জানি না আমার এই লেখাটি অভিভাবকরা পড়বেন কি-না: ড. জাফর ইকবাল

নিজস্ব প্রতিবেদক |

আমি ছোট ছেলেমেয়েদের জন্য লেখালেখি করি বলে তাদের সঙ্গে আমার এক ধরনের যোগাযোগ আছে। তাদের দুঃখ-কষ্টের অনেক কাহিনী যেগুলো অন্যরা কখনও জানতে পারে না, আমি সেগুলো মাঝে মধ্যে জেনে যাই। চিঠি লেখার সময় টপটপ করে চোখের পানি পড়ে চিঠির লেখা লেপটে গেছে_ সে রকম অনেক চিঠি আমি পেয়েছি। মৃত্যুপথযাত্রী কোনো এক কিশোরীর কাছ থেকে নিয়মিত চিঠি আসতে আসতে হঠাৎ করে সেটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার অর্থ কী, সেটিও আমি জানি। একটুখানি উৎসাহ দেওয়ার কারণে পুরোপুরি হতাশাগ্রস্ত একজন নতুন করে জীবন শুরু করেছে_ সেই আনন্দটুকুও আমি অসংখ্যবার উপভোগ করেছি। সবাই বিষয়টা লক্ষ্য করেছেন কি-না আমি জানি না; আমাদের দেশের ছেলেমেয়েদের অনেকের জীবনে এখন প্রতিযোগিতার মতো কিছু বিষয় বুকের ওপর ভারী পাথরের মতো চেপে বসতে শুরু করেছে।

আমরা যখন ছোট ছিলাম, তখন স্কুলে গিয়ে লেখাপড়া করা এবং বাকি সময় মাঠে-ঘাটে ছোটাছুটি করা ছাড়া আমাদের আর কিছু করার ছিল না। একবারও মনে হয়নি জীবনটা অপূর্ণ রয়ে গেছে। মাঝে মধ্যে স্কুলে যে কোনো ধরনের প্রতিযোগিতা যে হতো না তা নয়। রচনা প্রতিযোগিতায় লম্বা লম্বা রচনা লিখেছি, আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় (আঞ্চলিক উচ্চারণে) আবৃত্তি করার চেষ্টা করেছি, দৌড় প্রতিযোগিতায় সবার পেছনে পেছনে দৌড়ে গিয়েছি_কখনও কোথাও কোনো পুরস্কার পেয়েছি বলে মনে পড়ে না। সে কারণেই কি-না জানি না, প্রতিযোগিতা বিষয়টা আমার কাছে কখনোই আনন্দময় মনে হয়নি। শৈশবে যে বিষয়টা আমার জন্য আনন্দময় ছিল না, এখনও নিশ্চয়ই শিশু-কিশোরদের অনেকের কাছে বিষয়টা মোটেও আনন্দময় নয়!

