ব্যবসায়ীদের সন্দেহ উড়িয়ে দিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, নিউ সুপার মার্কেটের অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে সেখানকার ফুটব্রিজ ভেঙে ফেলার কোনো সম্পর্ক নেই।
শনিবার নিউ সুপার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের পর ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছেরের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা বলা হয়।
অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে ডিএসসিসির কাজকে সম্পর্কিত করার ‘অপচেষ্টা’ থেকে বিরত থাকার আহ্বানও জানান হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
ঢাকা নিউ মার্কেট লাগোয়া তিন তলা ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটের দোতলায় শনিবার সকালে আগুনের সূত্রপাত হওয়ার কথা জানায় ফায়ার সার্ভিস।
ওই মার্কেটের সামনে যে ফুটব্রিজ ছিল, তা দিয়ে দোতলায়ও সরাসরি যাওয়া যেত। পুরনো ওই ফুটব্রিজটি ভাঙার কাজ করছিল ডিএসসিসি, তার মধ্যেই অগ্নিকাণ্ড ঘটল মার্কেটে।
আগুন লাগার পর মার্কেটের ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ ওই ফুটব্রিজ ভাঙার সঙ্গে আগুনের সম্পর্ক থাকার সন্দেহ প্রকাশ করেন, যা তারা ফায়ার সার্ভিসকেও বলেন।
আবু ইউসুফ নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ঈদের এই সময়ে ফুটব্রিজ ভাঙার বিরোধতা করেছিলেন।
মনসুর আলী নামে এক দোকানকর্মী বলেন, আমরা বারবার বলছি, যা করার ঈদের পরে করেন। কিন্তু তারা শোনেনি।
ডিএসসিসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগুন লাগাকে কেন্দ্র করে কিছু অসাধু ব্যক্তি/স্বার্থান্বেষী মহল নিউ মার্কেটের সঙ্গে সংযুক্ত পথচারী পারাপার সেতুর (ফুটব্রিজ) সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণে সিটি করপোরেশনেরে গৃহীত উদ্যোগকে সম্পর্কিত করার অপচেষ্টা করছেন।
ফলে গণমাধ্যমে ‘বিভ্রান্তিকর ও অনাকাঙ্ক্ষিত’ সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে, যা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা নিউ মার্কেটের সঙ্গে সংযুক্ত পথচারী পারাপার সেতুটি (ফুটব্রিজ) গত বছরই ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে ফলক ঝুলিয়ে দেওয়া হয় এবং সেতুটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তীতে সেটি (নোটিশ) সরিয়ে লোকজন চলাচল করছিল, যা অত্যন্ত অনিরাপদ।
এমতাবস্থায় দাপ্তরিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে গত ১২ এপ্রিলে সেতুটির সঙ্গে মার্কেটের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ১৫ এপ্রিল রাত ২টা হতে ভোর ৫টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত সেতুটির সঙ্গে মার্কেটের দ্বিতীয় তলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় এবং আজকের মতো কার্যক্রম শেষ করে।
সংবাদ মাধ্যমের বরাতে ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে আগুন লাগার কথা জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, “সুতরাং অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাতের সময় হতে আধা ঘণ্টারও বেশি আগে সেতুর সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ কার্যক্রমের দৃশ্যত ও অদৃশ্য কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা নেই।
তারপরও কিছু স্বার্থান্বেষী মহল সেতু অপসারণের সঙ্গে আগুন লাগাকে একসূত্রে গাঁথার অপচেষ্টায় লিপ্ত। এই অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের সেতু বিচ্ছিন্নকরণের ন্যূনতম কোনো সংযোগ নেই।
ফুটব্রিজ যেখানে ভাঙার কাজ চলছে, সেখান থেকে ৪০০ ফুটেরও বেশি দূরে আগুন লেগেছে বলে দাবি করা হয় ডিএসসিসির বিজ্ঞপ্তিতে।
ফুটব্রিজ ভাঙার কাছে কোনো ‘গ্যাস কাটার’ ব্যবহার করা হয়নি দাবি করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হুইল এক্সক্যাভেটর ব্যবহার করে সেতু বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল। আর বিচ্ছিন্নকরণ স্থানে করপোরেশনের কর্মকর্তা, ডিপিডিসির কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন, যাতে করে নিরাপদে এই কার্যক্রমটি সম্পন্ন করা যায়। এছাড়াও সেতুর সঙ্গে মার্কেটের সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণের আগে থেকেই সেতুর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল।