‘টাকা নিয়েছি তাতে কী হয়েছে,’ বললেন প্রধান শিক্ষক

রাজশাহী প্রতিনিধি |

‘টাকা লেনদেন হয়েছে তবে ১৫ লাখ না, কম হয়েছে। আমি এর বেশি বলতে পারবো না। আর নিয়োগে টাকা নিয়েছি তাতে কী হয়েছে।’ রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার ‘যুগিশো উচ্চ বিদ্যালয়ে’ টাকার বিনিময়ে জামায়াতের নেতা হাবিবকে অফিস সহকারী পদে নিয়োগ বিষয়ে জানতে চাইলে এমন কথা বলেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আবদুল খালেক।

অভিযোগ উঠেছে, স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি সুজাউদ্দিন সুজা ও প্রধান শিক্ষক মিলে ১৫ লাখ টাকার নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। স্কুল কমিটিকে না জানিয়ে গোপনে যোগ্য প্রার্থীদের বাদ দিয়ে তড়িঘড়ি করে মাত্র ২০ মিনিটে নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে। গত শুক্রবার (৫ জুলাই) সকালে এ নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, গত ২৫ এপ্রিল যুগিশো উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারি এন্তাজ আলী দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন। যার ফলে প্রতিষ্ঠানটির অফিস সহকারি পদটি শূন্য হয়। ইতোমধ্যে প্রধান শিক্ষক আবদুল খালেক স্থানীয় জামায়াত নেতা সিদ্দিকের সঙ্গে এ নিয়ে কথা হয়। সিদ্দিক তার ছোট ভাই জামায়াতের নেতা হাবিবের নিয়োগের জন্য ১৫ লাখ টাকার চুক্তি করেন। প্রধান শিক্ষক আবদুল খালেক হাবিবের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নেন।

এরপর প্রধান শিক্ষক গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। কিন্তু স্থানীয়ভাবে নিয়োগের বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সাত্তার তার ছেলে সোহেলের জন্য যোগাযোগ করেন। সোহেল ওই পদে আবেদন করেন। কিন্তু তার আবেদন যাচাই বাছাই না করেই প্রধান শিক্ষক বাতিল বলে জানিয়ে দেন বলে অভিযোগ ওঠে।

এদিকে, প্রধান শিক্ষক গোপনে হাবিবকে নিয়োগ দেয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। প্রধান শিক্ষক কৌশলে হাবিবের আবেদন জমা নেন। এমনকি অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত তার সহযোগী ও নিজের চারজন ছেলেকে দিয়ে আবেদন করান।
 
এদিকে ওই পদের জন্য আবেদন করেন স্থানীয় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, লিখিত পরীক্ষা দিতে গিয়ে দেখি প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি জামায়াতের নেতা হাবিবকে দিয়ে পরীক্ষার প্রশ্ন পড়াচ্ছে। এ সময় আমাকে ভিতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।

তিনি আরও জানান, এ সময় প্রধান শিক্ষক আবদুল খালেক তাকে পরীক্ষার সময় হলে আসতে বলেন। এরমধ্যে হাবিবের লিখিত পরীক্ষার খাতায় পরীক্ষা শুরুর আগেই লেখা হয়ে যায়। পরে লোক দেখানো পরীক্ষা নিয়ে ৫ মিনিটেই ফলাফল জানিয়ে দেয়া হয় বলে জানান ছাত্রলীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, এমন নিয়োগ বোর্ড কখনো দেখিনি। যা ২০ মিনিটেই নিয়োগ সম্পন্ন হয়।

স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুস সাত্তার বলেন, প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি গোপনে টাকার বিনিময়ে জামায়াতের নেতা হাবিবকে নিয়োগ দিয়েছে। এ নিয়োগ বাতিলের দাবি করেন তিনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? - dainik shiksha শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ - dainik shiksha অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে - dainik shiksha সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025248527526855