আমাদের দেশে গণিত অলিম্পিয়াড শুরু করার আগে আমরা প্রথমবার বিষয়টা নিয়ে চিন্তাভাবনা করেছিলাম। বিশ্ব গণিত অলিম্পিয়াডে টিম পাঠাতে হলে আমাদের এ দেশের বাচ্চাবাচ্চা গণিতবিদদের খুঁজে বের করতে হবে এবং সেটা করতে হলে কোনো এক ধরনের প্রতিযোগিতা করেই সেটা বের করতে হবে। তার পরও আমরা কোনোভাবেই পুরো প্রক্রিয়াটি শুধু একটা প্রতিযোগিতা হিসেবে শুরু করতে চাইনি। তাই অনেক ভেবেচিন্তে আমরা নাম দিয়েছিলাম গণিত উৎসব। প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয় মাত্র অল্প কয়জন; কিন্তু উৎসবে যোগ দেয় সবাই। শুধু যে উৎসব নাম দিয়েই দায়িত্ব শেষ করে ফেলা হয়েছে তা নয়, গণিত অলিম্পিয়াডের পুরো ব্যাপারটা যে আসলেই একটা উৎসব_ সেটা প্রমাণ করার জন্য সবাই মিলে অনেক চেষ্টা করেছি এবং আমার ধারণা, আমরা বেশ সফলও হয়েছি। আমি যখনই কোনো একটা গণিত অলিম্পিয়াডে হাজির থাকার সুযোগ পাই এবং যদি বাচ্চাদের উদ্দেশে কিছু বলার সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে আমি পুরো সময়টুকু ব্যয় করি তাদেরকে বোঝানোর জন্য যে, এই উৎসবে প্রতিযোগিতার অংশটুকুর গুরুত্ব নেই_শুধু প্রয়োজনের কারণে করতে হচ্ছে এবং উৎসবটুকুই হচ্ছে আসল ব্যাপার। যখন পুরস্কার দেওয়ার সময় হয় তখন শুধু চ্যাম্পিয়ন, রানার্সআপ পুরস্কার না দিয়ে ৫০, ৬০ ও ৭০টি পুরস্কার দেওয়া হয় (এ ব্যাপারে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের তুলনা নেই। তাদের পুরস্কার দেওয়ার অনুষ্ঠানে কয়েক হাজার ছেলেমেয়ে হাজির থাকে এবং সবাই পুরস্কার পায়। শুধু তাই নয়, বিশাল বিশাল বইয়ের বান্ডিলে বড় পুরস্কারগুলো দেওয়া হয় লটারি করে। লটারিতে নাম না ওঠার আফসোস হয়তো থাকে; কিন্তু পরাজিত হওয়ার গ্গ্নানিটুকু থাকে না)।

আমরা যখন সত্যিকারের জীবন শুরু করি, সেখানে কিন্তু প্রতিযোগিতার কোনো চিহ্ন থাকে না; সবকিছু করতে হয় সহযোগিতা দিয়ে। আমি যখন আমার ছাত্রছাত্রীদের পড়াই, তখন বিভাগের অন্য শিক্ষকদের বলি না ‘তুমিও পড়াও আমিও পড়াই, দেখি কে ভালো পড়াতে পারে।’ প্রশ্ন করার সময় আমি সবাইকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলি না, ‘দেখি কে আমার থেকে ভালো প্রশ্ন করতে পারে!’ পরীক্ষার খাতা দেখার সময় সবাই মিলে একটি খাতা দেখে নিজেদের মাঝে প্রতিযোগিতা করি না!

যখন সত্যিকারের কাজ করতে হয়, তখন সবাই মিলে সেটি করতে হয়। যে যেটা ভালো পারে তাকে সেটা করতে দেওয়া হয়। সব কাজ যে আনন্দময় হয় তা নয়, আনন্দহীন কাজগুলো সবার মাঝে ভাগাভাগি করে নেওয়া হয়। কেউ কোনো একটা কাজ করতে না পারলে অন্যেরা সেটা করে দেয়। একটা কাজ কত সুন্দর করে শেষ হবে, তার পুরোটা নির্ভর করে সবাই মিলে কত চমৎকারভাবে একে অপরকে সহযোগিতা করতে পারে তার ওপর।

যদি সহযোগিতাটাই জীবনের সাফল্যের আসল কথা, তাহলে আমরা কেন প্রতিমুহূর্তে আমাদের ছেলেমেয়েদের প্রতিযোগিতার মাঝে ঠেলে দিই? আমরা সত্যিকারের জীবনের জন্য প্রস্তুত না করে কেন তাকে স্বার্থপর হতে শেখাই? প্রতিযোগিতার আসল কথাটাই কি অন্য সবাইকে ঠেলে, কনুইয়ের গুঁতো দিয়ে, পেছনে ফেলে নিজে সামনে এগিয়ে যাওয়া নয়? আমরা বিজয়ীর আনন্দটুকু দেখি, পরাজিতদের দুঃখটা কেন দেখি না?

