কওমি মাদ্রাসাগুলোকে জঙ্গিবাদের আখড়া বলে মন্তব্য করেছেন মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান একেএম ছায়েফ উল্লাহ। তিনি বলেছেন, কওমি মাদ্রাসায় ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করা হয়।
বুধবার (২৩ মার্চ) সকালে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) কনফারেন্স হলে আয়োজিত মাদ্রাসা শিক্ষা ধারার জন্য উন্নয়নকৃত ইন্টার্যাকটিভ ডিজিটাল টেক্সটবুক (আইডিএমটি) রিভিউ কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
নোয়াখালীর একটি বেসরকারি কলেজের ইংরেজি শিক্ষক ছিলেন ছায়েফউল্ল্যাহ। হঠাৎ ঘোষণায় সরকারি হন ১৯৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে। ২০০৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে তিনি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের প্রোটোকল অফিসার ছিলেন। ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি সময়ে তিনি মাদ্রাসা বোর্ডের রেজিস্টার পদ লাভ করেন। কয়েকবছর আগে বোর্ডের চেয়ারম্যান পদটি অবসরজনিত কারণে খালি হলেও নতুন কাউকে না দিয়ে ছায়েফউল্ল্যাহকে কখনো দায়িত্বপ্রাপ্ত আবার কখনো ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে উল্লেখ করে আসছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এই ছায়েফ উল্ল্যাহ আজ (২৩ মার্চ) মন্ত্রীর উপস্থিতিতে বলেন, কওমি মাদ্রাসার অনুসারীরা রাষ্ট্রীয় আইনে বিশ্বাসী না । তিনি বলেন, তারা বলে আল্লাহ পাঠিয়েছেন শুধু তার আইন মানতে হবে এবং বাস্তবায়ন করতে। রাজার রাজত্বে বাস করতে হলে রাজার আইন যে মানতে হবে সেটাকে তারা অস্বীকার করে।
এর আগে কারওয়ান বাজারস্থ মসজিদে নামাজ পড়ার পর বৃষ্টির কারণে আটকে পড়েছিলেন তিনি। সে সময় নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, মসজিদের মধ্যে একটি কওমি মাদ্রাসা পরিচালিত হয়। আমি আমার পরিচয় দিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের একটাই কথা, আল্লাহ পাঠিয়েছেন। একমাত্র তার আইন-ই আমাদের মানতে হবে। বাস্তবায়ন করতে হবে। আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন করতে প্রয়োজনে জীবন দিতেও প্রস্তুত তারা।কওমি মাদ্রাসায় ধর্মীয় চর্চা না হয়ে ধর্মীয় গোঁড়ামির চর্চা করা হয় উল্লেখ করে ছায়েফ উল্লাহ বলেন, কওমি মাদ্রাসায় ধর্মীয় উসকানি ও জঙ্গিবাদকে উসকানি দেয়। উল্লেখ্য, কওমি মাদ্রাসাগুলোকে সরকারি নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনতে অনেকবার চেষ্টা করা হলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি।
জানা যায়, কওমি বোর্ড ও সরকার উভয়পক্ষ থেকেই নানা বিষয়ে আপত্তি ও সমন্বয়হীনতার কারণেই এমনটি হচ্ছে। এর আগে সরকার একাধিকবার তাদের সঙ্গে বৈঠকও করেছিল। কিন্তু এখন আর তেমন কোনো গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না।
মাদ্রাসা শিক্ষা ধারার জন্য উন্নয়নকৃত ইন্টার্যাকটিভ ডিজিটাল টেক্সটবুক (আইডিএমটি) রিভিউ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে এসময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন, অতিরিক্ত শিক্ষাসচিব (মাদ্রাসা) এসএম এহসান কবীর, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ফাহিমা খাতুন। আরো উপস্থিত ছিলেন নায়েমের মহাপরিচালক হামিদুল হক।
এ সংক্রান্ত আরো খবর: