অবসরের পর অপরাধ করলেও সরকারি সুবিধা বহাল থাকবে

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বিদ্যমান সরকারি চাকরি আইন অনুযায়ী কোনো কর্মচারী অবসরে যাওয়ার পর 'গুরুতর' কোনো অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত হলে তার প্রাপ্ত সুবিধা 'আংশিক' বা 'সম্পূর্ণ' বাতিল করার সুযোগ রয়েছে সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষের। আইনের এ-সংক্রান্ত উপধারাটি বাতিল করার সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এ প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদনের জন্য আজ সোমবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভার আলোচ্যসূচিতে রাখা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কেএম আলী আজম বলেন, বিদ্যমান সরকারি চাকরি আইনে আমাদের দু-একটি ধারা সংযোজন, বিয়োজন ও প্রতিস্থাপনে ভুল ছিল। দু-একটি সেকশনে সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেওয়ায় এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটির খসড়া চূড়ান্ত করে মন্ত্রিপরিষদে আনা হয়েছে। এটি অনুমোদন পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা

২০১৮ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে সরকারি কর্মচারী আইন প্রণয়ন করা হয়। কার্যকর হয় ২০১৯ সালের ১ অক্টোবর। এই আইনে সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে সরকারের অনুমোদন নেওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় ব্যাপক সমালোচনা হয়। যদিও তা আমলে নেওয়া হয়নি।

আইনটি প্রণয়নের সঙ্গে বাতিল হয়ে যাওয়া পুরোনো ছয়টি আইনের কিছু বিষয় স্পষ্ট করার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদে 'সকল সময়ে জনগণের সেবা করিবার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত ব্যক্তির কর্তব্য' বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কেউ সরকারি কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর কবরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সরকারি সুযোগ-সুবিধার মধ্যে থাকেন। তাই তাদের বিষয়ে সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকা যুক্তিসংগত বলে মনে করেন সাবেক অনেক কর্মকর্তা।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সরকারি চাকরি আইনে 'সরকারি কর্মচারী'দের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। সংজ্ঞা অনুযায়ী, 'সরকারি কর্মচারী অর্থ এই আইনের আওতাভুক্ত প্রজতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি।' তার মতে, সরকারি কর্মচারী অবসরে চলে যাওয়ার পর আর 'প্রজাতন্ত্রের' কর্মে নিযুক্ত থাকেন না। তাই তাদের এই আইনের আওতায় রাখার সুযোগ নেই।

তবে পাল্টা যুক্তি দিয়ে আরেকজন কর্মকর্তা অভিমত দেন, সরকারি কর্মচারী নিজে কবরে যাওয়া পর্যন্ত পেনশনসহ বিভিন্ন ধরনের সরকারি সুযোগ-সুবিধা পান। তিনি মারা গেলে তার পরিবারও অনেক সুবিধা পায়। তাই অবসরে গেলেও তাদের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণের একটা সুযোগ থাকা দরকার।

আইনটির প্রস্তাবিত সংশোধনে ১, ৪৮ ও ৫০ ধারায় কয়েকটি করণিক ভুল সংশোধনেরও প্রস্তাব করা হয়েছে। এ আইন কার্যকরের সঙ্গে সঙ্গে ছয়টি আইন রহিত করা হয়েছে। কিন্তু এই আইনের কিছু ধারা অন্তত ১০টি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য ছিল। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে সংশ্নিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কোন কোন ধারাগুলো প্রযোজ্য থাকবে, তা স্পষ্ট করা হয়েছে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে - dainik shiksha কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা - dainik shiksha ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন - dainik shiksha সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল - dainik shiksha ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে - dainik shiksha নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0043179988861084