শুরুতে বলেছিলাম যে ছোট ছেলেমেয়েদের অনেকের মনের দুঃখ-বেদনা আর হতাশার কথা আমি জানি। সেই দাবিটুকু থেকে আমি বলতে পারি, তাদের দুঃখ-বেদনা এবং হতাশার একটা বড় কারণ হচ্ছে এই প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে যে পুরস্কার পাচ্ছে না তার মনে স্বাভাবিকভাবে একটা দুঃখ হয়। তখন তার আপনজনের দায়িত্ব হয় তাকে উৎসাহ দিয়ে সেই দুঃখ থেকে তুলে আনা। কিন্তু আমাদের দেশে এখন অতি বিচিত্র এক ধরনের অভিভাবক প্রজাতির জন্ম হয়েছে, তাদের কাজ হচ্ছে ছেলেমেয়েদের সব ধরনের প্রতিযোগিতার মাঝে ঠেলে দেওয়া। শুধু তাই নয়, সেই প্রতিযোগিতায় সফল হতে না পারলে নিজের ছেলে কিংবা মেয়েটিকে অপমান করা, লজ্জা দেওয়া, অন্যদের সঙ্গে তুলনা করে তাকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া! মা-বাবারা জানেন না কখনও কখনও তারা তাদের ছেলেমেয়েকে এমন এক জায়গায় ঠেলে নিয়ে যান যে, লজ্জায়-দুঃখে-অপমানে তারা আত্মহত্যার কথা চিন্তা করে। কৈশোরের একটা বয়স হয় আবেগের বয়স; সেই সময় লজ্জা-দুঃখ-অপমানে সত্যি সত্যি যদি কেউ গলায় দড়ি দেয় অবাক হওয়ার কিছু নেই। মা-বাবার চাপের কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে গেছে এবং মনোরোগ বিশেষজ্ঞরাও এখন তাদের স্বাভাবিক করে তুলতে পারছেন না_ এ রকম উদাহরণ আমি অনেকবার দেখেছি!

আমি টেলিভিশন দেখি না বলে অনেক ধরনের নিষ্ঠুরতা আমাকে দেখতে হয় না। একেবারে শিশুদের গানের একটা প্রতিযোগিতা হয় বলে জানতাম। ঘটনাক্রমে কারও একজনের বাসায় আমার সেই প্রতিযোগিতার অংশবিশেষ দেখতে হয়েছিল। ছোট শিশুদের কী চমৎকার গানের গলা, সুরের ওপর কী অবিশ্বাস্য দখল_ আমি মুগ্ধ হয়ে দেখছিলাম। কিন্তু এক পর্যায়ে আমি হতচকিত হয়ে আবিষ্কার করলাম, প্রতিযোগিতায় কোনো কোনো শিশু ছিটকে পড়ছে এবং সেই শিশুদের কান্না দেখে আমার বুকটা ভেঙে গিয়েছিল। টেলিভিশনের বড় বড় হর্তাকর্তা-বিধাতাদের কে অধিকার দিয়েছে ছোট শিশুদের ডেকে নিয়ে তাদের ছোট হৃদয়টুকু দুমড়ে-মুচড়ে দেওয়ার?

