রবীন্দ্রসংগীতের ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’ পদক পাচ্ছেন বরেণ্য রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।
গতকাল ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক প্রেস নোটে এ বছর ‘পদ্ম’ সম্মাননার জন্য মনোনীতদের নাম প্রকাশ করেছে।
ভারত সরকার প্রতি বছর ‘পদ্মবিভূষণ’, ‘পদ্মভূষণ’ এবং ‘পদ্মশ্রী’ নামে তিনটি বিভাগে মর্যাদাপূর্ণ পদ্ম পুরস্কার প্রদান করে। এ বছর দেশটির রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ১৩২ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে ‘পদ্ম’ সম্মাননার জন্য মনোনীত করেছেন। সাধারণত মার্চ বা এপ্রিলে রাষ্ট্রপতি ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়।
বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা এর আগে ২০১৬ বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পদকসহ অনেক পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে রংপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। চাচা আবদুল আলীর কাছ থেকে গানের প্রাথমিক পাঠ গ্রহণ করেন। পরবর্তী সময়ে দেশের বিশিষ্ট দুই সংগীতজ্ঞ সনজিদা খাতুন এবং আতিকুল হকের তত্ত্বাবধানে ঢাকার ছায়ানট এবং বুলবুল একাডেমি অব ফাইন আর্টস (বাফা)-এ সংগীত চর্চা অব্যাহত রাখেন। এ ছাড়াও তিনি শান্তি নিকেতন থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
সেখানে তিনি বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীলিমা সেন, শৈলজারঞ্জন মজুমদার, শান্তিদেব ঘোষ, গোরা সর্বাধিকারী, মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আশেষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে শিক্ষা নেন। এ ছাড়াও বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী কণিকা ব্যানার্জির কাছেও দীক্ষা নেন।
সংগীত শিক্ষার প্রসারে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে ‘সুরের ধারা’ নামে একটি সংগীত বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্র সংগীতের গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। বন্যা বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ও প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। এর আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে সরকার তার ৫ হাজার গান সংরক্ষণ করে একটি ওয়েবসাইট চালু করেছে। প্রসঙ্গত, বন্যার আগেও বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি ভারতের পদ্ম পুরস্কার পেয়েছেন। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে সাবেক কূটনীতিক মোয়াজ্জেম আলীর সঙ্গে ‘পদ্মশ্রী’ পান বাংলাদেশি প্রত্নতত্ত্ববিদ এনামুল হক। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে ‘পদ্মশ্রী’ খেতাব পান রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী, লেখক, গবেষক, সংগঠক ও শিক্ষক সনজীদা খাতুন এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীরপ্রতীক। ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে পদ্মভূষণ এবং তার আগের বছর সমাজকর্মী ঝর্ণাধারা চৌধুরীকে পদ্মশ্রী খেতাবে ভূষিত করে ভারত সরকার।