প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি মায়ের মন নিয়ে এ দেশের মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন।
শনিবার (২২ এপ্রিল) গণভবনে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করার সময় তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন আমার কেউ নেই, আমি ও আমার বোন এতিম। তাই এ দেশের মানুষকে আমি আমার পরিবার মনে করি। মা যেমন একটি পরিবারকে নিজের মতো আগলে রাখে, আমিও মায়ের মন নিয়েই এ দেশের মানুষের সেবা করি।’
নিজের ব্যক্তিগত কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই জানিয়ে তিনি বলেন, আমি আমার বাবার চাওয়া পূরণ করতে চাই, দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চাই। আজকে ঈদের দিন, আমার বিশ্বাস আমি মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পেরেছি। আপনারা আমার বাবা-মা, ভাই-বোন ও পরিবারের সদস্যদের জন্য দোয়া করবেন।
এ সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী।
এবার ঈদে ঢাকা থেকে প্রায় পৌনে এক কোটি মানুষ গ্রামে গিয়েছেন। বিষয়টির প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পদ্মা সেতু করে দিয়েছি। অনেক রাস্তা ও সেতু হয়েছে। এখন যাতায়াত অনেক সহজ হয়েছে। তবুও বাড়ি ফিরতে কিছুটা ভোগান্তি হয়েছে, কিন্তু আগের মতো হয়নি। দিন-রাত রাস্তায় কাটাতে হয়নি। এখন গ্রামে সব সুবিধাই আছে। আমি আনন্দিত হয়েছি এটা দেখে যে সবাই তার গ্রামে ফিরে গেছে। বিদ্যুৎ আছে, ব্যবসা করার সুযোগ আছে, অর্থনীতির চাকা সচল করার সব উপাদানই এখন গ্রামে আছে।’
এসময় গ্রামের মানুষদের কৃষিতে অবদান রাখতে আবারও জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, বৈশ্বিক খাদ্য সংকটের মধ্যেও আমরা ভালো আছি আপনাদের কারণে যারা, ফসল উৎপাদন করে আহার তুলে দিচ্ছেন। আমরা আপনাদের পাশে আছি, সকল সহযোগিতা করব। কিন্তু কোনো জমি ফেলে রাখবেন না। বাড়ির সামনে কোনো খালি জায়গা রাখবেন না। যা পারেন তাই উৎপাদন করেন।
দেশে দরিদ্র মানুষের হার কমেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে দারিদ্রের হার কমাতে সক্ষম হয়েছি। দুর্যোগের সময়ও প্রতি বছর এক শতাংশ করে কমিয়েছি। বর্তমানে দেশে দরিদ্রের হার ১৮ দশমিক ৭ ভাগ। দ্রুতই দেশকে দারিদ্রমুক্ত ঘোষণা করার ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি বলেন, ‘দেশে কেউ যাতে দরিদ্র না থাকে, সেজন্য সবাইকে ঘর করে দিয়েছি। সবাই যার যার জায়গা থেকে সাহায্য করেছেন, ত্রাণ তহবিলে দিয়েছেন- সব মিলে আমরা তাদের ঘর তৈরি করেছি। যারা এখনও বাকি আছে তাদেরও ঘর তৈরি হচ্ছে।’ এ সময় সামর্থ্যবানদের আরও একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে বলেন শেখ হাসিনা। উন্নত বিশ্বের বহু দেশেই এখনও আমাদের মতো পরিকল্পনা করে দারিদ্রের হার কমাতে পারেনি বলেও গর্ব করেন তিনি।
তিনি কথা বলেন একের পর এক মার্কেটে আগুন লাগার রহস্য নিয়ে। ইঙ্গিত দেন বিএনপির দিকে। এই কাজে তাদের হাত আছে কি না- খতিয়ে দেখতে বলেন। তার মতে, আগুন সন্ত্রাসের কাজ তারা আগেও করেছে, এখানেও করতে পারে। তাদের কাজ আগুন দেয়া; মানুষ পুড়িয়ে মারা। এসব নৃশংস কাজ করতে তাদের বিবেক বাঁধা দেয় না। ফলে সন্দেহের তীর উড়িয়ে দেয়া যায় না।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবাজারের পর মনে করেছিলাম দুর্ঘটনা, কিন্তু এরপর একে একে যখন আগুন লাগতে লাগলো তখন এটি আর দুর্ঘটনা মনে করতে পারছিলাম না। আর আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিসের উপর হামলা এবং গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে, আগুন নেভাতে যেতে বাঁধা দেয়া হয়েছে। অথচ, আগুন লাগলে সবাই সহযোগিতা করে ফায়ার সার্ভিসকে যেন দ্রুত যেতে পারে, কিন্তু সেখানে উল্টো বাঁধা দেয়া হয়েছে। এসব নিয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। এমন কোনো কাজ নেই যা বিএনপি না পারে। এসব খতিয়ে দেখতে হবে।