আমাকে নানা অনুষ্ঠানে ডাকা হয়। মাঝে মধ্যে বড় বড় প্রতিযোগিতার বিচারক হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। আমি কখনও সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করি না। আমি বিচারক হয়ে একজনকে ভালো, অন্যজনকে খারাপ বলতে পারি না। আমার কাছে সবাই ভালো (বিচারক হওয়ার সবচেয়ে বিচিত্র আমন্ত্রণটি ছিল কোনো এক ধরনের সুন্দরী প্রতিযোগিতার। আমার ছাত্রীদের কিংবা ছাত্রীর বয়সী মেয়েদের সৌন্দর্য বিচার করা যে আমার কাজ হতে পারে না, সেটা আয়োজকদের বোঝাতে আমার অনেক কষ্ট হয়েছিল)। তার পরও পাকেচক্রে আমাকে বিচারকের জায়গায় ঠেলে দেওয়া হয় না, তা নয়। একটি ঘটনার কথা মনে আছে। সিলেটে কোনো একটি টেলিভিশনে গানের প্রতিযোগিতায় আমাকে দর্শক হিসেবে নিয়ে যাওয়া হলো। প্রতিযোগীরা শিশু নয়, কাজেই এটা শিশু নির্যাতন ক্যাটাগরিতে ফেলতে হবে না। তাই আমি রাজি হয়েছিলাম। আমাকে বিচারকদের পাশে বসিয়ে দেওয়া হলো এবং প্রতিযোগীরা এক একজন করে মঞ্চে এসে গান গাইতে লাগল। একজন গান গাওয়া শেষ করা মাত্রই বিচারকরা ভদ্রতা করে আমার মন্তব্য জানতে চাইলেন। আমি সারা জীবনই অল্পতে খুশি হয়ে এসেছি। তাই একেবারে উচ্ছ্বসিত হয়ে প্রশংসা শুরু করে দিলাম এবং আমার এ রকম উচ্ছ্বসিত প্রশংসা শুনে সেই গায়ককে নির্বাচিত করা ছাড়া বিচারকদের আর কোনো উপায় থাকল না এবং সেটা ঘটতেই থাকল। প্রতিবার একজন গান গায় এবং আমি গায়ক কিংবা গায়িকার প্রশংসায় উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠি। আমার উচ্ছ্বাস দেখে বিচারকরা চক্ষুলজ্জার খাতিরে একজনের পর আরেকজনকে নির্বাচিত করে যেতে লাগলেন! ভাগ্যিস, আমার বেশি সময় ছিল না। তাই যখন বিদায় নিতে চাইলাম সবাই খুবই আগ্রহ এবং উৎসাহ নিয়ে আমাকে বিদায় দিয়ে টেলিভিশন চ্যানেলের প্রচলিত নিষ্ঠুরতায় ফিরে গেল!

আজকাল জিপিএ ফাইভ কিংবা গোল্ডেন ফাইভ নামে নতুন এক ধরনের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। আমি অস্বীকার করছি না, সবাই পরীক্ষায় ভালো করতে চায় এবং কেউ গোল্ডেন ফাইভ পেলে সেটা নিয়ে একশ’বার আনন্দ করা যায়। কিন্তু গোল্ডেন ফাইভ না পেলে যখন একটি ছেলে বা মেয়েকে তার বাবা-মা রীতিমতো নির্যাতন করতে শুরু করেন, তার থেকে ভয়াবহ আর কিছু হতে পারে না। যে ছেলে বা মেয়েটি পরীক্ষায় একটা ভালো ফল আশা করছে, যদি সেটা তার মনমতো না হয়, তার মন খারাপ হয়। তখন অভিভাবক, আপনজন, বন্ধু-বান্ধবের দায়িত্ব তাকে উৎসাহ দিয়ে স্বাভাবিক করে নিয়ে আসা; কিন্তু যখন ঠিক তার উল্টো ব্যাপারটি ঘটে, বিষয়টাকে ব্যর্থতা হিসেবে ধরে নিয়ে তাকে শাস্তি দেওয়া শুরু হয়ে যায়, তার চেয়ে হৃদয়বিদারক আর কী হতে পারে? আমাদের পরীক্ষা পদ্ধতিটি ভালো নয়। এখনও আমরা ছেলেমেয়েদের ঠিক করে মূল্যায়ন করতে পারি না। তাই আমি এতটুকু অবাক হই না, যখন দেখতে পাই দেশ, সমাজ কিংবা পৃথিবীকে যারা কিছু একটা দিচ্ছে তারা পাইকারিভাবে গোল্ডেন ফাইভ পাওয়া ছেলেমেয়ে নয়। মানুষের জীবনে অনেক ধরনের বুদ্ধিমত্তা থাকে, অনেক ধরনের প্রতিভা থাকে, অথচ আমরা শুধু লেখাপড়ার বুদ্ধিমত্তাটুকু যাচাই করে একজনকে বিচার করে ফেলি। একটি মেয়ের জিপিএ ফাইভ হয়নি বলে তাকে হয়তো সেরা ছাত্রী হিসেবে বিবেচনা করি না; কিন্তু আমরা হয়তো কখনও খোঁজ নিয়ে জানতে পারিনি, এই মেয়েটির মা মারা গেছে, ছোট বোনগুলোকে বুক আগলে বড় করছে। সংসারের অনেক দায়িত্ব পালন করছে। যদি তার এই বাড়তি বিষয়গুলোও তার মেধা হিসেবে বিবেচনা করার সুযোগ থাকত, তাহলে কি তাকে অন্য সবার তুলনায় সবচেয়ে সেরা ছাত্রী হিসেবে গ্রহণ করা হতো না! শুধু লেখাপড়ার প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের আমরা পুরস্কার দিচ্ছি; কিন্তু লেখাপড়া ছাড়াও সবারই যে একেবারে নিজস্ব এক ধরনের মেধা রয়েছে, সেই মেধাটা কেন আমরা খোঁজ করি না? কেন সেটা বিকশিত করার চেষ্টা করি না?

