শিক্ষার সঙ্গে চাকরির সম্পর্ক করে ফেলা গতানুগতিক চিন্তা বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
তিনি বলেন, শিক্ষার সঙ্গে চাকরির কোনো সম্পর্ক নেই। শিক্ষা নেবে একদিকে আর চাকরির বিষয়গুলো আরেকদিক। কিন্তু আমরা শিক্ষার সঙ্গে চাকরির একটা সম্পর্ক করে ফেলেছি। এটা আমাদের গতানুগতিক চিন্তা। এই গতানুগতিক চিন্তা থেকে যদি বেরিয়ে আসতে পারি তাহলে লেখাপড়া করার যখন কথা তখন লেখাপড়া করা, জানার চেষ্টা করতে হবে। জ্ঞানের পরিধি যদি বিস্তার লাভ করে তবেই সে শিখলো।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার অডিটোরিয়মে ঢাকা ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব রায়পুরা (ডুসার) আয়োজিত নবীনবরণ, কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা সারাদেশ থেকে আসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মেলামেশার একটা সুযোগ পায়। নিজেকে চেনার জন্য ঘরের ভেতরে নিজেকে বন্দি করে চেনা যাবে না। মূল্যবোধ যদি ধারণ করা যায় সফলতা হয়তো এমনিতেই আসবে। কিন্তু সফল হতেই হবে, আমাকে পদে যেতে হবে, চাকরি পেতে হবে এটি যেন না আসে। শিক্ষার সঙ্গে চাকরির কোনো সম্পর্ক নাই। এমন বহু উদাহরণ রয়েছে।
তিনি বলেন, জ্ঞান-বিজ্ঞানের শাখা বিস্তৃত। তাই নিজেকে সুশিক্ষিত করো। নিজেকে স্বশিক্ষিত করতে হবে। বিভাগের শিক্ষকরা পড়ালে আর লাইব্রেরিতে কয়েকটি একাডেমিক বই পড়লে এতে করে ভালো ফলাফল করলে শিক্ষিত হবে। এই ধরনের শিক্ষিত মানুষ বাংলাদেশে বহু আছে।
অভিভাবকদের উদ্দেশ্য করে এই শিক্ষাবিদ বলেন, আমরা ছেলেমেয়েদের বলছি ভালো ফলাফল করতে হবে। কিন্তু তাদের যে ভালো মানুষ হতে হবে সেটা আমরা কখনো বলছি না। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার মানুষ হতে হলে প্রথম শর্তই হলো সততা। এদেশে এখন সবচেয়ে বেশি কম সততা। সততা খুঁজে পাওয়া যায় না। আর সবকিছু পাওয়া যায়। মেধার দিক থেকে আমাদের ছেলেমেয়েরা অনেক এগিয়ে গেছে। এখন নাসাতেও আমাদের ছেলেমেয়েরা চাকরি করছে। যার মেধা আছে তাকে আটকে রাখা যাবে না। সে এগিয়ে যাবে, তাকে পিছিয়ে রাখা যাবে না। কিন্তু তার জন্য দরকার সততা, দেশপ্রেম, মূল্যবোধ।
ঢাকা ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব রায়পুরার (ডুসার) সভাপতি নাইমুর রহমান দুর্জয়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রাব্বি খন্দকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন একুশে পদকপ্রাপ্ত ভাষাবিদ অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকার (পূর্ব) কমিশনার মুহাম্মদ জাকির হোসেন, সিগমা বাংলাদেশ অ্যান্ড লর্ড স্কুলের চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।