রাজশাহীতে গভীর রাতে সাদা পোশাকে এক মাদরাসার শিক্ষককে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার রাতে তানোর উপজেলার সাতপুকুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিখোঁজ মাওলানা ক্বারী তারেক আহমেদ (৩৩) পাশর্^বর্তী চাঁদলাই গ্রামের আফজাল হোসেন দারুস সুন্নাহ একাডেমির (নূরানী মাদরাসা ও ইয়াতিমখানা) প্রধান শিক্ষক। এ ঘটনায় তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম তানোর থানায় জিডি করেছেন।
ওই মাদরাসার আরেক শিক্ষক হাবিবুর রহমান জানান, বুধবার রাতে তারাবির নামাজে ইমামতি শেষে বাসায় ফেরেন মাওলানা তারেক আহমেদ। এরপর খাওয়া শেষে ‘আসছি’ বলে বাসার বাইরে যান। কিন্তু তারপর আর ফেরেননি। তবে রাত ১১টার দিকে হাবিবুর রহমানকে ফোন করলে তিনি বলেন, ‘আমি খুব বিপদে আছি। সাদা পোশাকধারী কয়েকজন লোক আমাকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। কোথায় যাচ্ছে তা বুঝতে পারছি না। বিষয়টি আমার পরিবারকে জানিয়ে দিয়েন।’ এরপর কলটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তারপর থেকে তারেকের ফোন বন্ধ। তাকে পাওয়া যাচ্ছে না।
হাবিবুর আরও জানান, নাচোল উপজেলার হাঁপানিয়া দোগাছি গ্রামের এক শিক্ষার্থী ওই আবাসিক মাদরাসায় পড়াশোনা করত। কিন্তু বুধবার হঠাৎ করে ওই শিক্ষার্থীকে নিতে তার বাড়ি থেকে কয়েকজন লোক আসে। এ সময় প্রধান শিক্ষক তারেক
আহমেদ উপস্থিত ছিলেন না। তবে অন্য শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকের উপস্থিতি ছাড়া শিক্ষার্থীকে বাড়ি না নিয়ে যেতে অনুরোধ করেন। এ সময় তারা প্রধান শিক্ষক তারেকের উদ্দেশে বলেন, ‘শুক্রবার জুমার নামাজ পড়াতে গেলেই টের পাবে কী কারণে বাচ্চাটাকে আমরা মাদরাসায় পড়াতে চাই না। উনি জানে। কী করেছে।’ এরপর ওই শিক্ষার্থীকে তারা নিয়ে চলে যায়। ওই শিক্ষার্থীর গ্রামের মসজিদে জুমার নামাজ পড়ান মাওলানা তারেক। এ ঘটনার পর রাতে নিখোঁজ হন তিনি।
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী বলেন, ‘মাওলানা তারেক আহমেদ মাদরাসার একজন শিক্ষার্থীকে একাধিকবার বলাৎকার করেছিলেন। নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীর পরিবার বিষয়টি জানার পর তাকে মাদরাসা থেকে নিয়ে চলে যায়। তারা পুলিশে অভিযোগও করেনি। হুজুর নিখোঁজ হওয়ার পর এটি আমরা জানতে পেরেছি। তবে জেলা পুলিশ তাকে আটক করেনি।’