এমপিওভুক্তির আবেদনে ভুয়া স্বীকৃতির ছড়াছড়ি। এ পর্যন্ত ৪০ টির বেশি চিহ্নিত হয়েছে। আরো ধরা পড়লে এমপিওর তালিকাভুক্ত হলেও তা বাদ পড়বে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এদিকে যোগ্য-নির্বাচিত-প্রতিটি-প্রতিষ্ঠানই-এমপিওভুক্ত-করা-হবে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল বুধবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওর ঘোষণা দেবেন বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের একথা জানান তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, হাওর ও পিছিয়ে পড়া এলাকাকে অগ্রাধিকার দিয়ে এবার এমপিও দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী এমপিও নথিতে স্বাক্ষর করেছেন। বুধবার ঘোষণা করবেন।
তিনি বলেন, সর্বশেষ গতবার ১৬শ' এর মতো প্রতিষ্ঠান এমপিও হয়েছিল। এবার তার দ্বিগুণ। আগামীকাল যে তালিকা ঘোষণা করা হবে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র দৈনিক শিক্ষাকে বলেছেন, অনুসন্ধানে গিয়ে ধরা পড়েছে ৪০টিরও বেশি। বাস্তবে এ সংখ্যা আরও বেশি। ছয় হাজারেরও বেশি আবেদনের এ ত্রুটি যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে, তালিকা ঘোষণার পরও যদি ধরা পড়ে তাহলে বাদ পড়বে।
উদাহরণ হিসেবে তারা বলেন, প্রকৃতপক্ষে একটা প্রতিষ্ঠান স্বীকৃতি পেয়েছে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে কিন্তু জালিয়াতি করে তা দেখানো হয়েছে ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে। এভাবে ৪০টিরও বেশি ধরা পড়েছে। আরও হয়তো আছে।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি আরও বলেন, এমপিওভুক্ত সব প্রতিষ্ঠানকে নীতিমালা অনুযায়ী মান ধরে রাখতে হবে। কোনো প্রতিষ্ঠান তা না পড়লে এমপিও সাময়িক স্থগিত করা হবে। পুনরায় যোগ্যতা অর্জন করতে পারলে আবারও এমপিও দেয়া হবে। এমপিও পেয়ে গেছে ভেবে হাল ছেড়ে দিলে তারা বিপদে পড়বেন।
এদিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনশনরত ননএমপিও শিক্ষকদের আন্দোলন ছেড়ে ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, আপনারা আন্দোলন না করে প্রতিষ্ঠানে ফিরে যান। আপনাদের আন্দোলনের কারণে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ধারাবাহিকভাবে যোগ্যতার ভিত্তিতেই দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তির আওতায় আনা হবে। এটি চালু হয়েছে। প্রতি বছরই এটি অব্যাহত থাকবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এখন থেকে প্রতিবছর এমপিওভুক্তির কার্যক্রম চলমান থাকবে। যেসব প্রতিষ্ঠানে প্রতিবছর যোগ্য বলে বিবেচিত হবে তাদেরকে এমপিওভুক্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে। আর যেসব প্রতিষ্ঠানকে পিছিয়ে থাকবে তাদের সহযোগিতা করে এগিয়ে আনা হবে। এসব প্রতিষ্ঠানের যোগ্যতা অর্জন করলেই এমপিওর আওতায় আনা হবে।
বিএম কলেজ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগামীকাল প্রকাশিতব্য তালিকায় বিএম কলেজগুলো অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তবে, বিএম শিক্ষার প্রায়োগিক ব্যবহার কম থাকায় কলেজগুলোকে নিরুৎসাহিত করছে সরকার।
এর আগে গত রোববার (২০ অক্টোবর) রাতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা। ওই বৈঠকে যোগ্য সব প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আশ্বাস দিয়ে শিক্ষকদের আন্দোলন ছেড়ে ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানান শিক্ষামন্ত্রী। তবে মন্ত্রীর ওই আশ্বাসে সন্তুষ্ট নন স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আন্দোলনরত শিক্ষকরা। গতকাল সোমবার (২১ অক্টোবর) সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেন তাঁরা। মন্ত্রীর সাথে আড়াইঘন্টার বৈঠকে কোনও যুক্তি দেখাতে পারেননি শিক্ষক নেতারা। বৈঠক শেষে একাধিক শিক্ষক নেতা দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, শিক্ষামন্ত্রী যা বলেছেন এরপর আর কিছু বলা উচিত না। মন্ত্রীর প্রতিটি কথায় যুক্তি ছিলো কিন্ত আমাদের কতিপয় নেতা শুধু আবেগ দিয়ে কথা বলেছেন। বৈঠক থেকে বের হয়েই আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে, অনশনে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা খুবই কম।