‘বৃদ্ধকে হাতকড়া ইউএনওর পেশাগত অসদাচরণ’

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

ফৌজদারি অপরাধে জড়িত থাকার ইতিহাস না থাকলেও গত বুধবার দুপুরে বগুড়ায় ৭৪ বছর বয়সী কৃষক রেজাউল করিমের হাতে পরানো হয় হাতকড়া। তিনি, তাঁর ছেলে মো. রিপু ও ছোট ভাই শাহিদুল ইসলামকে (৬০) ছয় ঘণ্টা বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার কার্যালয়ে আটকে রেখে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। বগুড়া সদর উপজেলার ইউএনও ফিরোজা পারভীন শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, বিচারিক ক্ষমতাবলেই তিনি হাতকড়া পরিয়েছেন।

 

ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী, আমলযোগ্য অপরাধে জড়িত যেকোনো ব্যক্তিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আদালতের পরোয়ানা ছাড়াই আটক করতে পারেন এবং আটক ব্যক্তিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে সোপর্দ করতে হয়।

কোনো কোনো ক্ষেত্রে হাতকড়া পরানো যাবে, সে ব্যাপারে বাংলাদেশ পুলিশ প্রবিধানের ৩৩০ ধারা বলছে, আটক কোনো বন্দীকে পালানো থেকে বিরত রাখার জন্য যা প্রয়োজন, তার চেয়ে বেশি কড়াকড়ি করা উচিত নয়। হাতকড়া বা দড়ির ব্যবহার প্রায় ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় এবং অমর্যাদাকর। জামিনযোগ্য মামলার বন্দীর ক্ষেত্রে হাতকড়া পরানো যাবে না।

বগুড়া সদর উপজেলার ইউএনও ফিরোজা পারভীনের ভাষ্য অনুযায়ী, রেজাউল করিমেরা সরকারি কাজে বাধা দিয়েছেন। বাংলাদেশের দণ্ডবিধির ১৮৬ ধারায় সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগ আনা হয়। অর্থাৎ সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে কাউকে গ্রেফতারে আদালতের পরোয়ানা দরকার হয়। এই অপরাধ জামিনযোগ্য।

এ প্রসঙ্গে, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না সাংবাদিকদের বলেন, বৃদ্ধ রেজাউল করিম কি চোর, না ডাকাত? তার কি পূর্বে অপরাধে জড়িয়ে পড়ার কোনো রেকর্ড আছে? যদি এর কোনোটিই না থাকে, তাহলে কেনো রেজাউল করিমের হাতে হাতকড়া পরিয়ে আটক করে ছয় ঘণ্টা ঘোরানো হলো? তাদের সম্মানহানির ক্ষতিপূরণ কে দেবে? সংবিধানের ৩৫(৫) অনুচ্ছেদ বলেছে, কোনো ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেয়া যাবে না, নিষ্ঠুর, অমানুষিক বা লাঞ্ছনাকর দণ্ড দেয়া যাবে না।

সাবেক জেলা জজ এস এম রেজাউল করিম সাংবাদিকদের বলেন, দুর্ধর্ষ চোর, ডাকাত, খুনি, ধর্ষকদের হাতে হাতকড়া পরানো যায়, যাতে তারা পালিয়ে যেতে না পারে। ৭৪ বছর বয়সী একজন বৃদ্ধ কৃষকের হাতে হাতকড়া পরানো আইনসিদ্ধ নয়। এটা পুরোপুরি পেশাগত অসদাচরণ।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
চলতি মাসে টানা ৪ দিনের ছুটি মিলবে যেভাবে - dainik shiksha চলতি মাসে টানা ৪ দিনের ছুটি মিলবে যেভাবে সিইসিসহ পাঁচ কমিশনারের পদত্যাগ - dainik shiksha সিইসিসহ পাঁচ কমিশনারের পদত্যাগ রাষ্ট্রপতি যেকোনো সময় পদত্যাগ করতে পারেন - dainik shiksha রাষ্ট্রপতি যেকোনো সময় পদত্যাগ করতে পারেন বাতিল কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা আরও একবছর ভুগবেন কেন? - dainik shiksha বাতিল কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা আরও একবছর ভুগবেন কেন? ডিআইএতে টাকার খেলা, অভিযুক্তরাই স্কুল অডিটে - dainik shiksha ডিআইএতে টাকার খেলা, অভিযুক্তরাই স্কুল অডিটে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নতুন অ্যাডহক কমিটি হবে - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নতুন অ্যাডহক কমিটি হবে প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি - dainik shiksha প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027999877929688