‘বিচারকের সঙ্গে খারাপ আচরণের বিচার আদালত করবে’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি |

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারকের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের যে অভিযোগ উঠেছে তার বিচার আদালতে হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

শুক্রবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মন্ত্রী।

বিচারককে গালিগালাজের ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিন আইনজীবীকে হাইকোর্টে তলব করা প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন। প্রধান বিচারপতির কাছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ এবং অন্যান্য বিচারকরা অভিযোগ করেছেন। একটি ভিডিও পাঠিয়েছেন।

   

একজন বিচারকের প্রতি তাদের আচরণ খারাপ ছিল, সেটা আমি শুনেছি। সেটির পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। এখন এটি বিচারাধীন ব্যপার। আদালত বিচার করবেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন আইনজীবী নেতা দলবল নিয়ে গিয়ে এজলাসে বসা একজন বিচারককে অপদস্থ করা এবং তাকে গালাগালের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

এ ঘটনার পর বৃহস্পতিবার জেলা আইনজীবী সমিতির তিন সদস্যকে হাই কোর্ট সশরীরে তলব করেছে। এ নিয়ে এখন জেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

১৭ জানুয়ারি হাই কোর্টে তলব পাওয়া তিন আইনজীবী হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. তানভীর ভূঁইয়া, সমিতির সম্পাদক (প্রশাসন) মো. আক্কাস আলী এবং আইনজীবী জুবায়ের ইসলাম।

আদালত সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ১ ডিসেম্বর ছিলো জেলা জজ আদালতের বছরের শেষ কার্যদিবস। এদিন একটি মামলা দায়েরকে কেন্দ্র করে আইনজীবী সমিতির নেতাসহ একাধিক আইনজীবীর সঙ্গে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের কথা কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে ঘটনার সূত্রপাত হয়।

তিন মিনিট ১৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুক এজলাসে ছিলেন। তিনি মামলা পরিচালনা করছিলেন। এ সময় কয়েকজন আইনজীবী এজলাসের সামনে গিয়ে দাঁড়ান। তাদের মধ্যে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানভীর ভূঁইয়া, সম্পাদক (প্রশাসন) আক্কাস আলী ও আইনজীবী জুবায়ের ইসলাম ছিলেন। এ সময় এজলাস ঘিরে পুলিশ সদস্যরাও ছিলেন।

একজন আইনজীবী আদালত বর্জনের কথা বলে বিচারককে এজলাস থেকে নেমে যেতে বলেন। কথাবার্তার একপর্যায়ে আইনজীবীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এ সময় তারা বিচারকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ এবং উচ্চস্বরে গলাগালি করেন।

এ সময় জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানভীর ভূঁইয়াকে চড়া গলায়, আঙ্গুল উঁচিয়ে, ধমকের সুরে বিচারককে উদ্দেশ্য করে ‘নাম, নাম’ বলতেও শোনা যায়।

তানভীর ভূঁইয়া বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।

বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের জামিন স্থগিত হওয়া প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, “সরকার আদালতে কখনোই হস্তক্ষেপ করে না। আদালতে মামলা চলছে, আদালত স্বাধীনভাবে তাদের সিদ্ধান্ত দিচ্ছে।

“অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছ থেকে শুনেছি- হাইকোর্টে যে জামিন দেওয়া হয়েছিল সেখানে কিছু আইনের ব্যত্যয় ঘটেছে। সেজন্য তিনি আপিল বিভাগে গেছেন।”

ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের জামিনের আবেদন বিচারিক আদালতে বারবার নাকচ হয়েছে। পরে হাই কোর্ট থেকে তারা জামিন পান। তবে সেই জামিন আটকাতে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করেছে আপিল বিভাগে, তার শুনানি হবে রোববার।

আইনমন্ত্রীর সঙ্গে আইন সচিব গোলাম সারওয়ার, জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম ও আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল উপস্থিত ছিলেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষক লাঞ্ছিত ও পদত্যাগে বাধ্য করার প্রতিবাদ, কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি বিটিএর - dainik shiksha শিক্ষক লাঞ্ছিত ও পদত্যাগে বাধ্য করার প্রতিবাদ, কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি বিটিএর মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি - dainik shiksha মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি আন্দোলনে অসুস্থ ১১ নার্সিং শিক্ষার্থী - dainik shiksha আন্দোলনে অসুস্থ ১১ নার্সিং শিক্ষার্থী প্রধান শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই - dainik shiksha প্রধান শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই জলবায়ু পরিবর্তন মারাত্মক প্রভাব ফেলছে শিক্ষা খাতে - dainik shiksha জলবায়ু পরিবর্তন মারাত্মক প্রভাব ফেলছে শিক্ষা খাতে বয়স ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগে চাকরি প্রত্যাশীদের মহাসমাবেশ - dainik shiksha বয়স ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগে চাকরি প্রত্যাশীদের মহাসমাবেশ এমপিওভুক্তি: দীপু মনির ভাই টিপুচক্রের শতকোটি টাকার বাণিজ্য - dainik shiksha এমপিওভুক্তি: দীপু মনির ভাই টিপুচক্রের শতকোটি টাকার বাণিজ্য অধ্যক্ষকে পদত্যাগে বাধ্য, আওয়ামী লীগ নেতাকে স্থলাভিষিক্ত করার চেষ্টা - dainik shiksha অধ্যক্ষকে পদত্যাগে বাধ্য, আওয়ামী লীগ নেতাকে স্থলাভিষিক্ত করার চেষ্টা ভুয়া নিয়োগে এমপিও: এক মাদরাসার ১৫ শিক্ষকের সনদ যাচাই করবে অধিদপ্তর - dainik shiksha ভুয়া নিয়োগে এমপিও: এক মাদরাসার ১৫ শিক্ষকের সনদ যাচাই করবে অধিদপ্তর বার্ষিক পরীক্ষার উদ্দীপকসহ ও উদ্দীপক ছাড়া প্রশ্ন - dainik shiksha বার্ষিক পরীক্ষার উদ্দীপকসহ ও উদ্দীপক ছাড়া প্রশ্ন একসঙ্গে তিন প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন তুলতেন মাদরাসা কর্মচারী - dainik shiksha একসঙ্গে তিন প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন তুলতেন মাদরাসা কর্মচারী কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029590129852295