আমি যতই প্রতিযোগিতার বিপক্ষে কথা বলি না কেন, সবাই আমার কথা মেনে নেবে না। পৃথিবীতে অসংখ্য প্রতিযোগিতা। তাই এখন আমরা সবাইকে প্রতিযোগী হতে উৎসাহ দিই, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য নিয়ম-কানুন শেখাতে থাকি। অনেকেই বিশ্বাস করেন, শুধু প্রতিযোগিতা করেই বিশাল একটা দলকে খুব দ্রুত অনেক কিছু শিখিয়ে দেওয়া যায় এবং তাদের কথাতে সত্যতাও আছে। তাই আমি যখন সুযোগ পাই, তখন ছেলেমেয়েদের বলি, অন্যের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা করো না, যদি প্রতিযোগিতা করতে হয়, সেটি করো নিজের সঙ্গে। অন্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে হেরে গেলে মন খারাপ হয়, নিজের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় কেউ কখনও হেরে যায় না। সত্যিকারের প্রতিযোগিতা থেকে সেটি ভালো, সেই প্রতিযোগিতা করে সবাই সামনে এগিয়ে যায়, কেউ হেরে যায় না, কেউ মন খারাপ করে না। পুরস্কার না পেয়েও এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়া যায়।

আমি জানি না আমার এই লেখাটি অভিভাবকরা পড়বেন কি-না। যদি পড়েন তাহলে তাদের কাছে করজোড়ে কাতর গলায় বলব, আপনারা আপনাদের ছেলেমেয়েদের অর্থহীন প্রতিযোগিতার মাঝে ঠেলে দেবেন না! তারা নিজেরা যদি কোনো কিছুতে অংশ নিতে চায়, তাদেরকে অংশ নিতে দিন। তারা যদি ভালো করে, আনন্দে উচ্ছ্বসিত হয়ে যান; কিন্তু যদি পুরস্কার না পায় তাদেরকে তিরস্কার করবেন না! উৎসাহ দিন, তাদের শৈশবটি আনন্দময় করে রাখুন। শৈশবে কোথাও আমি কোনো প্রতিযোগিতায় পুরস্কার পেয়েছি বলে মনে পড়ে না; কিন্তু সে জন্য আমার শৈশবের আনন্দটুকু কোথাও এতটুকু ম্লান হয়নি![insaid-ad]

অনেকেই জানেন না, আপনাদের অসহায় ছেলেমেয়েদের অর্থহীন প্রতিযোগিতায় ঠেলে দিয়ে তাদের জীবনটাকে কতটুকু বিষময় করে তুলেছেন। তারা আপনাদের সেটা বলতে সাহস পায় না; চোখের পানি ফেলতে ফেলতে আমাকে বলে!

শৈশবটা যদি আনন্দময় না হয়, তাহলে সেই জীবনটা কি পরিপূর্ণ একটা জীবন হতে পারে?


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034730434417725