রাজবাড়ী সদর উপজেলার ‘বেলগাছি বিকল্প কলেজ’ এমপিওভুক্তির দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা। প্রতিষ্ঠার দীর্ঘদিনেও এমপিওভুক্ত না হওয়ায় আর্থিক সংকটে পড়েছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-কর্মচারীরা। একইসঙ্গে বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। এমন পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে কলেজটি এমপিভুক্ত করে সংকট নিরসনের দাবি জানিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, খানগঞ্জ ইউনিয়নের হরিহরপুর মৌজায় ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। শিক্ষায় পিছিয়ে থাকা স্থানীয় জনগণের ইচ্ছায় ও প্রচেষ্টায় সম্পূর্ণ বেসরকারি উদ্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে।
প্রথমে একাদশে বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য এই তিন বিভাগ নিয়ে একাডেমিক কার্যক্রম ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে শুরু হয়। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে দ্রুততম সময়ে কলেজটিকে ডিগ্রি ও পরে স্নাতক (সম্মান) পর্যায়ে উন্নীত করা হয়।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে এইচএসসিতে ২০১০-২০১১ শিক্ষা বছরে পাস করেন ৬০ দশমিক ৬৪ শতাংশ পরীক্ষার্থী। এরপর ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে ৭০০ পরীক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষা দেন, যার মধ্যে ৬ জন জিপিএ-৫সহ ৫০০ জন পাস করেন। এই কলেজের উদ্যোক্তাদের মিশন-ভিশনের মধ্যে অন্যতম হলো পল্লী অঞ্চলের পিছিয়ে থাকা ও অবহেলিত অসচ্ছল মেয়েদের উচ্চশিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করা।
কলেজের মূল উদ্যোক্তাদের মধ্যে আছেন বেলগাছির কৃতি সন্তান ও বিদেশি সংবাদ সংস্থা এএফপি’র সাবেক ব্যুরো চিফ সাংবাদিক গোলাম তাহাবুর। এ কলেজ ছাড়াও তার উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে কলেজের দক্ষিণে মেয়েদের শিক্ষার প্রসারে এক একর জমির ওপর ‘বেলগাছি বলিকা উচ্চ বিদ্যালয়’ নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়।
গালর্স স্কুলটি গ্রামের মেয়েদের শিক্ষার প্রসারে তাদের প্রথম উদ্যোগের একযুগ পর দ্বিতীয় উদ্যোগ হিসেবে ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই উদ্যোগে এগিয়ে আসেন এলাকার আরেক কৃতি সন্তান ইঞ্জিনিয়ার এম এ সাত্তার।
কলেজটি ঢাকা বোর্ড থেকে ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসা শিক্ষা শাখায় পাঠদানের অনুমতি পায় এবং ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করে। পাকা রাস্তার পাশে বেলগাছি রেল স্টেশনের কাছে মনোরম পরিবেশে ১ একর জমির ওপর আধুনিক অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়। শিক্ষক ও গভর্নিংবডির দক্ষ ব্যবস্থাপনায় কলেজের শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন বাড়তে থাকে। প্রতিবছরই বোর্ডে রেজাল্ট ভালো হতে থাকে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, কলেজটি গত ১৫-১৬ বছর ধরে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হবার পরও এমপিওভুক্ত হয়নি। তাই বর্তমানে আর্থিক দুরাবস্থায় রয়েছেন কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা। কলেজটি এমপিওভুক্ত না করে অন্যায়ভাবে বঞ্চিত করা হয়েছে।
এ অবস্থায় দ্রুত এমপিওভুক্তির দাবি জানিয়েছেন কলেজের সঙ্গে জড়িতরা।