প্রতারণা, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে এক কোটি ৬০ লাখ ৮৮ হাজার টাকা অত্মসাতের অভিযোগে এনসিসি ব্যাংকের নরসিংদী শাখার সাবেক ব্যবস্থাপকসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা করেছে। দুদকের গাজীপুর ও নরসিংদী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো: মোজাহার আলী বাদি হয়ে সোমবার ওই মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি রেকর্ড করেছেন কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান।
মামলার আসামিরা হলেন, নরসিংদীর মাধবদী থানার কাশিপুর গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে ও এনসিসি ব্যাংকের নরসিংদী শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক নাসিরুদ্দীন আহম্মদ, শরীয়তপুর সদরের রথখোলা গ্রামের মোতাহার হোসেনের ছেলে ও সাবেক উপ-ব্যবস্থাপক (বর্তমানে সাময়িক বরখাস্ত) মো. ফরহাদ হোসেন, ফেনীর দাগনভুঁইয়া থানার দক্ষিণ নেয়াপুর গ্রামের
গাজীপুর দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো: মোজাহার আলী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ওই আসামিরা একে অপরের সহায়তায় প্রতারণা, জাল-জালিয়াতি, বিশ্বাসভঙ্গ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ব্যাংক তথা সরকারের ১ কোটি ৬০ লাখ ৮৮ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
তিনি বলেন, অভিযোগের পর দুদকের নির্দেশনায় অনুসন্ধানকালে পাওয়া তথ্য ও রেকর্ডপত্র ও সংশ্লিষ্টদের বক্তব্যসহ সার্বিক পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি হতে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এনসিসি ব্যাংক লিমিটেড, নরসিংদী শাখার তৎকালীন ব্যবস্থাপক নাসিরুদ্দীন আহম্মদ, উপ-ব্যবস্থাপক মো. ফরহাদ হোসেন ও কম্পিউটার অপারেটর মো. সাইফুর রহমান শাখায় বিভিন্ন গ্রাহকের নামে পরিচালিত বিশেষ সঞ্চয়ী হিসাব বা তাদের অজ্ঞাতসারে অন্যান্য গ্রাহকের হিসাব সংযুক্ত করে অথবা ভুয়া মেয়াদী আমানত জামানত দেখিয়ে ঋণ হিসাব খোলেন অথবা প্রকৃত ঋণ হিসাব সমন্বয় করার পরও হিসাবটি বন্ধ না করে সচল রেখে ভুয়াভাবে এসওডি ঋণের লিমিট মঞ্জুর দেখান। এরপর মঞ্জুরীপত্র প্রস্তুত, এমনকি মঞ্জুরীপত্র ছাড়াই শাখা ব্যবস্থাপক নাসিরুদ্দীন আহম্মদ, উপ-ব্যবস্থাপক মোঃ ফরহাদ হোসেন, এক্সিকিউটিভ অফিসার জাহাঙ্গীর আলম ও অফিসার মো. নাজমুল ইসলাম ২৫ জন ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে মোট ১ কোটি ৬০ লাখ ৮৮ লাখ টাকার ৫১ টি পে-অর্ডার ইস্যু করেন।
ব্যাংক ব্যবস্থাপক নাসিরুদ্দীন আহম্মদ বা উপ-ব্যবস্থাপক মো. ফরহাদ হোসেন পে-অর্ডারগুলো ‘অ্যাকাউন্ট পেইয়ি’ বাতিল করে ক্যাশে পরিশোধের জন্য ব্যবস্থা করেন। সবশেষে তা কম্পিউটার অপারেটর মো. সাইফুর রহমানের কাছে দেন। এতে আসামী মো. সাইফুর রহমান বা অফিসার মো. নাজমুল ইসলাম পে-অর্ডারের স্বাক্ষর যাচাই করে স্বাক্ষর দিয়ে ব্যাংক ব্যবস্থাপক নাসিরুদ্দীন আহম্মদ ও উপ-ব্যবস্থাপক মো. ফরহাদ হোসেন অথবা এক্সিকিউটিভ অফিসার জাহাঙ্গীর আলমের কাছে পে-অর্ডারগুলো নগদায়নের জন্য উপস্থাপন করলে তারা পে-অর্ডারটি নগদ পরিশোধের জন্য পাস করে ব্যাংকের কম্পিউটার অপারেটর মো. সাইফুর রহমানের কাছে দেন। অতঃপর কম্পিউটার অপারেটর মো. সাইফুর রহমান পে-অর্ডারের অপর পৃষ্ঠায় নিজেই বিভিন্ন ব্যক্তির স্বাক্ষর জাল করে ক্যাশ থেকে নগদ ১ কোটি ৬০ লাখ ৮৮হাজার টাকা উত্তোলন করে পরষ্পর যোগসাজশে আত্মসাৎ করেন।