জিপিএ-৫ পেয়েছে প্রতিবন্ধী জাহানারা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

প্রতিবন্ধকতা কখনই সাফল্যকে আটকে রাখতে পারে না। আবার যদি বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং-এর কথা চিন্তা করি তবে অসাধ্য বলে পৃথিবীতে কিছুই নেই। জন্মগতভাবেই বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী জাহানারা (১৬)। অক্ষমতাকে জয় করে সে এবার এসএসসি পরীক্ষায় পেয়েছে জিপিএ-৫। এমনকি তার বাবাও প্রতিবন্ধী। তাই প্রতিবন্ধীর বাবার প্রতিবন্ধী মেয়ের সাফল্য এলাকায় ব্যাপক প্রশংসনীয় হয়েছে।

অদম্য প্রতিভার অধিকারী জাহানারা। প্রতিবন্ধী হলেও জীবন যুদ্ধে থেমে নেই অপ্রতিরোধ্য জাহানারা। বিগত ২০১৮ সালে একই বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ-৩.৫০ পায় জাহানারা। পরিবার ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এসএসসি-তেও জিপিএ-৫ পেতে হবে, এটাই জাহানারার ইচ্ছে ও স্বপ্ন ছিল। তার এমন স্বপ্নপূরণে কোন বাধা থামাতে পারেনি। অসম্ভবকে সম্ভব করে মেধার স্বাক্ষর রেখে এবার এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে সে। এ বছর ঘাটাইল এসই পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী জাহানারা ঘাটাইল উপজেলার পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের পশ্চিমপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে। বাবা জাহাঙ্গীর আলমও বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী। জাহানারার আরও এক ভাই বিজয় সে প্রতিবন্ধী ও তার ছোট বোন তানিয়া সেও বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী। পরিবারের চারজন প্রতিবন্ধী।

জাহানারার মা বিনা বেগম বলেন, জাহানারা এবার এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ঠিকই। আমরা এতে সবাই খুশি। বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধকতা নিয়ে মেয়েটি সংগ্রাম করে এতদূর এসেছে। তবে মেয়ের রেজাল্টে খুশি হলেও দুশ্চিন্তার অন্ত নেই মা বিনার। কারণ মেয়ের স্বপ্নপূরণ করতে হলে ওকে কলেজে ভর্তি করাতে হবে। কিন্তু গ্রাম পর্যায়ে তেমন ভাল কলেজ বা লেখাপড়ার সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, একটি ভাল কলেজে দিতে গেলে সেখানে কাউকে রাখতে হবে। যেহেতু সে বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী কথা বলতে পারে না। তার সঙ্গে সর্বক্ষণিক কাউকে না কাউকে থাকতে হয়। তাই কিভাবে মেয়েকে লেখাপড়া করাবেন এ নিয়ে চিন্তিত তিনি। তবে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও মেয়ের স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করবেন বলে জানান মা বিনা বেগম। ২০০০ সালের বিনা বেগম একটি কন্যাশিশুর জন্ম দেন। তখন থেকেই জাহানারা বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী। সামাজিক অনেক প্রতিকূলতাও মোকাবেলা করতে হয় তাদের। অভাবের সংসার। তারপরও বেড়ে ওঠা শিশুটির চাহনি, মেধা মা বিনার মনে সাহস জোগায়। মায়ের কাছে প্রথমে অক্ষর জ্ঞান নিতে থাকে জাহানারা। বাসা থেকে দূরবর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা সহজ ছিল না। ঘাটাইল প্রতিবন্ধী স্কুলে ভর্তি করা হয়। মা স্কুলের ক্লাসে বাচ্চাকে বসিয়ে দিয়ে নিজ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণীতেও ভাল রেজাল্ট করেছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026631355285645