়োজনে নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে শিক্ষকদের ভূমিকা ও করণীয় বিষয়ে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি আরেো বলেন, বঙ্গবন্ধু আজীবন চেয়েছেন এ দেশের সাধারণ মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন। তিনি সে লক্ষ্যেই স্বাধীনতার পর প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করেন। শিক্ষকদের যথাযথ মর্যাদা দেন। আওয়ামী লীগ সরকার ‘৯৬ খ্রিষ্টাব্দে ক্ষমতায় আসার পর গৃহীত নানামুখী কর্মকাণ্ডে দেশের শিক্ষা সেক্টরে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা করে। বিএনপি সরকারের আমলে দেশের শিক্ষাখাতে বাজেটে বরাদ্দ ছিলো ১১ হাজার কোটি টাকা। আর বর্তমান সরকারের আমলে এ খাতে বাজেট বরাদ্দ অনেকে বেড়েছে। বিএনপির আমলে শিক্ষিতের হার ছিলো মাত্র ৪৫ শতাংশ। বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় তা ৬৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। বর্তমান সরকারের লক্ষ্য এটা শতভাগে উন্নীত করা।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করছেন। দেশ আজ অনেক এগিয়েছে। মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের যোগাযোগ, বিদ্যুৎখাতে যে উন্নয়ন হয়েছে তা অভাবনীয়।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি সরকারের আমলে মোংলা বন্দর নিষ্ক্রিয় করে ফেলা হয়েছিলো, বন্দর অচল হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু ‘৯৬ এর নির্বাচনের পর প্রথম কেবিনেট বৈঠকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বন্দর সচলে পদক্ষেপ নেন এবং দেশের আমদানিকৃত খাদ্যশস্যের ৫০ ভাগ এ বন্দরে খালাস করার নির্দেশনা দেন। ফলে মোংলা বন্দর আবার সচল হয়। দক্ষিণাঞ্চলে পদ্মা সেতুর কারণে যে দৃশ্যমান ব্যাপক উন্নয়ন সূচিত হয়েছে তাতে সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হচ্ছে। কিন্তু বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া ও তার দল এই সেতু নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করেছে। তিনি বলেন ষড়যন্ত্র করে লাভ নেই। কারণ, দেশের মানুষ উন্নয়ন চায়। তারা বুঝে গেছে কাদের দিয়ে দেশের উন্নয়ন হবে।
তিনি বলেন, গাজায় ইসরাইলী বাহিনীর নৃশংস আক্রমণে ফিলিস্তিনী ভাতৃপ্রতিম মুসলিম ভাইদের কি অবস্থা। সেখানে গণহত্যা চলছে। অথচ বিএনপি মুখ বন্ধ করে আছে। কাদের চাপে, এর রহস্য কি? সেটাও জনগণ জানে। বর্তমান সরকার কোনো বিদেশি শক্তিকে ভয় করে না। চার মূল নীতিতে আমরা বিশ্বাসী। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনায় দেশ এগিয়ে যাবে।
শেখ হেলাল উদ্দীন সরকারি কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন ফকিরহাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা স্বপন দাশ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন, পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চলের উপ-পরিচালক মো. রুহুল আমীন, ঢাকা অঞ্চলের উপ-পরিচালক এ এস এম আব্দুল খালেক, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মোসলেম উদ্দীন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শেখ হেলাল উদ্দীন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ বটু গোপাল দাস।
নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে মতবিনিময় সভায় মূখ্য আলোচক ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। এছাড়া আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. আহসান হাবীব, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অমিত রায় চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর শেখ হারুনর রশীদ। সভায় আলোচকরা নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে শিক্ষকদের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেন।