করোনাকালে ৩৪৪ আইসিটি শিক্ষককে বিশেষভাবে এমপিও দেয়া হোক

সারোয়ার মিরন |

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) কর্তৃক নিয়োগ সুপারিশের চৌদ্দ মাস পার হলেও বেতন পাচ্ছেন না ৩৪৪ জন আইসিটি শিক্ষক। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম দিকে নিয়োগ পাওয়া এসব শিক্ষক বিনাবেতনে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। এনটিআরসিএ কর্তৃক নিয়োগ সুপারিশপ্রাপ্ত বলে প্রতিষ্ঠান থেকেও দেয়া হচ্ছেনা সম্মানী। দীর্ঘ সময় ধরে বেতন ভাতা না পাওয়া এসব শিক্ষকের ওপর করোনা ভাইরাস সংকট ভর করায় অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। মহামারীতে বেতন-ভাতাহীন এ ৩৪৪ জন আইসিটি শিক্ষককে বিশেষভাবে এমপিও প্রদানের মাধ্যমে বেতন ভাতার ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নেয়া জরুরি।

দেশের সকল স্তরের শিক্ষকরা এ সংকটে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা পেয়েছেন বিশেষ বিবেচনায়। এক্ষেত্রে বঞ্চিত এমপিও প্রাপ্য এসব শিক্ষক। মাধ্যমিক স্তরের এসব আইসিটি শিক্ষকদের মানবেতর সময়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বা মাদরাসা অধিদপ্তর, নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেউই পাশে দাঁড়াচ্ছেন না। ভাগ্য বিড়ম্বিত এসব শিক্ষক পরিবার পরিজন নিয়ে না খেয়ে, অর্ধহারে জীবন পার করছেন। 

গত ১২ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এবং গত ২৩ মার্চ মাদারাসা অধিদপ্তর থেকে আলাদা দুটি চিঠির মাধ্যমে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে নিয়োগ পেয়ে পাঠদানরত আইসিটি শিক্ষকদের তালিকা সংগ্রহ করা হয় জেলা ও উপজেলা পর্যায় থেকে। একই চিঠি বলে এনটিআরসিএ থেকেও এ তালিকা সংগ্রহ করে শিক্ষা অধিদপ্তর এবং মাদারাসা অধিদপ্তর। অথচ আমাদের নিয়োগ প্রক্রিয়ার পরে প্রায় ৩১ হাজার শিক্ষক নিয়োগ পেয়ে এমপিওভুক্ত হয়েছেন। কৃষি শিক্ষা বিষয়েও একই সংকট সৃষ্টি হলে মাত্র দু মাসের মাথায় সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। 

এনটিআরসিএ কর্তৃক বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়োগের প্রথম চক্রে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের আবেদন করেন এ সব শিক্ষক। মহামান্য আদালতের মামলার পর রায় আবেদনকারীদের পক্ষে এলে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ২০ ডিসেম্বর নিয়োগ সুপারিশের ফল প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের  ১০ জানুয়ারি প্রত্যেক নির্বাচিত প্রার্থী বরাবর ইস্যু করা হয় সুপারিশপত্র। প্রাপ্ত সুপারিশপত্র মোতাবেক একমাস সময়সীমা অর্থাৎ ৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব শিক্ষক যোগদান নিশ্চিত করেন। এর মধ্যে একাধিকবার এমপিও আবেদন করা হলেও আঞ্চলিক উপ-পরিচালক পর্যায় থেকে এসব আবেদন অগ্রায়ণ করা হয়নি। এ দীর্ঘ সময়ে ভুক্তভোগী শিক্ষকরা বিভিন্ন দপ্তরে বহুবার ধরনা দিয়েও কোন ফল পাননি। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। 

বেতন ভাতা না পেয়ে এ সংকটের সময়ে লজ্জায় কারো কাছে হাত পাততেও পারছেন না তারা। এ এক চরম সংকট। প্রায় বেকার এ সময়ে সংসদ টিভিতে অনলাইন ক্লাস দেখে প্রতিদিনকার পাঠ কার্যক্রম প্রস্তুত করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের খোঁজ খবরও রাখছেন এ সব শিক্ষক। ঘরবন্দি এসব শিক্ষকদের দ্রুত এমপিও দেয়ার ব্যবস্থা করার দাবি করছেন ভুক্তভোগীরা। প্রয়োজনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আপদকালীন বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় আর্থিক সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হোক।

আমরা বঞ্চিত শিক্ষকরা এ মানবিক দুর্ভোগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি মহোদয়ের এ বিষয়ে আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি। 

লেখক : ভুক্তভোগী আইসিটি শিক্ষক, রামগতি, লক্ষ্মীপুর।

[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন]


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
রোববার থেকে সরকারি প্রাথমিকে মর্নিং স্কুল, খোলার প্রজ্ঞাপন জারি - dainik shiksha রোববার থেকে সরকারি প্রাথমিকে মর্নিং স্কুল, খোলার প্রজ্ঞাপন জারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের গরমে কলেজে কোচিং, দুদিনে অসুস্থ ৮ ছাত্রী - dainik shiksha গরমে কলেজে কোচিং, দুদিনে অসুস্থ ৮ ছাত্রী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট - dainik shiksha জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ - dainik shiksha আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0057919025421143