সংগীতের কিংবদন্তি গায়ক মো. আবদুল জব্বার এর জন্মদিন আজ। তার কন্ঠের ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ গানটি স্বাধীনতা যুদ্ধে দেশবাসীকে অনুপ্রাণিত করেছিলো।
তার গাওয়া ‘তুমি কি দেখেছ কভু জীবনের পরাজয়, ,’জয় বাংলা বাংলার জয়’ গান ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে মার্চ মাস জুড়ে অনুষ্ঠিত বিবিসি বাংলার শ্রোতাদের বিচারে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ২০টি বাংলা গানের তালিকায় স্থান করে নেয়। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত দুটি সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন।
আব্দুল জব্বার ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মেট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি সঙ্গীতের তালিম গ্রহণ করেন ওস্তাদ ওসমান গনি এবং ওস্তাদ লুৎফুল হকের কাছে।
জব্বার ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে তৎকালীন পাকিস্তান বেতারে তালিকাভুক্ত হন। তিনি ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম চলচ্চিত্রের জন্য গান করেন। ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে তিনি বিটিভির নিয়মিত গায়ক হিসেবে পরিচিতি পান। ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে জহির রায়হান পরিচালিত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম রঙিন চলচ্চিত্র ‘সংগমের’ গানে কণ্ঠ দেন। ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে ‘এতটুকু আশা’ ছবিতে সত্য সাহার সুরে তার গাওয়া ‘তুমি কি দেখেছ কভু’ গানটি জনপ্রিয়তা অর্জন করে। একই বছর ঢেউয়ের পর ঢেউ ছবিতে রাজা হোসেন খানের সুরে ‘সুচরিতা যেওনাকো আর কিছুক্ষণ থাকো’ গানে কণ্ঠ দেন। রবীন ঘোষের সুরে তিনি পীচ ঢালা পথ ছবিতে ‘পীচ ঢালা এই পথটারে ভালবেসেছি’ এবং নাচের পুতুল ছবির শিরোনাম গানে কণ্ঠ দেন।
১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দে ‘সারেং বৌ’ চলচ্চিত্রে আলম খানের সুরে ‘ও..রে নীল দরিয়া’ গানটি দর্শকপ্রিয়তা পায়। ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে এই সঙ্গীত শিল্পীর প্রথম মৌলিক গানের অ্যালবাম কোথায় আমার নীল দরিয়া মুক্তি পায়। অ্যালবামটির গীতিকার মো. আমিরুল ইসলাম, সুরকার গোলাম সারোয়ার। একই বছরে তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে লেখা গানের অ্যালবামের কাজ শুরু করেন। গীতিকার আমিরুল ইসলাম রচিত ‘বঙ্গবন্ধু দেখেছি তোমায় দেখেছি মুক্তিযুদ্ধ’ শিরোনামের গানটিতে কণ্ঠ দেয়ার আগেই তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে অ্যালবামের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। মো. আব্দুল জব্বার ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন।