আজ ঐতিহাসিক ১০ এপ্রিল

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

ঐতিহাসিক ১০ এপ্রিল আজ। বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল দিন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন এ দিনে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠন করা হয়। এদিনই স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য মুক্তিবাহিনী সংগঠন ও সমন্বয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায় এবং নয় মাসের যুদ্ধে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে এই বিপ্লবী সরকারই। এটি ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার। 

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ দিয়েছিলো বাংলাদেশের স্বাধীনতার দিকনির্দেশনা। ২৫ মার্চ রাতে মুক্তিকামী বাঙালীদের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। সে রাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেফতারের আগে ঘোষণা করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। বাঙালি শুরু করে প্রতিরোধ। শুরু হয় যুদ্ধ। 

সরকার গঠনের পর আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র (প্রোক্লেমেশন অব ইন্ডিপেন্ডেস) পাঠ করা হয়। এদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণাকেও অনুমোদন করা হয়। এটি ছিল একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।

এরই ধারাবাহিকতায় প্রথমে চুয়াডাঙ্গায় বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ অনুষ্ঠানের কথা থাকলেও তা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী জেনে যাওয়ায় ১৭ এপ্রিল বর্তমানের মুজিবনগর তখনকার মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের নতুন সরকারের শপথ অনুষ্ঠিত হয়।

১০ এপ্রিল পাকিস্তানের নির্বাচিত জাতীয় এবং প্রাদেশিক পরিষদ সদস্যরা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি গোপন স্থানে মিলিত হয়ে প্রবাসী সরকার গঠন করেন। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি এবং সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপ-রাষ্ট্রপতি (অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি) নির্বাচিত করা হয়। সৈয়দ নজরুল ইসলাম পরে তাজউদ্দীন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেন।

মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরা হলেন—এম মনসুর আলী (অর্থ, বাণিজ্য ও শিল্প) এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামান (স্বরাষ্ট্র, সরবরাহ, ত্রাণ, পুনর্বাসন ও কৃষি)। পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার সবচেয়ে ঘৃণিত ব্যক্তি বেইমান খন্দকার মোশতাক আহমদও (পররাষ্ট্র, আইন ও সংসদ) মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন।

১০ এপ্রিল সরকার গঠনের পর ১১ এপ্রিল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে তাজউদ্দীন আহমদ একটি বেতার ভাষণ দেন। এ ভাষণে তিনি দেশব্যাপী পরিচালিত প্রতিরোধ যুদ্ধের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন। এছাড়াও ১৭ এপ্রিল মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণের তারিখ নির্ধারিত হয়।

এই সরকারের দক্ষতার ফলেই মাত্র ৯ মাসে বাংলাদেশ হানাদার পাকিস্তানিদের দখলমুক্ত হয়েছিল। ১৬ ডিসেম্বর আমাদের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। তাই ১০ এপ্রিল বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণীয়, অমলিন একটি দিন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি - dainik shiksha মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি বয়স ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগে চাকরি প্রত্যাশীদের মহাসমাবেশ - dainik shiksha বয়স ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগে চাকরি প্রত্যাশীদের মহাসমাবেশ এমপিওভুক্তি: দীপু মনির ভাই টিপুচক্রের শতকোটি টাকার বাণিজ্য - dainik shiksha এমপিওভুক্তি: দীপু মনির ভাই টিপুচক্রের শতকোটি টাকার বাণিজ্য অধ্যক্ষকে পদত্যাগে বাধ্য, আওয়ামী লীগ নেতাকে স্থলাভিষিক্ত করার চেষ্টা - dainik shiksha অধ্যক্ষকে পদত্যাগে বাধ্য, আওয়ামী লীগ নেতাকে স্থলাভিষিক্ত করার চেষ্টা ভুয়া নিয়োগে এমপিও: এক মাদরাসার ১৫ শিক্ষকের সনদ যাচাই করবে অধিদপ্তর - dainik shiksha ভুয়া নিয়োগে এমপিও: এক মাদরাসার ১৫ শিক্ষকের সনদ যাচাই করবে অধিদপ্তর বার্ষিক পরীক্ষার উদ্দীপকসহ ও উদ্দীপক ছাড়া প্রশ্ন - dainik shiksha বার্ষিক পরীক্ষার উদ্দীপকসহ ও উদ্দীপক ছাড়া প্রশ্ন একসঙ্গে তিন প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন তুলতেন মাদরাসা কর্মচারী - dainik shiksha একসঙ্গে তিন প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন তুলতেন মাদরাসা কর্মচারী আবাসিক হোটেলে শিক্ষার্থীদের অভিযান, হামলা - dainik shiksha আবাসিক হোটেলে শিক্ষার্থীদের অভিযান, হামলা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.005424976348877